Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

বেইজিংয়ে দুই দশকে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা হ্রাস!

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫০ এএম

বেইজিংয়ে দুই দশকে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা হ্রাস!

চীনের বেইজিংয়ে দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ২০২২ সালে এলাকাটিতে জন্মের চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে।

জীবনযাত্রা এবং শিক্ষার উচ্চ খরচের পাশাপাশি এক সন্তান নীতির কারণে এ জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

২০২২ সালে ২ কোটি ১০ লাখেরও বেশি লোকের বাসস্থান রাজধানী বেইজিংয়ে জন্মের চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে, যার ফলে প্রাকৃতিক জনসংখ্যা প্রতি ১ হাজার জনে মাইনাস ০.০৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৩ সালের পর এই প্রথম জনসংখ্যা পিছিয়ে গেল।

বেইজিং কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, শহরের মৃত্যুর হার প্রতি ১ হাজার জনে ৫.৭২ জন, যেখানে জন্মহার প্রতি ১ হাজার জনে ৫.৬৭ জনে নেমে এসেছে। 

জনসংখ্যাবিদরা বলেছেন যে নেতিবাচক অবস্থানটি জাতীয় প্রবণতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যা চীনের পতনশীল জন্মহারের ওপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কারণগুলো ফুটিয়ে তুলেছে। 

গত বছরের সরকারি তথ্যে দেখা যায়, চীনের জন্মহার প্রতি ১ হাজার জনে ৬.৭৭ জনে নেমে এসেছে, যা সর্বনিম্ন রেকর্ড। বেইজিংয়ের জনসংখ্যার পরিসংখ্যান শহরের স্থায়ী বাসিন্দাদের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক অন্তর্ভুক্ত হয়নি যারা তাদের নিজ প্রদেশ থেকে অর্থনৈতিক সুযোগের সন্ধানে এখানে এসেছে।

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার অব পলিসি স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শিউজিয়ান পেং বলেছেন, বেইজিংয়ে উচ্চ জীবনযাত্রা এবং শিক্ষার খরচ এবং শিক্ষার স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্মহার কম খুব হওয়াই স্বাভাবিক। তবে চীনের বর্তমান কমিউনিস্ট পার্টির সরকার এই প্রবণতাকে পাল্টে দিতে এবং বয়স্ক জনসংখ্যার অর্থনৈতিক প্রভাবগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করছে।

মূলত ১৯৮০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বলবৎ থাকা চীনের এক সন্তান নীতির কারণে জনসংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এর পাশাপাশি পড়াশোনার আকাশচুম্বী খরচও অনেক চীনা পরিবারকে এক সন্তানের বেশি না নিতে বাধ্য করেছে— এমনকি এ কারণে অনেকে কোনো সন্তানই নিচ্ছেন না।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, ২০২২ সালের শেষে দেশটির লোকসংখ্যা ছিল ১৪১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার, কিন্তু এক বছর আগে ২০২১ সালে সংখ্যাটি ছিল ১৪১ কোটি ২৬ লাখ।

২০২১ সালে প্রতি হাজারে জন্মহার ছিল ৭ দশমিক ৫২, গত বছর তা কমে ৬ দশমিক ৭৭-এ নেমে এসেছে। এটি চীনের রেকর্ডে সর্বনিম্ন জন্মহার।

চীন গত বছর ১৯৭৬ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর হারও রেকর্ড করেছে। ২০২২ সালে দেশটি প্রতি হাজারে ৭ দশমিক ৩৭ মৃত্যু তালিকাবদ্ধ করেছে, যেখানে ২০২১ সালে মৃত্যুর হার ছিল ৭ দশমিক ১৮।

জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা তিন বছর ধরে কঠোর জিরো-কোভিড নীতি বজায় রাখার পর হঠাৎ করে তা তুলে নেওয়ায় চীনের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে, এটিও জন্মহার হ্রাসে ভূমিকা রাখছে।

চীনের স্থানীয় সরকারগুলো ২০২১ সাল থেকেই একের অধিক সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

এগুলোর মধ্যে কর ছাড়, মাতৃত্বকালীন ছুটি দীর্ঘায়িত করা এবং ভর্তুকি মূল্যে বাড়ি দেওয়া অন্যতম। কিন্তু এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও দীর্ঘদিনের ওই ধারা পরিবর্তিত হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।  
 
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম