কাশ্মীরের বন্দি রাজনৈতিক নেতাদের পুলিশের মারধর
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ০২:৩৬ এএম
ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকেই কাশ্মীরের সব রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
এর মধ্যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রীও আছেন। গত তিন মাস ধরে বিনাকারণে তাদের রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অতিথিশালাসহ হোটেল ও মোটেলগুলোকে কারাগার ঘোষণা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। খবর আনন্দবাজারের।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিসহ শীর্ষস্থানীয় ৩৪ বন্দি কাশ্মীর নেতাকে রোববার সরানো হয়েছে এমএলএ হোস্টেলে।
তবে বন্দিদের স্বাস্থ্য বিবেচনা করে নয়, তুষারপাতে নিরাপত্তারক্ষীদের কষ্ট হওয়ায় রাজবন্দিদের এমএলএ হোস্টেলে স্থানান্তর করা হয়।
এ সময় কাশ্মীরি নেতাদের নিরাপত্তারক্ষীরা মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডাল লেকের তীরের সেন্টর হোটেলে বন্দি ৩৪ কাশ্মীরি নেতাকে শ্রীনগরের এমএলএ হোস্টেলে সরানোর সময়ে সাজ্জাদ লোন, ওয়াহিদ প্যারা ও শাহ ফয়সলকে মারধর করা হয়েছে বলে সাজ্জাদ লোনের দল ও মেহবুবা মুফতির টুইটার থেকে দাবি করা হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের আগের রাতে বন্দি করা হয় ওমর আবদুল্লাহ, ফারুক আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতিসহ প্রায় সব প্রথমসারির কাশ্মীরি নেতানেত্রীকে।
ফারুককে শ্রীনগরে তার বাড়িতেই রাখা হয়েছে। বাকি নেতাদের রাখা হয়েছিল বিভিন্ন সরকারি হোটেল-অতিথিশালা-প্রটোকল ভবনে। সেগুলোকে সাব-জেলের মর্যাদা দেয় প্রশাসন।
শীতে ডাল লেকের তীর কাশ্মীরের শীতলতম স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফলে কিছু দিন ধরেই সেন্টর হোটেলে বন্দি নেতাদের সরানোর কথা ভাবছিল প্রশাসন। কিন্তু কয়েক দিনের প্রবল তুষারপাতে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যায়।
চশমে শাহির অতিথিশালা থেকে মেহবুবাকে সরানো হয় মাওলানা আজাদ রোডের সরকারি বাড়িতে। একসময়ে ওই বাড়িতেই থাকতেন মেহবুবার বাবা প্রয়াত মুফতি মোহাম্মদ সাঈদ।
মেহবুবার মেয়ে ইলতিজা বলেন, মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে উদ্বিগ্ন ছিলাম। যে কটেজে মাকে রাখা হয়েছিল, তার জানালা ভাঙা ছিল। উপযুক্ত হিটারও নেই। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনছিলেন না।
রোববার হোটেল থেকে ৩৪ বন্দিকে সরানো হয়েছে মাওলানা আজাদ রোডেরই এমএলএ হোস্টেলে। বন্দি নেতা ও তাদের পাহারায় নিযুক্ত রক্ষীরা ঠাণ্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। সে জন্যই দ্রুত এই পদক্ষেপ।
এর পরেই মেহবুবার টুইটার থেকে অভিযোগ করা হয়, এমএলএ হোস্টেলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সাজ্জাদ লোন, ওয়াহিদ প্যারা ও শাহ ফয়সলকে মারধর করা হয়েছে। মেহবুবার টুইটার হ্যান্ডলটি এখন ব্যবহার করেন ইলতিজা।
তিনি লেখেন- ‘পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদকে একসময়ে ভাই বলতেন নরেন্দ্র মোদি। কাশ্মীরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ওয়াহিদের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন রাজনাথ সিংহ।
শাহ ফয়সলকে কাশ্মীরের রোল মডেল বলা হয়েছিল। তাদেরই এমন অবস্থা হলে অন্যদের কী হাল হতে পারে তা বুঝে দেখুন।
সাজ্জাদের দলের দাবি, দেহ তল্লাশির নামে সাজ্জাদকে মারধর করা হয়েছে। এ দাবি খারিজ করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।
কর্তৃপক্ষের দাবি, সাজ্জাদ দেহ তল্লাশি ছাড়াই হোস্টেলে ঢুকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এমএলএ হোস্টেলকেও এখন সাব-জেলের তকমা দেয়া হয়েছে।
তল্লাশি ছাড়া সেখানে ঢুকতে দেয়া সম্ভব নয়। এ নিয়ে দুপক্ষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে মাত্র, মারধরের ঘটনা ঘটেনি।