মার্কিন বাহিনীতে আত্মহত্যা বাড়ছে যে কারণে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২১, ০৭:৫৫ এএম
ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
মার্কিন বাহিনীতে কর্মরত সেনা সদস্যদের আত্মহত্যার পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন আলাস্কার ইয়েলসন বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনের সময় এনিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
এদিন আলাস্কা সফরে গিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, কেবল এখানে নয় বরং পুরো বাহিনীতে আত্মহত্যার হারে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আত্মহত্যায় একটা প্রাণ হারানোয় অনেক ক্ষতি। এই সমস্যা মোকাবেলায় আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি, আরও অনেক কিছুই করতে হবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের হিসেব অনুযায়ী ২০২০ সালে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় ৩৮৫ জন সেনা সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৮ সালে এই পরিমাণ ছিলো ৩২৬ জন। গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে এই পর্যন্ত আলাস্কায় আত্মহত্যা করেছেন ছয় জন।
আলাস্কায় মোতায়েন করা মার্কিন সেনারা কঠিন আবহাওয়া, ভূতাত্ত্বিক অবস্থান এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মধ্যে থাকেন। প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ এবং স্থান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাদের। এছাড়া যেসব সেনা সদস্য সাধারণ মানুষের বসবাসের এলাকায় থাকেন তাদেরও জীবন যাত্রায় ব্যয় অনেক বেশি।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশেষ করে পুরনো সেনা সদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে।
ছয় বছরের বেশি অভিজ্ঞ ৪৫ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা সদস্য আত্মহত্যা করেছে।প্রত্যাহার করে আনার পরও অনেকে আত্মহত্যা করেছে।
এ পরিস্থিতিতে পেন্টাগন এই আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জোর প্রচেষ্টা শুরু করেছে।
মার্কিন সেনা সদস্যদের মধ্যে আত্মহত্যার সামাজিক প্রভাবের বিষয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ওইসব সেনা সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও নজিরবিহীনভাবে আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে যে সংখ্যক মার্কিন সেনারা প্রাণ হারিয়েছে, তার চেয়ে বেশি মারা গেছে আত্মহত্যা করে।
১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার পর সন্ত্রাস নির্মূলের অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এসব যুদ্ধ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত বহু মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে।
এ সব যুদ্ধে কোনো লক্ষ্যই অর্জিত হয়নি এবং কতোদিন এ যুদ্ধ চলবে তারও কোনো ঠিক ছিল না। ফলে সেনাদের মধ্যে মারাত্মক হতাশা দেখা দেয়।
এসব হতাশা থেকেই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে সবচেয়ে বেশি। ১১ সেপ্টেম্বরের পর আত্মহত্যার মাত্রা চারগুণে বেড়েছে বলে পেন্টাগন জানিয়েছে।
এদের মধ্যে ২০১৮ সালে কর্মস্থলেই আত্মহত্যা করেছে ৩২৬ মার্কিন সেনা, ২০১৯ সালে ৩৪৮ এবং ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭৭ জনে।