ইঞ্চমারনক দ্বীপ, ছবি: সংগৃহীত
কোনো জমি বা বাড়ি নয়; বিক্রি করা হবে আস্ত একটি দ্বীপ! আর সেই দ্বীপে রয়েছে কেবল একটি বাড়ি। সে হিসাবে বলা যায় দ্বীপটি কিনলে বাড়ি ফ্রি।
তবে রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা বলছেন, বাড়িটি কিনলে দ্বীপ ফ্রি। দ্বীপটি দেশটির ফির্থ অব ক্লাইডে সাউন্ড অব বুটের উত্তরে অবস্থিত।
এর নাম ইঞ্চমারনক। সমুদ্রের নীল জলরাশিতে ইঞ্চমারনক তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য বিলিয়ে যাচ্ছে। চারদিকে সবুজের সমারোহে ঠিক মাঝখানেই রয়েছে একটি পুরনো প্রাসাদের মতো দেখতে একটি বাড়ি।
আর রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা এই বাড়ির দাম ধরেছে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ কোটি টাকা। তবে এ টাকায় শুধু বাড়িটিই নয়, কেনা যাবে পুরো দ্বীপই।
ইঞ্চমারনক লম্বায় সাড়ে চার কিলোমিটার। সে হিসাবে এর তটরেখার দৈর্ঘ্য আট কিলোমিটার। এতে জমির পরিমাণ ৬৬০ একর।
এই জমিতে রয়েছে বিশালাকার একটি চার বেডরুমের বাড়ি। এ ছাড়া রয়েছে একটি খামার, নিজস্ব ফেরি ও ফেরিঘাট। এই ফেরি দিয়ে মূল ভূখণ্ড থেকে দ্বীপে যেতে সময় লাগে মাত্র ১০ মিনিট।
দ্বীপের ওই বাড়ি বিক্রির দায়িত্বে রয়েছে দুই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। কোম্পানি দুটির মুখপাত্র স্ট্রাট ও পার্কার জানিয়েছেন, বাড়িটি ও দ্বীপের পেছনের ইতিহাস।
তারা বলছেন, অষ্টাদশ শতাব্দীতে দ্বীপটি জলদস্যুদের জন্য আর্কষণীয় ছিল। সেই সময় অনেকবার তাদের হাতে আক্রান্ত হয় এই দ্বীপ। একসময় অপরাধ জগতের আস্তানা হয়ে ওঠে এই দ্বীপ। পরবর্তীকালে স্কটিশ কমান্ডো এবং ফ্রেঞ্চ কানাডিয়ানরা দ্বীপটিকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করেন।
তারা আরও জানান, স্কটিশ সন্ন্যাসী সেন্ট মারনক এই দ্বীপেই বসবাস করতেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। দ্বীপে এখনও সেলটিক ক্রসের বিভিন্ন ভাঙা পাথরের টুকরো রয়েছে, যা এখানে যে কটি গির্জা ছিল তার প্রমাণ দেয়। রয়েছে ব্রোঞ্জ যুগের কবর ও নানা যুদ্ধের চিহ্ন। ১৩ শতকে নরওয়ে ও স্কটল্যান্ডের মধ্যে হওয়া ‘লার্গ’ যুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের কবর দেয়া হয়েছিল এই দ্বীপে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে নেশাগ্রস্তদের সুস্থ করতে এই দ্বীপে পাঠিয়ে দেয়া হতো।
বাড়িটি প্রসঙ্গে তারা জানান, ১৯৮৬ সালে এই দ্বীপের শেষ বসবাসকারী বাড়িটি বিক্রি করে চলে যান। ১৯৯৯ সালে এক পরিবার এই দ্বীপটি কিনলেও তারা এই বাড়িটিকে ছুটি কাটানোর জন্যই ব্যবহার করতেন। কখনও স্থায়ীভাবে থাকতে চাননি তারা। এখন তারাও বাড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়ায় আলোচনায় উঠে এসেছে এই দ্বীপ।
তবে এতে তারা ভুল করছেন জানিয়ে পার্কার বলেন, এই দ্বীপ শুধু ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যে মোড়া নয়, দ্বীপে রয়েছে বিশালাকার একটি খামার ও চারণভূমি। যেখানে অনায়াসে গবাদিপশু পালন করে দুগ্ধজাতীয় পণ্যের ব্যবসা করা সম্ভব। এ ছাড়া সমুদ্রতটে বিভিন্ন ওয়াটার স্পোর্টস ও মাছ ধরার সুযোগ রয়েছে। আরও রয়েছে হেরিং সিগালদের বাসা।