Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

টাইটান দুর্ঘটনা: স্বামী-সন্তান হারানো পাকিস্তানি নারীর আবেগঘন স্মৃতিচারণ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৩, ০১:৫৯ পিএম

টাইটান দুর্ঘটনা: স্বামী-সন্তান হারানো পাকিস্তানি নারীর আবেগঘন স্মৃতিচারণ

শাহজাদা দাউদ ও ক্রিস্টিন দাউদ। ছবি: ডেইলি মেইল

টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া পর্যটকদের কেউ বেঁচে নেই। টাইটান ডুবোযানে যাওয়া পর্যটকদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি ধনকুবের শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান (১৯)। টাইটান দুর্ঘটনার আগে একবার বিমান দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন শাহজাদা। তবে সে যাত্রায় বেঁচে যান তিনি।

হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে জানা গেছে, টাইটান দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশ্যে এসেছে যে, শাহজাদা এর আগেও একটি ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে সেই দুর্ঘটনায় পাকিস্তানি ব্যবসায়ীর সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী ক্রিস্টিন দাউদ। 

সেই ঘটনার উল্লেখ করে আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন স্বামী ও সন্তান হারানো ক্রিস্টিন দাউদ।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ক্রিস্টিন বলেন, সেই দুর্ঘটনা সব কিছু বদলে দিয়েছে। আমি এখন যে পথে আছি, সেই পথে নিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

তিনি বলেন, আমি কেন এবং কীভাবে একজন মনোবিজ্ঞানী ও প্রশিক্ষক হয়ে উঠেছি, তা অনেকেই জানেন না। এ ঘটনা অবশ্যই ব্যক্তিগত, অস্বস্তিকর এবং অস্বাভাবিক এক ঘটনা; কিন্তু আমি টানেলের শেষে আলো দেখতে পাচ্ছিলাম সেদিন। 

ক্রিস্টিন জানান, সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, তারা নিরাপদে অবতরণ করলে তিনি আর কখনো সিগারেট স্পর্শ করবেন না। 

‘তখন অন্ধকার হয়ে এসেছিল। আমাদের চারপাশটায় যেন ঝড় উঠেছিল, আর মেঘ জমছিল। কেবিনে এক অদ্ভুত ধরনের অন্ধকার নেমে আসে। ওই ঘটনা আজও তাড়া করে বেড়ায় আমাদের। 

তিনি আরও বলেন, সেই সময় আমরা একবার বামদিকে একবার ডানদিকে হেলে যাচ্ছিলাম। আমার মাথা জানালায় ধাক্কা খাচ্ছিল। একসময় ক্যাপ্টেন আমাদের বলেন, তিনি ভিন্ন কোণ থেকে অবতরণের চেষ্টা করছেন। হঠাৎ ইঞ্জিন গর্জে উঠল এবং আমরা আবার উড়তে থাকলাম। 

২০১৯ সালে সেই যাত্রায় রক্ষা হয়েছিল ঠিকই; কিন্তু টাইটান দুর্ঘটনায় শেষ রক্ষা হলো না শাহজাদার। স্বামীর সঙ্গে ছেলেকেও হারিয়েছেন ক্রিস্টিন দাউদ।

টাইটান দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে অন্যরা হলেন— ওশানগেটের ৬১ বছর বয়সি সিইও স্টকটন রাশ, ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮) এবং তাদের সঙ্গে ছিলেন ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি ও বিখ্যাত পর্যটক পল-হেনরি নারজিওলেট (৭৭)।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখার পরিকল্পনাকারী প্রতিষ্ঠান ওশানগেট এক্সপেডিশানস জানায়, আটলান্টিকের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া ডুবোযান টাইটানের পাঁচ যাত্রী আর বেঁচে নেই।

নিখোঁজ ডুবোযান টাইটানের উদ্ধার অভিযান পরিচালনাকারী মার্কিন কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারাও একই কথা বলেছেন।

ডুবোযান টাইটান পরিচালনাকারী ওশানগেটের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, নিখোঁজ টাইটানের ভেতরের পাঁচ পর্যটককে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, তারা সত্যিকারের পর্যটক ছিলেন, যাদের ভেতরে অ্যাডভেঞ্চারের আলাদা একটা স্পিরিট ছিল।

ডুবোযান টাইটান গত রোববার সকালে অভিযান শুরু করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, কানাডার কাছে আটলান্টিক মহাসাগরের এক দুর্গম এলাকায় পানির নিচে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে প্রায় ২ ঘণ্টা থাকার কথা ছিল ডু্বোযানটির।

কিন্তু এ সময়সীমা শেষ হওয়ার খানিক সময় আগে পানির ওপরে থাকা যোগাযোগ রক্ষাকারী জাহাজের সঙ্গে ডুবোযানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

পরিচালনা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ডুবোযানে ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন মজুত ছিল, যা বৃহস্পতিবার সকালে ফুরিয়ে যাওয়ার কথা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম