বায়ুদূষণ বিশ্বব্যাপী এক ভয়াবহ সমস্যা। গ্রিনহাউজ গ্যাস বৃদ্ধির ফলে বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, হচ্ছে বায়ুদূষণ। জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবে বিপর্যস্ত দক্ষিণ এশিয়ায় চলমান এ সংকটের সবচেয়ে বড় শিকার ভারত।
বিশেষ করে দেশটির রাজধানী দিল্লি। বিশ্বের অন্যতম দূষিত শহরগুলোর একটি। যানবাহনের কালো ধোঁয়া নির্গমন, শস্য-দহন, কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সর্বক্ষণই শহরটিকে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন রাখে।
শহরের বায়ুদূষণ রোধে ইতোমধ্যেই এক যুগল উদ্ভাবন করেছে অভিনব এক পদ্ধতি। এই শহরেরই একটি নার্সারিতে পরিস্রাবণ টাওয়ার বা বায়ু বিশুদ্ধকরণ টাওয়ার স্থাপন করছে এ দম্পতি। পরিস্রাবণ টাওয়ারটি গ্রীষ্ম থেকে শান্তভাবে আশপাশের বায়ুকে বিশুদ্ধ করে চলছে। ৫.৫ মিটার (১৮ ফুট) লম্বা ডিভাইসটি নয়াদিল্লির সুন্দের নার্সারিতে দিনে ৬০০,০০০ ঘনমিটার বায়ু পরিশোধন করে যাচ্ছে।
বায়ুকে ফিল্টার করে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডসহ বিপজ্জনক সূক্ষ্ম কণার মাত্রা হ্রাস করছে। অভিনব এ ডিভাইসটি ডিজাইন করেছে আর্কিটেকচার ফার্ম স্টুডিও সিম্বিওসিস। ফার্মটির ভারত ও জার্মানিতে অফিস রয়েছে। টাওয়ারগুলোতে একটি জ্যামিতিক শেলের ভেতর স্তূপ করা পাঁচটি বায়ু পরিস্রাবণ ‘কিউব’ রয়েছে। ফ্যানচালিত ডিভাইসগুলো ২০০ থেকে ৫০০ মিটার (৬৫৬ থেকে ১৬৪০ ফুট) ব্যাসার্ধের মধ্যে বায়ু পরিষ্কার করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে বাতাসের গতি ও চার পাশ কতটা খোলা তার ওপর নির্ভর করে। ইউএস-ভিত্তিক হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউশন গত বছর ভারতের রাজধানীকে পিএম ২.৫ এক্সপোজারের শহর হিসাবে নামকরণ করে। ডিভাইসটির প্রতিষ্ঠাতা অমিত জানান, ‘আমাদের মূল ব্যবসা স্থাপত্য, আমরা বায়ু পরিশোধন করতে চাইনি। কিন্তু এখনকার দূষণ আর গ্রহণযোগ্য নয়, অবস্থা খুবই খারাপ।’
বায়ু পরিশোধনে ব্যবহৃত ফিল্টারগুলো প্রতি তিন থেকে নয় মাসে পরিবর্তন করা জরুরি। ফিল্টারগুলো পরে আংশিকভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য। টাওয়ার দ্বারা সর্বোচ্চ ৭৫ ডেসিবেল শব্দ উৎপাদিত হয়। গ্লাস ফাইবার রিইনফোর্সড কংক্রিট থেকে তৈরি ডিভাইসগুলো সহজেই একত্রিত ও টান্সপোর্ট করা যায় এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। নিজেদের এ কাজ নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী প্রতিষ্ঠানটি। তারা তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা কোথায় করবেন তা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্মাণ কোম্পানি প্রায় ৪০টি ডিভাইস অর্ডার করেছেন বিল্ডিং সাইটগুলোতে ধুলা মোকাবিলা করার জন্য। ফ্রান্স, উজবেকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডেও তাদের সম্ভাব্য ক্রেতা রয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে। সিএনএন।