Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

পিটার রাফের নিবন্ধ

যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি উপেক্ষা করে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার দিকে চীন

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৩, ০২:৩৫ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি উপেক্ষা করে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার দিকে চীন

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রথম দিকে চীন এই সংকট সমাধানে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল।

তিনি বলেছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট আমাদের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব নয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমেও নয়। তবে আমি বিশ্বাস করি, চীন এটি সমাধান করতে পারবে। 

কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের এক বছর কেটে যাওয়ার পর বোরেলের সেই বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কারণ চীন একেবারেই পশ্চিমা নীতিনির্ধারকদের হতাশ করেছে। তারা এই সংকট সমাধানে অথবা যুদ্ধ-পূর্ব ইউরোপীয় ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি।

এর পবিরর্তে একটি বিকল্প চীনকেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ইউক্রেন যুদ্ধকে কাজে লাগিয়েছে। এবং চীনের সেই প্রচেষ্টা কাজেও দিচ্ছে।  

যেমন— চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত সপ্তাহে মস্কোতে তার তিন দিনের শীর্ষ সম্মেলন শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন, এ মুহূর্তে আমরা এমন একটি পরিবর্তন দেখছি, যা আমরা ১০০ বছর ধরে দেখিনি। আর এ পরিবর্তন আমাদের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। 

শি জিনপিংয়ের এই বক্তব্য অবশ্য সত্যই। কারণ এই যুদ্ধ আমেরিকার উপসাগরীয় মিত্র সৌদি আরবকে চীনের সঙ্গে আলিঙ্গনে সহায়তা করছে।

চীন এই মাসে একটি কূটনৈতিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে মধ্যস্থতা করেছিল তা ওয়াশিংটনকে হতবাক করেছে।

ইরান তার সামরিক বাহিনীকে গুণগতভাবে উন্নত করার জন্য ইউক্রেন যুদ্ধকে কাজে লাগিয়েছে। রাশিয়াকে ড্রোন, যুদ্ধাস্ত্র এবং সম্ভবত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিনিময়ে ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে চতুর্থ প্রজন্মের ফাইটার জেট এবং অন্যান্য উন্নত সিস্টেম ও অত্যাধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা পাবে, যা তাদের পারমাণবিক ক্ষেত্রগুলোকে সুরক্ষিত করতে পারে।

এ ছাড়া সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য রাশিয়া এবং ইরান একটি চুক্তি করেছে যার মাধ্যমে রাশিয়ার মাটিতে তেহরান নিরাপদ আশ্রয়স্থল স্থাপন করতে পারে যা ইসরায়েল ও আমেরিকান নাগালের বাইরে।

যেহেতু চীন তার কূটনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করছে, তাই এটি উপসাগরীয় অঞ্চলে একটি শক্তি, বাণিজ্য এবং আর্থিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলাদা। এটি হবে বেইজিংয়ের তত্ত্বাবধানে একটি আন্তর্জাতিক সুরক্ষা বলয়। 

আর রাশিয়াকে মোকাবিলা করার জন্য মার্কিন কৌশল ব্যর্থ হলে চীন ইউরোপীয়দের কাছে শান্তির বাণী নিয়ে হাজির হবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। আর এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের মতো ইউরোপেও নিরাপত্তার মূল্য হবে আমেরিকান আধিপত্যের অবসান।

সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্টে 

লেখক: পিটার রাফ, হাডসন ইনস্টিটিউটের সেন্টার অন ইউরোপ অ্যান্ড ইউরেশিয়ার পরিচালক ও সিনিয়র ফেলো পিটার রাফ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম