যে কৌশলে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদ বাগিয়ে নিল রাজাপাকসে পরিবার
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ১০:১৫ এএম
ছবি: সংগৃহীত
ছোট ভাইয়ের হাত ধরে এবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের পর গোতাবায়া রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার ভাইকেই মনোনিত করেছেন।
বুধবার এ ঘোষণা দেয়ার পর মাহিন্দা রাজাপাকসে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। ফলে শ্রীলংকা ফের রাজাপাকসে পরিবারের হাতের মুঠোয় থাকল।
সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হতো মাহিন্দাকে। কিন্তু সেই রাস্তা পরিষ্কার করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। নির্বাচনে বিপর্যয়কর পরাজয়ের চারদিনের মাথায় সরকার ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করেছেন তিনি।
বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে বিক্রমাসিংহে বলেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বড় ভাই মাহিন্দার নাম ঘোষণা করেন গোতাবায়া।
মাহিন্দা রাজপাকসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার মাধ্যমে শ্রীলংকা প্রথমবারের মতো একইসঙ্গে সরকার প্রধানের সর্বোচ্চ দুই পদে দুই ভাইকে পাচ্ছে। মাহিন্দা রাজপাকসে যখন প্রথমবার শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন তখন দেশটির সংসদের স্পিকার ছিলেন তার বড় ভাই চামাল রাজপাকসে।
দু’বারের বেশি প্রেসিডেন্ট হওয়া সংবিধান পরিপন্থী। তাই এবার কৌশল কিছুটা বদলেছে তারা। ছোট ভাইয়ের পেছনে বসেই দেশ চালাবেন মাহিন্দা। স্বপ্ন শতভাগ সফল।
গত শনিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শ্রীলংকা পোদাজানা পার্টির প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছেন গোতাবায়া। ধরাশায়ী করেছেন বিক্রমাসিংহে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) নেতৃত্বাধীন জোটের প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসাকে।
এ নির্বাচন বিক্রমাসিংহের ইউএনপি সরকারের জন্য জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের প্রথম পরীক্ষা ছিল। বিক্রমাসিংহে দলপ্রধান হলেও নিজে প্রার্থী না হয়ে দলের উপপ্রধান সাজিথের জন্য প্রার্থিতা ছেড়ে দেন। দলের ভরাডুবির পরপরই বিক্রমাসিংহের মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী মঙ্গলা সামারাবীরাসহ প্রায় ১০ মন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
২০০৫ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত একটানা ১০ বছর দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাহিন্দা। সেসময় পুরো পরিবার মিলে শাসন করেছেন দেশ। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন গোতাবায়া। অন্য দুই ভাইয়ের একজন অর্থমন্ত্রী, আরেকজন পার্লামেন্টের স্পিকার।
২০০৯ সালে কয়েক দশকব্যাপী চলা তামিল টাইগার বিদ্রোহ কঠোর ও নির্মমভাবে দমন করে রাজাপাকসে ভাইয়েরা। ৪০ হাজার তামিলকে হত্যা করা হয়। সব মিলিয়ে নিহত হয় এক লাখ মানুষ। এছাড়া ২০১৫ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের আগ পর্যন্ত সরকার-সমালোচক সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন, তামিলসহ হাজার হাজার মানুষের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে।