বিশ্বে প্রভাব বাড়াতে ব্রিকসের প্রেসিডেন্ট পদ চায় রাশিয়া
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৩, ১১:৪১ পিএম
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিকসের ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল নিয়ে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেছে রাশিয়া। এ সময় দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াকভ বলেছেন, বিশ্বে ব্রিকসের প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে জোটের সভাপতির আসনে বসতে চায় রাশিয়া। খবর তাসের।
রিয়াকভ বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে আমাদের দেশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিত্ব করবে। রাশিয়ার সভাপতিত্বে সদ্য যুক্ত হওয়া সদস্যদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ঐতিহ্যবাহী ব্রিকস ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ব্রিকস সম্মেলনে বলেছেন- আমরা বিশ্বে আমাদের জোটের প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব, অ্যাসোসিয়েশনের নতুন সদস্যদের সঙ্গে ব্যবহারিক মিথস্ক্রিয়া স্থাপন করব এবং ব্রিকস প্লাস-এর ওপর আমরা আরও সংলাপ চালু রাখব।
চলতি বছর ২২ থেকে ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার সভাপতিত্বে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি ছিল গ্লোবাল সাউথের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের বৃহত্তম বৈঠক। আমন্ত্রিতদের মধ্যে ৫৪টি আফ্রিকান দেশের নেতারা ছিলেন।
শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা আর্জেন্টিনা, মিসর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১ জানুয়ারি, ২০২৪ সাল থেকে অ্যাসোসিয়েশনে যোগদানের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলনে সম্ভাব্য সদস্যদের আরও একটি নতুন তালিকা তৈরি করা হবে।
২০১০ সালের পর এই প্রথম ব্রিকস তাদের জোট সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিল। ২০০৯ সালের ১৬ জুন প্রথমে ব্রিক নামে জোটের যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০১০ সালে জোটে দক্ষিণ আফ্রিকা শরিক হয়ে ব্রিকস নাম ধারণ করে। এরপর আর কোনো সদস্য নেয়নি তারা।
ব্রিকসে মোদি-জিনপিং বৈঠক:
ব্রিকস সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকের পরপর দেশ দুটির সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে একমত হয়েছেন তারা। বুধবার ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন মোদি ও জিনপিং। এই বৈঠকেই তারা ভারত ও চীনের সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে একমত হয়েছেন।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও চীন উত্তেজনা তীব্র রূপ নিয়েছে। প্রতিবেশী এ দুই দেশের মধ্যে হিমালয় অঞ্চলে দ্য লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) নামে পরিচিত তিন হাজার ৪৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এই এলএসির কাছে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে পদক্ষেপ গ্রহণে উভয়পক্ষ রাজি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বলেন, উভয়পক্ষই এলএসি থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের প্রচেষ্টা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে।
কোয়াত্রা বলেন, ভারত-চীন সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং এলএসি পর্যবেক্ষণ ও সম্মান করা অপরিহার্য বলে প্রধানমন্ত্রী মোদি জোর দিয়েছেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, দুই নেতা বর্তমান চীন-ভারত সম্পর্ক এবং অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে খোলামেলা ও গভীরভাবে মতবিনিময় করেছেন। প্রেসিডেন্ট শি জোর দিয়ে বলেছেন, চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নতি দুই দেশ ও জনগণের অভিন্ন স্বার্থে কাজ করে। এ ছাড়া বিশ্ব ও এই অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্যও সহায়ক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, উভয়পক্ষকে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সামগ্রিক স্বার্থের কথা মাথায় রাখতে হবে এবং সীমান্ত ইস্যুটি যথাযথভাবে পরিচালনা করতে হবে। যেন যৌথভাবে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, মোদি ও শি যখন আলোচনা করেন তখন সেখানে কোনো দোভাষী বা নোট গ্রহণকারী ছিলেন না।