ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় আবারো ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক রেল দুর্ঘটনার তিন দিন পর ফের এ দুর্ঘটনা ঘটল। তিন দিন আগে ঘটা ওই দুর্ঘটনায় প্রায় তিনশ মানুষের মৃত্যু হয়।
তবে সর্বশেষ দুর্ঘটনায় পড়া ট্রেনটি একটি পণ্যবাহী ট্রেন। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক রেল দুর্ঘটনার তিন দিন পর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় আরেকটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটিতে চুনাপাথর বহন করা হচ্ছিল।
ওড়িশার বালাসোর জেলার সাম্প্রতিক দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে রাজ্যটির বারগড় এলাকায় পণ্যবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।
এনডিটিভি বলছে, ডুংরি চুনাপাথর খনি এবং এসিসি বারগড়ের সিমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে একটি ব্যক্তিগত ন্যারোগেজ রেললাইন রয়েছে। এই রেললাইন, ওয়াগন এবং লোকোমোটিভ সবই ব্যক্তিগত এবং ভারতীয় রেলওয়ে ব্যবস্থার সঙ্গে এটি কোনোভাবেই সংযুক্ত নয় বলে সূত্র জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং মাত্র কয়েকটি কোচ লাইনচ্যুত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ভারতের ইস্ট কোস্ট রেলওয়ে বলেছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন সিমেন্ট কারখানার পরিচালিত একটি পণ্যবাহী ট্রেনের কিছু ওয়াগন বারগড় জেলার মেন্ধাপালির কাছে কারখানার চত্বরে লাইনচ্যুত হয়েছে এবং ‘এ বিষয়ে রেলের কোনো ভূমিকা নেই’।
ইস্ট কোস্ট রেলওয়ে আরও জানিয়েছে, ‘এটি সম্পূর্ণরূপে একটি বেসরকারি সিমেন্ট কোম্পানির ন্যারোগেজ লাইন। রোলিং স্টক, ইঞ্জিন, ওয়াগন, ট্রেনের ট্র্যাকসহ (ন্যারোগেজ) সমস্ত অবকাঠামো ওই কোম্পানিই রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।’
এর আগে গত শুক্রবার ভারতের ওড়িশা রাজ্যে তিনটি ট্রেনের পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হন। মর্মান্তিক ওই ঘটনায় আহত হন আরও প্রায় ৯০০ জন।
এর আগে ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গে এক যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে পাশের লাইনে আসতে থাকা মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
তদন্তকারীরা বলেছেন, মাওবাদীরা রেললাইনে নাশকতা করার কারণে কলকাতা-মুম্বাই যাত্রীবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল। ওই ঘটনায় পাঁচটি যাত্রীবাহী বগি পাশের লাইনে ছিটকে পড়ে এবং ওই লাইনে আসতে থাকা মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
তবে শুক্রবারের ওই দুর্ঘটনায় কোনো ধরনের নাশকতার আভাস পাওয়া যায়নি।