Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধই বন্ধুত্ব গড়ে দেয় সোলাইমানি-কিয়ানির

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০২:২৭ এএম

যুদ্ধই বন্ধুত্ব গড়ে দেয় সোলাইমানি-কিয়ানির

১৯৮৬ সালে তখনকার প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সঙ্গে কাসেম সোলাইমানি ও ইসমাইল কিয়ানি। ছবি: সংগৃহীত

আশির দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়ে সম্মুখসারিতে লড়ছিলেন ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও ইসমাইল কিয়ানি। তখন থেকেই তাদের বন্ধুত্ব শুরু হয়।

মার্কিন ড্রোন হামলায় প্রভাবশালী কাসেম সোলামানি নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের সেই বন্ধুত্ব অটুট ছিল। বিপ্লবী গার্ডস বিশেষজ্ঞ আলী আলফোনেহ বলেন, ১৯৮২ সালের মার্চে যুদ্ধের সম্মুখসারিতে সোলাইমানির সঙ্গে বন্ধুত্ব ঘটে কিয়ানির।

তখন থেকে নিজেকে সোলাইমানির একজন বন্ধু হিসেবে বিবরণ দেন তিনি। আর যুদ্ধের ভেতর দিয়ে তাদের এই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল।-খবর আল-জাজিরার

২০১৫ সালে ইরনাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে কিয়ানি বলেন, আমরা যুদ্ধবন্ধু। যুদ্ধ আমাদের বন্ধুত্ব তৈরি করে দিয়েছিল। ওই কঠিন সময়ে যাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছিল, তা ছিল অনেক গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী। যেটা প্রতিবেশীসুলভ কোনো বন্ধুত্ব ছিল না।

আলফোনেহ বলেন, যুদ্ধের সময় কিয়ানি তখনকার প্রেসিডেন্ট খামেনির সঙ্গে দেখা করেন। ১৯৮৬ সালে খামেনির সঙ্গে তার একটি ছবিও প্রকাশ করেছে ইরনা।

যুদ্ধের পর বিপ্লবী গার্ডসের স্থলবাহিনীর উপপ্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তাকে। আফগানিস্তানের মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযানে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন কিয়ানি।

এছাড়া আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে উত্তরাঞ্চলীয় জোটের লড়াইয়েও তিনি অংশগ্রহণ করেছেন।

তবে কিয়ানি কবে আল-কুদসে যোগ দিয়েছেন, তা জানা সম্ভব হয়নি। ইরনার খবর বলছে, ১৯৯৭ সালে তিনি এই বাহিনীর উপপ্রধানের দায়িত্ব পান।

কিন্তু সুইডেনভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মায়সাম বেহরাভেসের মতে, ২০০৭ সালের পরে তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।

মার্কিন ড্রোন হামলায় আল-কুদস ফোর্সের প্রধান কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কিয়ানি আনুষ্ঠানিকভাবে সোমবার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

সোলাইমানি গুপ্তহত্যার শিকার হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার উত্তরসূরি হিসেবে কিয়ানির নাম ঘোষণা করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সোলাইমানির সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে এই জেনারেলের।

ইরানের ছায়া কমান্ডার হিসেবে খ্যাত সোলাইমানির অধীন আল-কুদস ফোর্স মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তেহরানের প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করেছেন। ছায়াবাহিনীর এক ব্যাপক নেটওয়ার্কও তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদের সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আল-কুদস। এছাড়া সিরিয়া ও ইরাকে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে তারা।

১৯৮০-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত চলা ইরান-ইরাক যুদ্ধে বিপ্লবী গার্ডসের কমান্ডারদের মধ্য থেকে কিয়ানিকে কুদস ফোর্সের প্রধান হিসেবে বেছে নিয়েছেন খামেনি। তিনি বলেন, অভিজ্ঞ সেনাদের অধীন এই ইউনিট সোলাইমানির পথ অনুসরণ করবে।

টেনিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সাঈদ গোলকার বলেন, কুদস ফোর্সের নতুন প্রধান তার অনুগত ও বিপ্লবী গার্ডসের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন, এমনটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ খামেনির জন্য।

১৯৫০ এর দশকে উত্তরপূর্ব ইরানের মাশহাদে জন্মগ্রহণ করেন কিয়ানি। আর আশির দশকে ইরাকি বাহিনী পশ্চিম ইরানে হানা দেয়ার কিছু দিন আগে বিপ্লবী গার্ডসে যোগ দেন তিনি।

ইরাক-ইরানের আট বছরের লড়াইয়ে দশ লাখেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম