গুপ্তহত্যার ছায়ায় ইকুয়েডরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম
ইকুয়েডরে গত চার সপ্তাহে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে ৩টি। নির্বাচনের প্রচারণার সময়জুড়ে চলেছে অস্থিরতা। এমনকি প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট গায়ে তাদের প্রচারণা চালিয়েছেন। দিন কাটিয়েছেন ভয় আর শঙ্কায়।
দেশজুড়ে এই গুপ্তহত্যার ছায়াতেই অনুষ্ঠিত হলো ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা) শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলেছে বিকাল ৫টা (বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা) পর্যন্ত। জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতে নিয়োজিত ছিল প্রায় ১ লাখ সেনা।
ইকুয়েডরে চলতি বছর বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদকেই হত্যা করা হয়েছে। তবে গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফার্নান্দো ভিলাভিসেনসিও’র মৃত্যুতে বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ইকুয়েডরে একটি জনসভা চলাকালীন তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আনামারিয়া কোরেয়া ক্রেসপো এএফপিকে বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণরূপে অস্বাভাবিক একটি নির্বাচন। বিদ্যমান সহিংসতায় ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ইকুয়েডর। ভিলাভিসেনসিওর হত্যার পর এই নৃশংসতার ভয়াবহ মাত্রা প্রকাশ পেয়েছে।’
ফার্নান্দোর মৃত্যুর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে আরেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়ার সিটিজেন রিভোলেশন দলের নাগরিক বিপ্লবের সংগঠক পেড্রো ব্রায়োনেস গুলিতে নিহত হয়েছেন। একই দলের সদস্য লুইসা গঞ্জালেজ টুইটারে ‘সমকর্মী পেড্রোর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে একটি হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন বলে শনিবার জানিয়েছেন ইকুয়েডরের উপকূলীয় শহর লা লিবারতাদের মেয়র ফ্রান্সিসকো তামারিজ।
টুইটার বার্তায় তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলার ঘটনাটি ঘটে। বন্দুকধারীরা তার গাড়িতে ৩০টি গুলি ছুড়েছে। তবে তিনি অক্ষত আছেন বলে জানিয়েছেন। আশপাশে থাকা কয়েকজন এই গুলির ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন বলে জানান তিনি।
পরবর্তী একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, শুক্রবার গভীর রাতে নিকটবর্তী গুয়াকিল থেকে ফিরছিলেন তিনি ও তার স্ত্রী। তখনই দুজন বন্দুকধারী একটি পুলিশের গাড়ি থেকে বের হয়ে এসে তার সাঁজোয়া ভ্যানে গুলি চালায়। তবে এ সময় তারা দুজনেই বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিহিত ছিলেন।
অবৈধ মাদক ব্যবসার আবাসস্থল ইকুয়েডর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশি ড্রাগ মাফিয়াদের একটি কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে এই দেশ। ২০২২ সালে দেশটিতে প্রতি ১ লাখ জনে ২৬টি হত্যার রেকর্ড রয়েছে। ইকুয়েডরে নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, এখানের নিরাপত্তা পরিবেশ খুব চ্যালেঞ্জিং থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইকুয়েডরের আটজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন মোভিমিয়েনন্টো রেভোলিউশন সিউদাদানা (আরসি) দলের লুইসা গঞ্জালেজ। প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে তিনি একমাত্র নারী প্রার্থী।
জনসাধারণের ব্যয় ও সামাজিক কর্মসূচি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গঞ্জালেজ। দারিদ্র্য ও অসমতার মতো দেশের সহিংসতার মূল কারণগুলো সমাধান করে নিরাপত্তা সংকট মোকাবিলা করতে চান তিনি।
যদি কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট অথবা ৪০ শতাংশ ভোট না পান অথবা দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীর চেয়ে ১০ পয়েন্টে এগিয়ে না থাকেন তাহলে অক্টোবরে রানঅফ অনুষ্ঠিত হবে।