শত্রুবাহিনীর পারমাণবিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পালটা নিজেদের সক্ষমতা দেখানোর লক্ষ্যে করা এক মহড়ায় চারটি কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া।

উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী কোরিয়ান পিপলস আর্মির ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট বৃহস্পতিবার নর্থ হেমগিয়ং প্রদেশের কিম চায়েক সিটি থেকে কোরিয়া উপদ্বীপের পূর্ব উপকূলের কাছে সাগরে এই চারটি ‘হোয়াসল-২’ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএর বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।

অন্য ইউনিটগুলো নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকাগুলোতে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছে, তবে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার করা হয়নি।

ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ১০ হাজার ২০৮ সেকেন্ড থেকে ১০ হাজার ২২৪ সেকেন্ড উপবৃত্তাকার ও অষ্টভুজাকৃতির কক্ষপথ পাড়ি দিয়ে দুই হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে বলে কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথা জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়া জানায়নি। এ দুটো দেশই সাধারণত প্রথমে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথা জানায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা পরীক্ষাগুলোর ওপর নজর রেখেছে। তবে তারা ও যুক্তরাষ্ট্র পরীক্ষাগুলো নিয়ে যা বলছে, তা উত্তর কোরিয়ার ভাষ্যের সঙ্গে মিলছে না। এর বেশি কিছু বলেনি তারা।

এমন এক সময়ে পিয়ংইয়ং এ পরীক্ষার কথা জানাল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পাল্টায় কী করা যাবে, তা নিয়ে আলোচনা ও প্রশিক্ষণ চালাচ্ছে।

এদিকে পিয়ংইয়ংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে বৈঠক ডাকায় ওয়াশিংটন ও এর মিত্রদের কড়া সমালোচনা করেছে।

উত্তর কোরিয়ার অভিযোগ, জাতিসংঘ তাদের সামরিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘অন্যায্য’ আচরণ করছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ মহড়া নিয়ে চুপ থাকছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র তৎপরতার ওপর নানান নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও দেশটি নতুন নতুন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেই যাচ্ছে।

গত শনিবার উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যম একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর কথাও জানিয়েছিল।

নিজেদের সক্ষমতার জানান দিতে পিয়ংইয়ং শিগগিরই একটি দূরপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র এবং তাদের সপ্তম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে বলে বুধবার নিজেদের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার আইন প্রণেতারা।