জেনিনে পানি নেই, রাস্তা বন্ধ, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৩, ১০:১২ পিএম
ইসরাইলের বুলেট-বোমা-ড্রোন হামলায় লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবির। দুদিনেই বদলে গেছে জেনিন শহরের ০.৪২ বর্গকিলোমিটারজুড়ে থাকা ছোট্ট উদ্বাস্তু শিবির। রোববার মধ্যরাতে হায়েনার মতো ঘুমন্ত শরণার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরাইল সেনারা। প্রায় ২০০০ সেনা, ১৫০ সাঁজোয়া যানের বিশাল এই দলের টানা দুদিনের হামলায় শরণার্থী শিবিরের বিদ্যুৎ ও পানির নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। খবর আলজাজিরা, এএফপি।
বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শিবিরগুলো থেকে সঠিক তথ্য পেতে অসুবিধা হচ্ছে জাতিসংঘের। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিবিসি রেডিও ৪-এর টুডে প্রোগ্রামকে এ কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক। আরও জানান, শিবিরে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংঘর্ষের কারণে সচল রাখা সম্ভব হয়নি।
শরণার্থী শিবিরের দিকে যাওয়ার সব রাস্তাও অবরোধ করে রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। আন্তর্জাতিক চিকিৎসা দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ার্স অথবা এমএসএফ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। সংস্থাটি শরণার্থী শিবিরে স্বাস্থ্যকর্মীদের ‘অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা’র আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে এমএসএফ জানায়, মানুষকে হত্যা ও আহত করার পাশাপাশি ইসরাইলের এই সামরিক অভিযান স্বাস্থ্য কাঠামোকেও প্রভাবিত করছে। আর এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসাসেবা।
পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের সাধারণ ধর্মঘট
জেনিনে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রতিবাদে একটি সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। মঙ্গলবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এলাকায় এ ধর্মঘট ডাকা হয়। ধর্মঘটে সারা দিয়ে অঞ্চলটিতে অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, পশ্চিম তীরের বেশিরভাগ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জেনিন ব্রিগেড কারা?
জেনিন ব্রিগেড। পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের বেশিরভাগ তরুণ যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত একটি বিদ্রোহী দল। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের এক সদস্য জামিল আল-আমৌরি ২০২১ সালে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। জেনিন ব্রিগেড হামাস ও ইসলামিক জিহাদের মতো স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে শিথিলভাবে যুক্ত রয়েছে। দলটির মূল উদ্দেশ্য-কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন নয় বরং বিভিন্ন দল থেকে সদস্যদের একত্রিত করা। পশ্চিম তীরে ইসরাইলের দখরদারিত্ব রুখতে যুদ্ধকেই একমাত্র সমাধান বলে মনে করে দলের সদস্যরা। দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণ করে থাকে।
জেনিন ব্রিগেড ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস (৭৭) ও দেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি সম্পূর্ণ ঘৃণা পোষণ করে। পশ্চিম তীরে ইসরাইলের ধীরে ধীরে উপনিবেশ স্থাপন রোধে যথাযথ দায়িত্ব পালন না করার জন্য মাহমুদ আব্বাসপন্থি স্থানীয় নেতাদের দায়ী করে থাকে।