ক্রমেই বার্ধক্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে যে দেশ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০২:৪৫ পিএম
বিয়ের প্রতি আগ্রহ নেই নাগরিকদের। ফলে কমেই চলেছে জন্মহার। এরই মধ্যে কম জন্মহারের রেকর্ড হয়েছে দেশটিতে। ফলে চিন্তায় পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা এর প্রভাবে ক্রমেই বার্ধক্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশটি। এমনই প্রকট সমস্যায় পড়েছে এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়া।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর এক লাখ ৯২ হাজার মানুষ বিয়ে করেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ১০ বছর আগে ২০১২ সালে বিয়ের সংখ্যা ছিল তিন লাখ ২৭ হাজার। অর্থাৎ প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
বিশেষজ্ঞদের তথ্যানুসারে, ১৯৭০ সালের পর এই প্রথম কোনো বছর এত কম সংখ্যায় বিয়ে হয়েছে দেশটিতে। তাদের ব্যাখ্যায়, বিয়ে করার প্রবণতাই কমে গেছে সমাজে। ছেলেদের বিয়ের গড় বয়স ৩৩.৭ বছর। আর মেয়েদের ৩১.৩ বছর। এতেও রেকর্ড। ছেলেদের বিয়ের বয়স ১.৬ বছর বেড়েছে। আর মেয়েদের বেড়েছে ১.৯ বছর। গত বছর যারা বিয়ে করেছেন, তাদের ৮০ শতাংশেরই প্রথম বিয়ে এটি।
জন্মহারও কমেছে অস্বাভাবিকভাবে। গত বছর দেশটিতে সবচেয়ে কমসংখ্যক শিশুর জন্ম হয়েছে, এই সংখ্যা মাত্র দুই লাখ ৪৯ হাজার। দেশটিতে জন্মহার বৃদ্ধির জন্য ২০০৬ সাল থেকে বাসিন্দাদের উৎসাহ দিচ্ছে সরকার। এই খাতে কমপক্ষে ২১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দেশের জনসংখ্যা ক্রমশ কমছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এভাবে চললে জনসংখ্যা পাঁচ কোটি ২০ লাখ থেকে কমে ২০৬৭ সালে তিন কোটি ৯০ লাখে দাঁড়াবে। দেশবাসীর মধ্যবর্তী বয়স দাঁড়াবে ৬২ বছর। মিডিয়ান এজ বা মধ্যবর্তী বয়স হলো, যে বয়স কোনো জনগোষ্ঠীকে সমান দুই ভাগে ভাগ করে। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে ৬২ বছর বয়সের ওপরে জনসংখ্যা এবং ৬২- এর নিচে জনসংখ্যা সমান।
কিন্তু জনসংখ্যা এভাবে কমছে কেন? এ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। অনেকের বক্তব্য, সন্তান মানুষ করার খরচ ক্রমবর্ধমান। আবার অনেকে বলছে, সমাজে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। ভালো চাকরি পাওয়া খুব কঠিন। ভালো চাকরি পেলেও তাতে নিরাপত্তা নেই। এদিকে জিনিসপত্রের দামও আকাশছোঁয়া। চাকরিরত নারীরা সন্তান ও অফিস সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই অনেকেই সন্তান নিতে চাইছেন না।
সূত্র: ব্লুমবার্গ