কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার পরিকল্পনা আগেই জানত যুক্তরাষ্ট্র
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০১৯, ০৫:৪৬ এএম
ছবি: দ্য প্রিন্ট
সংবিধান থেকে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের ইচ্ছার কথা মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেওকে আগেই জানিয়েছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম প্রিন্ট এমন খবর দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে কেবল এই প্রথমবারই জানায়নি ভারত, ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় হামলার দুদিন পর ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনকে ফোন দিয়েছিলেন।
তখন কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার কথা বোল্টনকে বলেছিলেন দোভাল। সূত্র জানায়, তবে কাশ্মীরকে ভাগ করে ফেলার সিদ্ধান্ত আসে অনেক পরে।
সোমবার ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের ঘোষণা দেন। এসময় জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল-২০১৯ এর মাধ্যমে কাশ্মীরকে ইন্ডিয়ান ইউনিয়নের দুটি ভূখণ্ডে ভাগ করার সিদ্ধান্তের কথাও জানান তিনি।
এতে একটি পার্লামেন্টসহ জম্মু ও কাশ্মীর ইন্ডিয়ান ইউনিয়নের একটি ভূখণ্ড হবে। এছাড়া লাদাখ কোনো পার্লামেন্ট ছাড়াই ইউনিয়নের একটি ভূখণ্ড হয়ে যাবে।
পহেলা আগস্ট ব্যাংককে নবম পূর্ব এশীয় সম্মেলনের ফাঁকে পম্পেওর সঙ্গে বৈঠক করেন জয়শঙ্কর। ওই বৈঠকে পম্পেওকে তিনি বলেন, বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যস্থতা করতে হবে না।
সূত্র আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিষয়টি গেলে মোদি সরকার কোনো ঝুঁকি নিতে চায়নি। কাজেই এ উদ্যোগ সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসনকে অবহিত করতে প্রয়োজনীয় সব রক্ষাকবচ নেয়া হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, পি-৫ দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সোমবার এ বিষয়ে জানিয়েছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স ও রাশিয়া হচ্ছে এই পি-৫।
এছাড়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্যকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূতদের এ বিষয়ে জানানোর সময় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পার্লামেন্টের বিবেচনাধীন প্রস্তাবটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
প্রবীণ কূটনীতিক কে. সি. সিং বলেন, এ বিষয়ে কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। এতে বলা যায় যে, ভারত আগেভাগেই এ বিষয়ে সব হিসাব করে রেখেছে। পি-৫ এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য যুক্তরাষ্ট্র। কাজেই দেশটির কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ভারত যদি এ বিষয়টি এড়িয়ে যায়, তাহলে সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে। কিন্তু যদি পাশ না কাটায়, তবে ভারতের হতাশ হওয়া দরকার।