মহাসাগরের গভীরে ডুব দিয়ে রেকর্ড, যা দেখে অবাক সাবেক নৌসেনা

প্রকাশ: ১৬ মে ২০১৯, ০৯:৩৫ এএম

প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা খাতের তলদেশে ডুব
প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা খাতের তলদেশে প্রায় ১০ হাজার ৯২৮ মিটার নিচে নেমে রেকর্ড গড়লেন মার্কিন নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ভিক্টর ভেসকোভো। এতদিন পর্যন্ত যেখানে মানুষের পা পড়েনি, সেখানে গিয়ে যা দেখলেন তাতে ওই কর্মকর্তার চোখ ছানাবড়া।
প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা খাতের এই গভীরতম বিন্দু ‘চ্যালেঞ্জার্স ডিপ’ বলেই পরিচিত। গত তিন সপ্তাহে অন্তত চার বার সাবমেরিনে চেপে সেখানে ডুব দিয়েছিন ভেসকোভো।
উদ্দেশ্য ছিল, সমুদ্র তলদেশের অজানা জীবনকে জানা আর পাথরের নমুনা সংগ্রহ করা। চার বারের চেষ্টায় তিনি পৌঁছে যান সমুদ্রের প্রায় ১০ হাজার ৯২৮ মিটার গভীরে। সেখানে চার ঘণ্টা কাটান ভেসকোভো।
কিন্তু তাকে অবাক করেছে পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর সমুদ্রখাতের গভীরতম বিন্দুতে জমে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য। যেখানে এতদিন পর্যন্ত মানুষ পৌঁছতে পারেনি, সেখানে স্তূপাকারে জমে রয়েছে রাশি রাশি আবর্জনা, প্লাস্টিক বর্জ্য!
ভিক্টর ভেসকোভো আন্তর্জাতিক গণমাধমে জানান, চার নম্বর বারে লম্বা পায়ের চিংড়ি জাতীয় এক ধরনের অদ্ভুত প্রাণী দেখেছেন তিনি। প্রায় স্বচ্ছ দেখতে সমুদ্র শসা জাতীয় প্রাণীও দেখেছেন। আরও বেশ কয়েকটি অদ্ভুত প্রাণী নজরে এসেছে তার। তবে বিষণ্ণ করেছে, এত গভীরতায় ভাঙা ধাতব খণ্ড আর প্লাস্টিকের টুকরোর উপস্থিতি।
তিনি মনে করেন, ‘এবার মারিয়ানা খাতে প্লাস্টিকের উপস্থিতি সচেতনতা বাড়াবে। মহাসমুদ্রগুলি যে ময়লা ফেলার জায়গা নয়, তা বুঝতে হবে। সমুদ্র বাঁচাতে আরও কড়া নীতি নিতে হবে।’
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে সাত সাগরের তলদেশে জমা জঞ্জালের পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টন। সমুদ্র দূষণের মাত্রা এতটাই বেশি যে গভীর সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানো তিমি জাতীয় প্রাণীর পেটেও মাইক্রো-প্লাস্টিক মিলছে।
উল্লেখ্য, ভেসকোভোর আগে মাত্র দুবার ‘চ্যালেঞ্জার্স ডিপ’র কাছাকাছি গভীরতায় নামার রেকর্ড রয়েছে। ১৯৬০ সালে প্রথম বার সাবমেরিন পৌঁছোয় ১০ হাজার ৯১২ মিটার গভীরে। সেবার সেই সাহস দেখিয়েছিলেন মার্কিন নৌবাহিনী। তার পর ২০১২ সালে কানাডার চিত্র পরিচালক জেমস ক্যামেরন ১০ হাজার ৯০৮ মিটার নেমে প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে যান।