সিন্ধু প্রদেশ ভাগের পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ অধিবাসীরা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৩১ পিএম
ছবি: এক্সপ্রেন ট্রিবিউন
পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশকে ভাগ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে সিন্ধু অ্যাকশন কমিটি (এসএসি)। কোনোভাবেই এ প্রদেশকে ভাগ করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
ডেইলি পাকিস্তানের খবরে বলা হয়, সিন্ধু অ্যাসেম্বলি রেজুলেশনের ১৪৪ ও ৪৭ ধারার মাধ্যমে সিন্ধু প্রদেশকে বিভক্ত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন পালন করেন অ্যাকশন কমিটির সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, সরকারের সিন্ধু প্রদেশকে বিভক্ত করার বিরুদ্ধে দেশটির জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে সিন্ধু অ্যাকশন কমিটি বা এসএসি গঠন করা হয়।
এসএসি গ্রুপের নেতা আয়াজ লতিফ পালিজু, রোশান বোরিও, মাসরুর শাহ, ড. আজিজ তালপুরসহ নেতারা বলেন, যে সিন্ধু প্রদেশ শতাব্দীর পর শতাব্দী অবিভক্ত রয়েছে সে সিন্ধু প্রদেশের বিরুদ্ধে কোন চক্রান্ত সহ্য করা হবে না। আমরা এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
আয়াজ লতিফ বলেন, আসিফ আলি জারদারি শুধু সিন্ধু প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি দিয়েছিলেন। সিন্ধি জনগণের দুর্দশা এবং তাদের কৃষি, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সমস্যাগুলো নিয়ে তেমন চিন্তা করেননি।
তিনি বলেন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) বিগত ১৫ বছর যাবত সিন্ধুর প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করার পাঁয়তারা করছে। তারা সিন্ধু অ্যাসেম্বলি রেজুলেশনের ১৪৪ ও ১৪৭ ধারার মাধ্যমে সিন্ধু প্রদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
আয়াজ লতিফ আরো বলেন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি সিন্ধু প্রদেশের জনগণের মতামত না নিয়েই সিন্ধু প্রদেশকে ভাগ করার জন্য নতুন এক কমিটি গঠন করেছে; যা সিন্ধুকে লুট করার নামান্তর।
এছাড়াও তিনি জাতীয় পরিষদের স্পিকারকে অনতিবিলম্বে সিন্ধু প্রদেশের অখণ্ডতা রক্ষায় এ কমিটিকে বাধা দেওয়ার দাবি জানান। সিন্ধু প্রদেশকে ভাগ করার ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে প্রদেশের জনগণকে সজাগ থাকারও আহবান জানান এই নেতা।
প্রসঙ্গত, দেশের সরকারি তহবিলে রাজস্ব যোগানে দক্ষিণ প্রান্তের প্রদেশটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেও উন্নয়নের প্রশ্নে সিন্ধি জনগণ বহুকাল ধরেই বঞ্চিত। গত দু-দশকে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মানব উন্নয়ন সূচকের প্রতিটি সমীক্ষাতেই পিছিয়ে পড়ছে সিন্ধু।
সিন্ধু প্রদেশের তীব্র পানির অভাব, বেকারত্ব, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক প্রশাসন পুরোপুরি উদাসীন।
সিন্ধু প্রদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা পানি। সিন্ধু প্রদেশের মানুষদের প্রতি পাকিস্তান সরকারের অবিচারের কারণে খাবারের পানিটুকুও জুটছে না। পানির অভাবে কৃষিপ্রধান সিন্ধু প্রদেশে কৃষিকাজ লাটে উঠতে বসেছে।
২০২০ সালের ১১ মার্চ জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ৪৩তম অধিবেশনে ওয়ার্ল্ড সিন্ধি কংগ্রেসের মহাসচিব লখু লুহানা সেখানকার বাস্তবচিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সিন্ধিদের ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক অধিকার হরণ করে তাদের গায়ের জোরে দাবিয়ে রাখতে চাইছে পাকিস্তান। গত তিন বছরে অন্তত ৩০০ রাজনৈতিক নেতাকর্মী, বুদ্ধিজীবীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করা হয়েছে।’