পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগের পর সাংবাদিকতায় ফিরলেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী পত্রিকা ডেইলি মেইলে কলামিস্ট হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন। প্রতি শনিবার পত্রিকাটিতে তিনি কলাম লিখবেন বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল। বিবিসি।
তবে এই নতুন চাকরি নিয়েও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বরিসের। আইন অনুযায়ী, সাবেক মন্ত্রীরা পদ ছাড়ার দুই বছরের মধ্যে চাকরিতে যোগ দিতে চাইলে অ্যাডভাইজরি কমিটি অন বিজনেস অ্যাপয়েন্টমেন্টের পরামর্শ নিতে হয়। বরিস তা লঙ্ঘন করেছেন। পার্লামেন্টের এ সংক্রান্ত কমিটি বলছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস তার নতুন চাকরির বিষয়ে আগে থেকে জানাননি। খবরটি প্রকাশের মাত্র আধঘণ্টা আগে বরিস কমিটিকে বিষয়টি জানান। তাই এটাকে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কলামে যুক্তরাজ্যের বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নানা পদক্ষেপ বিষয়ে জনসন তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘ব্যবসা বিষয়ে সবচেয়ে বুদ্ধিমান, মৌলিক ও খ্যাতিমান লেখকদের একজন বরিস। আপনি বরিস জনসনের ভক্ত হন বা না হন, ওয়েস্টমিনস্টারসহ (ব্রিটিশ পার্লামেন্ট) বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে তার লেখা পড়তেই হবে।
শনিবার তার দুর্দান্ত অভিষেক ঘটে।’ ব্রিটেনের সবচেয়ে সমালোচিত প্রধানমন্ত্রীদের একজন বরিস জনসন। গত ৯ জুন এক বিবৃতি দিয়ে পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন জনসন। এর আগে পার্টিগেইট কেলেঙ্কারির কারণে গেল বছর প্রধানমন্ত্রিত্বও ছাড়তে হয়েছিল তাকে।
এরপরও ব্যস্ততা কমেনি জনসনের। প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর বিশ্বজুড়ে বক্তব্য দিয়েও তিনি লাখ লাখ পাউন্ড কামিয়েছেন বলেই ধারণা করা হয়। নানা ‘কেলেঙ্কারির’ জনক জনসনের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা দিয়ে। টাইমসে কাজ করার সময় একজনের নামে মনগড়া এক বিবৃতি দেওয়ার কারণে পত্রিকাটি তাকে বহিষ্কারও করেছিল।
ডেইলি টেলিগ্রাফের ব্রাসেলস সংবাদদাতা হিসাবে কাজ করতে গিয়ে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের তীব্র সমালোচক হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। একসময় রাজনীতি আর সাংবাদিকতা একসঙ্গে চালিয়েছিলেন তিনি। সংসদ-সদস্য এবং স্পেক্টেটর ম্যাগাজিনের সম্পাদকের দায়িত্ব একসঙ্গে সামলেছিলেন জনসন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত ডেইলি টেলিগ্রাফে নিয়মিত কলামও লিখেছেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে টেলিগ্রাফেরই এক কলামে তিনি বলেছিলেন, বোরকা পরা মুসলিম নারীদের দেখলে তার ডাকবাক্স বা ব্যাংক ডাকাতদের মতো লাগে। এই মন্তব্যের জন্য তার বিরুদ্ধে ইসলামোফোবিয়ার অভিযোগও ওঠে।