ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ অভিযানে সংঘর্ষ রেখা বরাবর পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার পুতিন লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান (এলপিআর) লিওনিড পাসেচনিকের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেছেন। খবর তাস নিউজের।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আপনি নিজেই দেখতে পাবেন যে, পরিস্থিতি বর্তমানে সংঘর্ষ রেখা বরাবর স্থিতিশীল।
এর আগে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ন্যাটো কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ করছে।
আরও পড়ুন: মস্কোর বাণিজ্যিক কেন্দ্রে ফের ড্রোন হামলা
ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতি-অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এক বছরে পশ্চিমা দুনিয়া ও ন্যাটো এক হয়েও রাশিয়াকে টলাতে পারেনি। রাশিয়া বড় ও সম্পদশালী দেশ হিসেবে হয়তো এ ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে পারছে ও পারবে। কিন্তু পশ্চিমা সাহায্যে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে ইউক্রেন কতটা সুবিধা করতে পারবে সে প্রশ্ন সঙ্গত।
ইউক্রেনের বিদ্যুৎ, স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যোগাযোগ, আবাসন ও মানবসম্পদের যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে দেশটির অর্থনীতি ভয়ঙ্করভাবে বিপর্যস্ত। পরিস্থিতি এমন যে মার্কিন ইশারা ছাড়া তাদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। শান্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে নাফতালি বেনেটের বক্তব্য সে কারণেই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ইউক্রেন একটি অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। যুদ্ধের মধ্যেও দুর্নীতি ও লুটপাটের দায়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলেনস্কির স্ত্রীর নামও পানামা পেপারে আছে। যুদ্ধকালীন পশ্চিমা সাহায্যের বড় অংশই দুর্নীতিবাজদের পকেটে যাচ্ছে। দুর্নীতির অভিযোগ রুশ সরকার ও পুতিনের বিরুদ্ধেও আছে।
রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেন দুর্বল দেশ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত শক্তি-সামর্থ্য না থাকলেও আমেরিকা ও পশ্চিমাদের প্ররোচনা এবং সাহায্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া এখনো বিশ্বের প্রধান সামরিক ও পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ। সে অর্থে রাশিয়া যুদ্ধ ইউক্রেনের সঙ্গে করছে না, করছে মার্কিন ও পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে। এ যুদ্ধে ইউক্রেন তাদের সাহায্য নিয়ে কতটুকু পেরে উঠবে সেটিই প্রশ্ন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে তার উৎপাদিত আধুনিক ও দূরপাল্লাসহ নানা ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
এই যুদ্ধের বছরপূর্তিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মস্কো সফরে গিয়ে রুশ নেতাদের কাছে তাদের ১২ দফার শান্তি পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। এখনো এ বিষয়ের বিস্তারিত তথ্য ও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
এ যুদ্ধের আঞ্চলিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্বার্থ-সমীকরণের বোঝাপড়াই বলে দেবে এর ভবিষ্যৎ ও গতিপথ কী হবে? এ বিষয়ে ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টেফান ওলফের মন্তব্য— যুদ্ধ ক্ষণস্থায়ী বা প্রলম্বিত যাই হোক না কেন, এ বেড়াজাল থেকে ইউক্রেন সহসা মুক্তি পাচ্ছে না।