Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

মৃত্যুর ৩০ বছর পর বিয়ে, অনুষ্ঠানে শিশু ও অবিবাহিতদের প্রবেশ নিষেধ (ভিডিও)

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২২, ০৪:৫০ পিএম

মৃত্যুর ৩০ বছর পর বিয়ে, অনুষ্ঠানে শিশু ও অবিবাহিতদের প্রবেশ নিষেধ (ভিডিও)

রীতিমতো ধুমধাম করে আয়োজন করা হয়েছে বিয়ের। প্রথা অনুযায়ী সব রীতিনীতিও পালন করা হয়েছে। তবে যাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের মৃত্যু হয়েছে ৩০ বছর আগেই।

এ পর্যন্ত পড়েই যারা ভ্রু কুঁচকে ভাবছেন, আরে দূর! এ রকম বিয়ে আবার হয় নাকি? তাদের ভ্রুকূটি দূর হয়ে যাবে বাকিটুকু পড়লেই। আসলেই এই বিয়ের পাত্র চাঁদাপ্পা এবং পাত্রী শোভা ৩০ বছর আগেই মারা গেছেন। তবে ভারতের কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নর জেলার একটি ঐতিহ্য হলো ‘প্রেত কল্যাণয়’। সেই ঐহিত্য অনুযায়ীই আয়োজন করা হয় এই অদ্ভূত বিয়ের। 

সম্প্রতি ভারতের ইউটিউবার অ্যানি অরুণ টুইটারে এই বিশেষ বিয়ে সম্পর্কে জানিয়েছেন। এই বিয়ের খুঁটিনাটি টুইটারে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরেছেন তিনি।

অ্যানি অরুণ জানান, গত ২৮ জুলাই তিনি এক বিয়ের অনুষ্ঠানে যান তিনি। এই বিয়ের পাত্র চাঁদাপ্পা এবং পাত্রী শোভা – দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ বছর আগে। 
‘প্রেত কল্যাণম’ ঐতিহ্য অনুযায়ী কন্নর জেলার যেসব ছেলে-মেয়েদের ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই মৃত্যু হয়, তাদের মৃত্যুর কয়েক বছর পর বিয়ে দেওয়া হয়। তবে কোনো জীবন্ত ব্যক্তির সঙ্গে নয়। আরেক ১৮ বছরের নিচে মৃত্যু হওয়া ছেলে বা মেয়ের সঙ্গেই ওই মৃত ব্যক্তির বিয়ে দেওয়া হয়।

তবে প্রশ্ন হলো কেন প্রচলন হলো এই অদ্ভূত প্রথার? জানা গেছে, সেখানকার মানুষ বিশ্বাস করেন, বিয়ের মাধ্যমেই জীবন পূর্ণতা পায়। তাই যাদের বিয়ে হওয়ার আগেই মৃত্যু হয়, তাদের আত্মা ‘মোক্ষলাভ’ করতে পারে না। সেই অতৃপ্ত আত্মা পরিবারের মধ্যেই ঘুরে ফিরে বেড়ায় এবং তা থেকে সমস্যার মুখে পড়তে পারে পরিবার। কিন্তু তাদের দিলে এই সমস্যা দূর হয়। এই কারণেই মৃত পাত্র-পাত্রীর বিয়ে দেওয়া হয়।

মৃত পাত্র-পাত্রীর বিয়ে বলে, আয়োজনে কোনো কমতি থাকে না। আর পাঁচটি স্বাভাবিক বিয়ের মতোই সব রীতিনীতি পালন করা হয়। বাগদানের জন্য দুটি পরিবার একে অপরের বাড়িতে যায়। বর-কনে দেখা হয়। এমনকি, অন্যান্য বিয়ের মতো এই বিয়েতেও পাত্র-পাত্রী পছন্দ করার বিষয় থাকে। 

কনের বয়স বেশি বলে পাত্রপক্ষ বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে, এমনও দেখা যায় বলে জানিয়েছেন অ্যানি। পাত্রপক্ষ কনেকে শাড়ি দিয়ে আসে, যা কনে বিয়ের সময় বা লগ্নের সময় পরে। বরকে নিয়ে উৎসব করতে করতে কনের বাড়িতে আসেন বরযাত্রীরা। 

এছাড়া সাতপাক ঘোরা, লগ্ন, কন্যাদান এবং মঙ্গলসূত্র বাঁধা – বিয়ের সব রীতিনীতিই পালন করা হয়। 

এমনকি মৃতদের বিয়ে বলে ভূঁড়িভোজেও কোনো কমতি থাকে না। অ্যানি অরুণ যে বিয়েতে গিয়েছিলেন সেখানে ফিশ ফ্রাই, চিকেন সুক্কা, কদলে বলয়ার, মাটন গ্রেভি নিয়ে অতিথিদের অ্যাপায়ন করা হয়।

তবে এই বিয়েতে শিশু ও অবিবাহিতরা থাকতে পারেন না। 

‘আর সব শেষে ওই দম্পতি সুখে ‘সংসার’ করতে থাকেন।  হয়তো মৃত্যুর পরের জীবনেও’, আজব এই বিয়ে নিয়ে শেষ টুইটে লিখেছেন অ্যানি অরুণ। 

ভারত বিয়ে

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম