রুশদের বিরুদ্ধে এবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে ক্রিমিয়ার তাতার গোষ্ঠী। ইউক্রেনের অধিকৃত এ উপদ্বীপকে মুক্ত করার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে শত শত তরুণ তাতার। গোষ্ঠীটির দাবি তারা ইতোমধ্যে রুশদের কয়েকটি চেকপয়েন্ট উড়িয়ে দিয়েছে। রুশ অফিসারদের হত্যা করেছে ও ব্যারাকে আগুন দিয়েছে। ইউক্রেনীয় গোয়েন্দাদের সংবেদনশীল তথ্যও দিয়েছে বলে দাবি তাদের। ক্রিমিয়ায় তাতার জনগণের মেজলিসের চেয়ারম্যান রেফাত চুবারভ বলেন, ‘হাজার হাজার ক্রিমিয়ান তাতার দীর্ঘস্থায়ী রুশ দখলদারিত্বের অধীনে তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত রয়েছে’। গার্ডিয়ান।
তাতার অধিকার আন্দোলন গোষ্ঠীর গডফাদার মুস্তফা ডেজেমিলেভ বলেন, ২০১৪ সাল থেকে তিন লাখ শক্তিশালী তাতার সম্প্রদায় রুশদের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তাতারা ক্রিমিয়ার স্থানীয় জনগণ। কথা বলে তুর্কি ভাষায়। ১৩ শতকের শেষে মঙ্গল আক্রমণের পর একটি স্বতন্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী হিসাবে ক্রিমিয়ায় আবির্ভূত হয় এ গোষ্ঠীটি। তারা ইসলাম গ্রহণ করে। ১৭৮৩ সাল থেকে রুশদের আগ্রাসনের ফলে এ গোষ্ঠীর ওপর ভয়াবহতা শুরু হয়। দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় অনেকেই। ডেজেমিলেভ বলেন, ক্রিমিয়ান তাতাররা রুশ দখলদারিত্বের ধাক্কা আজও বহন করছে।
সম্প্রতি ক্রিমিয়ান তাতার কর্মীরা অপহরণ ও গুমের শিকার হন। ৫৯ জন কর্মী নিখোঁজ ও আটজনের লাশ পাওয়া যায়। রাজনৈতিক নেতা ও কয়েক ডজন নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানান ডেজেমিলেভ। আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রায় এক হাজার যুবক ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে অস্ত্র হাতে নিতে প্রস্তুত।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক বলেন, ‘মতাদর্শগত, রাজনৈতিক ও অন্যান্য দৃষ্টিকোণ থেকে ক্রিমিয়ার ভবিষ্যতের মুক্তির ক্ষেত্রে ক্রিমিয়ান তাতাররা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ডেজেমিলেভ ও চুবারভ, রুশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও ইউক্রেনীয় কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। সঙ্গে ইউক্রেনের পরিষেবাগুলোতেও কাজ করছেন তারা। যা ক্রিমিয়াতে পক্ষপাতমূলক অভিযানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ক্রিমিয়ার মধ্যে এই মুহূর্তে বেশ বিস্তৃত নেটওয়ার্ক আছে বলে জানা যায়। মুক্তির পর ক্রিমিয়ার অবস্থা নিয়ে অনেক কথা উঠলেও, এখনই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।