Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্ষতি ইউক্রেন-রাশিয়ার

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৩ পিএম

বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ক্ষতি ইউক্রেন-রাশিয়ার

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে লাভবান হয়নি কোনো পক্ষই। কেবলই ক্ষয়ক্ষতি। পঙ্গুদশায় পড়েছে দুই দেশের অর্থনীতিই। ভেঙে গেছে বিশ্ববাজার ব্যবস্থাও। 

মুদ্রাস্ফীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, খাদ্য সংকট আরেক দিকে যুদ্ধের দামামা। মিলছে না লাভ-ক্ষতির হিসাব, তবুও দীর্ঘ হচ্ছে যুদ্ধ। বিশ্বগণমাধ্যম ও বিভিন্ন গবেষণা সংস্থাগুলো যে তথ্য দিচ্ছে তার সবই অনুমাননির্ভর। সিএনএন, ব্ল–মবার্গ, ক্যাডটিএম।

রাশিয়া: যুদ্ধে রুশ অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে ইউক্রেন মিত্ররা চালিয়েছে নানা অপচেষ্টা। দিয়েছে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা। তাতে রুশ অর্থনীতির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরো বিশ্ব। মস্কোর তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ইউরোপ।

রাজকোষ সচল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূলধন নিয়ন্ত্রণ, সুদের হার বৃদ্ধি করে মুদ্রা সংকট রোধ করতে থাকে রাশিয়া। চলমান এ দৈনদশার মধ্যেই রুশ পার্লামেন্টের এক ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়ার অর্থনীতি ও সরকারব্যবস্থা পশ্চিমের বিশ্বাসের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী করা হয়েছে।’ তবুও দেশটির অর্থনীতির ফাটল এক বছরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যেখানে, ২০২১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করেছে ঠিক তার পরের বছরেই বেঁধেছে বিপত্তি।

গেল বছর ডিসেম্বরে সমুদ্রপথে বেশির ভাগ রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের আমদানি নিষিদ্ধ করে পশ্চিমারা। উচ্চমূল্যের গ্রাহক খুঁজে পাওয়া রাশিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। দেশটিতে জানুয়ারি মসে প্রায় এক হাজার ৭৬১ বিলিয়ন রুবেল (২৩.৫ বিলিয়ন ডলার) বাজেটের ঘাটতি জানানো হয়। যুদ্ধ বছর যেতে না যেতেই ৫৯ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি পায় যেখানে রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে ৩৫ শতাংশ।

উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক ঘোষণা করেছিলেন যে রাশিয়া মার্চ মাসে প্রায় ৫ শতাংশ তেল উৎপাদন কমাবে। গত এপ্রিল থেকে মান কমতে থাকে দেশটির মুদ্রা রুবেলের। মুদ্রার মান কমায় উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা গেছে রাশিয়ায়। দেশটির অর্থনীতি ২০২৬ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনে ১৯০ বিলিয়ন ডলার হারানোর পথে রয়েছে বলে উঠে এসেছে ব্ল–মবার্গের সমীক্ষায়। 

ইউক্রেন: আসা যাক ইউক্রেনের কথায়। গত এক বছরে কয়েক মিলিয়ন ইউক্রেনীয় তাদের বাড়িঘর ছেড়েছে। বোমা-রকেট-বিমন হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে শহর-প্রকল্প-আবাস। স্থবির হয়েছে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ-উৎপাদন।

ইউক্রেন যুদ্ধের আগেও দরিদ্র দেশই ছিল। যেখানে তাদের জিডিপি ছিল ১৬০ বিলিয়ন ডলার। জিডিপি ২০২২ কিউ-১য়ে (কিউ-১, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক হিসাব অর্থাৎ, জানুয়ারি, ফেব্র“য়ারি, মার্চ)  ১৫ শতাংশ এবং কিউ-২ তে ৩৭ শতাংশ হ্রাস পায়। কিউ-৩য়ে জিডিপি কিছুটা পুনরুদ্ধার করা গেলেও তা কেবল ৩০.৮ শতাংশ ওয়াইওওয়াই (ইয়ার ওভার ইয়ার-বার্ষিক ভিত্তিতে আর্থিক তুলনা)। তবে কিউ-৪ চলাকালীন ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামোয় রাশিয়া তীব্র বোমা হামলা চালায়। যার ফলে ওয়াইওওয়াই উলটো ৪১ শতাংশ পিছিয়ে পড়ে। 

জিডিপির গড় হ্রাস হয় ৩২ শতাংশ। যুদ্ধে দেশটির শিল্প উৎপাদন বছরে প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পায়। বিশাল সরবরাহের ঘাটতি মিলিয়ে মুদ্রাস্ফীতি এক লাফে প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে যায়। বাণিজ্য ঘাটতি ২০২১ সালে ৪.৪ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় তিনগুণ বেড়ে ২০২২ সালে ১১.২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মূল সামগ্রীর আমদানি ২৪% হ্রাস পেয়েছে। রপ্তানি আরও কমেছে। ২০২১ এর তুলনায় যা ৪৯ শতাংশ।

যুদ্ধের আগে ইউক্রেনের ৮৯ শতাংশ শস্য কৃষ্ণসাগর বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি হতো। ওদেসা, চেরনোমোরস্ক, পাইভডেন্নি, মাইকোলাইভে ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো ২০২১ সালে প্রতি মাসে প্রায় ৬ মিলিয়ন টন শস্য স্থানান্তর করত। যুদ্ধে শস্য রপ্তানি ভেঙে পড়ে। আগস্টে ইউক্রেনের সমুদ্রবন্দর পুনরায় আংশিক খোলার পরে মাসিক শস্য রপ্তানি ৪ মিলিয়ন টনের মতো পৌঁছানোর অনুমতি দেয়। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম