তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। ফাইল ছবি
তুরস্কের কৃষ্ণসাগরে ১৩৫ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস আবিষ্কার করেছে তুরস্ক। এ আবিষ্কারের ফলে দেশের অর্থনীতিতে নতুন সুবাতাস বইবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান শুক্রবার গ্যাসের এ বিশাল মজুদ আবিষ্কারের ঘোষণা দেন। খবর ডেইলি সাবাহর।
এরদোগান বলেন, সাকারিয়া গ্যাস ক্ষেত্রের আমাসরা-১ কূপে আমাদের তেল-গ্যাস অনুসন্ধাকারী জাহাজ ফাতিহ ১৩৫ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস আবিষ্কার করেছে। আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। আল্লাহ চাইলে, আমরা আশা করছি ওই এলাকা থেকে আরও সুখবর মিলবে।
এসময় সাগর থেকে মূল ভূখণ্ডে গ্যাস কীভাবে আনা হবে এবং তা ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে সে পরিকল্পনার কথা জানান এরদোগান।
এর আগে এরদোগান বৃহস্পতিবার গ্যাস নিয়ে দেশবাসীকে সুখবর দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এ ১৩৫ বিলয়নসহ বর্তমানে তুরস্কের গ্যাসের রিজার্ভ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪০ বিলিয়ন ঘনমিটার। গত বছর তুরস্কের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী জাহাজ ফাতিহ কৃষ্ণ সাগরের পশ্চিমাঞ্চলে ৪০৫ বিলিয়ন ঘনমিটার প্রাকৃতিক গ্যাস আবিষ্কার করেছিল। এটি ছিল তুরস্কের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার।
তুরস্ক তার তিনটি অনুসন্ধানকারী জাহাজের দুটি ফাতিহ এবং কানুনি তেল-গ্যাস খোঁজার কাজে গতি আনার জন্য ব্যবহার করেছে।
সাকারিয়া গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২০২৩ সালে মূল গ্রিডে গ্যাস নেওয়ার পরিকল্পনা করছে আঙ্কারা। কূপ এলাকা থেকে মূল গ্রিডে গ্যাস নেওয়ার জন্য প্রায় ১৬০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করতে হবে দেশটিকে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আঙ্কারাকে দুই বছরের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য স্টেশন নির্মাণ করতে হবে।
তুরস্ক তেল-গ্যাসের চাহিদা মেটায় রাশিয়া, আজারবাইজান, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, নাইজেরিয়া ও আলজেরিয়ার কাছ থেকে আমদানির মাধ্যমে। আর এলএনজি আমদানি করে কাতার থেকে। গতবছর ৪৮.১ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস আমদানি করে তুরস্ক।
এদিন তুরস্কের ফিলিওস ভ্যালি প্রজেক্ট নিয়ে কথা বলেন এরদোগান।
ফিলিওস ভ্যালি প্রজেক্ট
এরদোগান বলেন, যখন ফিলিওস বন্দরের কাজ সম্পূর্ণ হবে তখন এটি শুধু মারামারা সাগরের বন্দরগুলো এবং এ প্রণালীর ওপর চাপ কমাবে তা নয় এটা মধ্য এশিয়া থেকে দক্ষিণ ও মধ্য প্রাচ্যের পাশাপাশি কৃষ্ণ সাগর এলাকার অঞ্চলগুলোতে রেলপথে বাণিজ্যও নিশ্চিত করবে।
ফিলিওস বন্দর ফিলিওস ভ্যালি প্রজেক্টের অংশ। এ প্রজেক্টের আওতায় অর্থনৈতিক অঞ্চল, বন্দর, রেল ও অন্যান্য পরিবহন সুবিধা রয়েছে।
এ প্রজেক্ট নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে এরদোগান বলেন, ফিলিওস ভ্যালি প্রজেক্টে বিনিয়োগকারীদের জন্য নানা ধরনের সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ফিলিওস ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন হচ্ছে তুরস্কের প্রথম মেগা ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন। প্রায় ৬০০ হেক্টর জায়গা রয়েছে এ ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে।
বেসরকারি খাতের নেতৃত্বে এ ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন উদ্ভাবনী এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ডিজাইন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এরদোগান বলেন, ভবিষ্যতে ফিলিওস ভ্যালি প্রজেক্ট উৎপাদন, রপ্তানি এবং এ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।