হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যা ইউনিটে দায়িত্ব পালনকালে সাত শিশুকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন একজন ব্রিটিশ নার্স। এ ছাড়া একই ইউনিটের আরও ছয় শিশুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগেও তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
এ অপরাধে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকে আশঙ্কা করেছেন, তার হাতে আরও অনেক শিশু মারা গিয়ে থাকতে পারে। আধুনিক ব্রিটিশ ইতিহাসে এই নারীকে সবচেয়ে জঘন্য শিশু হত্যাকারী হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
খবরে বলা হয়, ওই নার্সের নাম লুসি লেটবি। তার বর্তমান বয়স ৩৩ বছর। নর্থ-ওয়েস্ট ইংল্যান্ডের কাউটেস অব চেস্টার হাসপাতালে কাজ করার সময় তিনি নির্মম এসব ঘটনা ঘটান।
তিনি ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত ওই হাসপাতালে কাজ করার সময় অত্যন্ত দুর্বল শিশুদের মৃত্যুর পথে ঠেলে দেন। শিশুদের মা-বাবা বা অন্য নার্সরা সরে যাওয়া মাত্র তিনি শিশুদের হত্যা করে ফেলতেন।
তার হাতে মৃত্যুবরণকারী শিশুদের মধ্যে একত্রে জন্ম নেওয়া তিন শিশুর দুটিও ছিল। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনি তাদের হত্যা করেন। স্বল্প ওজনের (এক কেজির কম) একটি মেয়েশিশুকে তিনি অতিরিক্ত বাতাস দিয়ে হত্যা করেছিলেন। আর ১০ সপ্তাহের একটি অপরিণত শিশুকে চতুর্থবার চেষ্টায় হত্যা করেন।
মামলার কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, লুসি কয়েকটি শিশুর দেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন ও বাতাস ঢুকিয়ে এবং বাকিদের জোর করে দুধ খাইয়ে হত্যা করেছেন। কয়েকজন শিশুর ওপর একাধিকবার আক্রমণ করে তিনি তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন।
এই তদন্তের জন্য ২০১৮ ও ২০১৯ সালে লুসিকে দুবার গ্রেফতার করে ব্রিটিশ পুলিশ। এর পর ২০২০ সালের নভেম্বরে আবার গ্রেফতার হন লুসি। পুলিশ তার বাড়ি তল্লাশির সময় তার লেখা একটি চিরকুট পায়।
তাতে লুসি লেখেন, আমি তাদের খুন করেছি। কারণ তাদের যত্ন নেওয়ার মতো যথেষ্ট ভালো মানুষ আমি না। আমি ভীষণ খারাপ মানুষ। আমি শয়তান, আমিই এ কাজ করেছি।
আরও পড়ুন: উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ঝুঁকির মুখে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ
শুক্রবার আদালত তার সাজা ঘোষণা করে। ব্রিটেনের ইতিহাসে মাত্র তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। লুসি হলেন তাদের একজন।