প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ১০ জন নিহত ও দুই লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। গৃহহীন হয়েছেন অজস্র মানুষ।
ঘূর্ণিঝড়ের সেই দুর্দশার ছবি-ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও বুলবুল নিয়ে রঙ্গ-রসিকতায় মেতে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গের অনেক মানুষ। খবর আনন্দবাজার।
ঝড়ের দু-তিন দিন আগে থেকে ‘বুলবুল’ শব্দটির সঙ্গে যুক্ত নানা গানের লাইন নিয়ে মিম, ছবি ছড়িয়ে পড়তে থাকে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে।
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই গতিবেগ বাড়ছিল বুলবুলের। ফসলের চিন্তায় ঘুম উড়েছিল চাষিদের। কাঁচাবাড়ির বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাজ করছিল।
এসব ভাবনা অবশ্য স্পর্শ করেনি নেটিজ়েনদের অনেকেই। তারা মশগুল ছিলেন বুলবুল নিয়ে রঙ্গ-রসিকতায়।
ফেসবুকে কেউ লিখেছেন, ‘ডবল বুল থাকতে সিঙ্গেল বুল কী করবে’! ভাইরাল হয়েছে ‘আ জা মেরি বুলবুল তেরি ইন্তেজার হ্যায়’ গানটিও।
ঝড় আছড়ে পড়ার পরও রসিকতা থামেনি। মিম বানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘বুলবুলকে শুধু ভালোবেসে বলেছিলাম, নাচ মেরে বুলবুল তো পয়সা মিলেগা। ও দেখছি ব্যাপারটিকে সিরিয়াসলি নিয়ে ফেলেছে।’
তার জেলার অনেকের ক্ষতি হয়েছে বুলবুলের জেরে। সেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির সমাজকর্মী ঝর্না আচার্য প্রশ্ন তুলছেন- যারা এমন রসিকতা করছেন, তাদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েই। তিনি বলছেন, ‘ধান বা আনাজ নষ্ট হলে কী খাব, তা ভাবতে হলে এমন কৌতুক করতে পারতেন না।’
কৌতুক করেই ফেসবুকে পরিচিত পেশায় ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ আলি। ‘মালি’ নামে নিজের পেজ থেকে সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র পোস্ট করেন তিনি।
সেগুলো ভাইরালও হয় প্রায়শই। অস্ট্রেলিয়াবাসী সেই মাহফুজই বলছেন, ‘আসলে এখন সবাই সামাজিকমাধ্যমে একটা পরিচিতি পেতে চান। তাই কোনো বিষয় নিয়ে মজা করা উচিত, আর কোনটা নিয়ে উচিত নয়, সেই বোধও অনেক সময় থাকে না। এটি নিজেকেই বুঝতে হবে।’
মাহফুজ জানালেন, অস্ট্রেলিয়ায় হালে ফেসবুকে কোন পোস্ট কয়টা ‘লাইক’ পাচ্ছে তা দেখানোই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তার কথায়, ‘এতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রইল। জনপ্রিয় হওয়ার তাড়না রইল না। এটি হলে হয়তো এমন প্রবণতা কমবে।’
শুধু ইন্টারনেটে রসিকতা করেই থেমে নেই অনেকে। বুলবুলকে কাছ থেকে দেখার ‘রোমাঞ্চ’ পেতে অনেকে পাড়ি দিয়েছেন দিঘায়।
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে এমনই একদল যুবক বললেন, ‘আমরা তো গুগল ঘেঁটে দেখে এসেছি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে সেলফি কীভাবে তুলতে হয়।’ নিষেধ উড়িয়ে সমুদ্রে নেমে দিঘায় মারা গেছেন কলকাতার এক পর্যটকও।