চরম আতঙ্কে কাশ্মীর ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০১৯, ১২:৫০ পিএম
ছবি: এনডিটিভি
সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশ দেয়ার পর থেকে কাশ্মীরজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার কেন্দ্র সরকারের এমন ঘোষণার পর কাশ্মীর ছাড়তে হাজার হাজার মানুষ বিমানবন্দর ও বাস টার্মিনালে ভিড় করছেন। খবর বিবিসি ও এনডিটিভির।
শনিবার কাশ্মীর রাজ্য প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের ওই ঘোষণার পর ২০ হাজার হিন্দু তীর্থযাত্রী এবং ভারতীয় পর্যটক ও দুই লাখ শ্রমিক কাশ্মীর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।
অমরনাথমুখী হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর জঙ্গি হামলা হতে পারে এমন গোয়েন্দা রিপোর্ট পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তীর্থযাত্রীদের কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার।
ভারতের সেনাবাহিনীর দাবি, কাশ্মীরের বিদ্রোহীদের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এম-২৪ স্নাইপার রাইফেলের একটি বড় ভাণ্ডার জব্দ করেছে তারা।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তীর্থযাত্রায় সম্ভাব্য ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এমন তথ্য পাওয়ার পরদিন এই অস্ত্রভাণ্ডার জব্দ করা হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য বাড়ানোর ঘোষণার পরই এ নির্দেশ দেয়া হল। বৃহস্পতিবারও কাশ্মীরে ২৫ হাজারের বেশী সেনা পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার। একই সঙ্গে, নিরাপত্তা বাহিনীর বাড়তি ২৮ হাজার সদস্যকে কাশ্মীরে পাঠানো হচ্ছে।
সরকারি নির্দেশের পরই জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে কাশ্মীরি জনগণ জানিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে কয়েক সপ্তাহ দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খাবারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীরও সংকট দেখা দিবে। যে কারণে সরকারি নির্দেশের পরই শ্রীনগরের রাস্তায় রাস্তায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী আগাম মজুত করতে ভিড় জমাচ্ছেন কাশ্মীরি জনগণ। খাবারের সঙ্গে কিনে রাখছেন জ্বালানিও। এটিএম বুথেও দেখা গেছে লম্বা লাইন।
কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতারা সন্দেহ প্রকাশ করছেন যে কাশ্মীরের বিশেষ স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখে ভারতীয় সংবিধানের যে ধারাগুলো, সেগুলোকে সংশোধন করার চেষ্টার অংশ হিসাবে ইচ্ছা করে এই পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে কাশ্মীরে যে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে, তা সামাল দিতেই বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হচ্ছে বলে সন্দেহ করছেন তারা।
কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতি সাংবাদিকদের বলেন, কাশ্মীরের মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক আমি দেখছি, তা আগে কখনও দেখি নি। কাশ্মীরের সাংবিধানিক সুরক্ষাকবচ ছিনিয়ে নিতেই কেন্দ্র এই নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে এমন ভীতিকর পরিস্থিতিতে কাশ্মীর ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য যুক্তরাজ্য ও জার্মানি নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক করেছে।