সুবিধাবাদী রাজনীতি বাদ দিন: মোদিকে মনমোহন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:২৫ পিএম
ভারতের বর্তমান অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং।
আর দেশটির এ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য বর্তমান মোদি সরকারকে দায়ী করেছেন তিনি।
মনমোহন সিং বলেন, ভারতের বর্তমান অর্থনীতির অবস্থা গভীর উদ্বেগজনক। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনাই মন্দার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ছয় মাসে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের ওপরে যেতে পারেনি।
তারা জানিয়েছে, ৩০ জুন পর্যন্ত শেষ ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের অর্থনীতির গতি নিম্নমুখী।
তারা আরও জানায়, প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) জিডিপি ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত যা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০১৮ সালের ৩০ জুনের শেষে ছিল ৮ শতাংশ।
কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, ২০১৩ সালের জানুয়ারি-মার্চের পর থেকে প্রবৃদ্ধির হার এত নিচে কখনও নামেনি।
এমন তথ্য প্রকাশের পরই উদ্বেগ প্রকাশ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রবীণ এ কংগ্রেস নেতা।
এমন নিম্নমুখী অর্থনীতি বেশি দিন চালিয়ে নেয়া ভারতের জন্য শুভকর নয় জানিয়ে এক বিবৃতিতে মনমোহন সিং বলেন, গত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ, এটিই চূড়ান্ত সংকেত যে আমরা দীর্ঘায়িত মন্দার মধ্যে আছি।
মোদি সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি সরকারকে অনুরোধ করছি, এই সংকট থেকে আমাদের অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্য সুবিধাবাদী রাজনীতি বাদ দিয়ে সব বুদ্ধিমান ও শুভচিন্তার মানুষের মতামত ও চিন্তাভাবনাকে গুরুত্ব দিন।
ভারতের বর্তমান অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির অর্থনীতিবিদরা।
তারা জানিয়েছেন, বড় কোনো বিনিয়োগ নেই, কৃষিতে অবস্থা ভালো নয়, শেয়ার মার্কেটও ধুঁকছে।
ইন্ডিয়া রেটিংসের প্রধান অর্থনীতিবিদ দেবেন্দ্র পন্থের মতে, গৃহস্থের সঞ্চয়ের পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে।
এদিকে অর্থনীতির ঝিমিয়ে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করে সরকারের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভি সুব্রামনিয়ন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে প্রবৃদ্ধির গতি এমন নিম্নমুখী হয়েছে। এ বিষয়ে মোদি সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
প্রসঙ্গত ড. মনমোহন সিং ১৯৯১ সালে নরসিংহ রাও সরকারের অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন যে অর্থনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা করেছিলেন, তা দেশটির প্রবৃদ্ধিতে যুগান্তরকারী সাফল্য এনে দিয়েছিল।