সুইডেনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সেই মামলা পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে
প্রকাশ: ১৩ মে ২০১৯, ০৮:৪১ পিএম
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত
উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা ৪৭ বছর বয়সী জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে তদন্ত পুনরায় শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সুইডেন।
অ্যাসাঞ্জকে গত মাসে নানা অভিযোগে একুয়েডর দূতাবাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। জামিনের শর্ত ভঙ্গের জন্য তার ৫০ সপ্তাহের জেলও হয়েছে। সম্প্রতি অ্যাসাঞ্জকে লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে রাখা হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবীর অনুরোধে এ পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সরকারি কৌঁসুলি পর্ষদের উপ-পরিচালক এভা-মারি পারসন সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমি অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে হওয়া ধর্ষণ মামলা পুনরুজ্জীবিত করার ঘোষণা দিচ্ছি। অ্যাসাঞ্জ ধর্ষণ করেছেন এমনটা সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ এখনো আছে।
সুইডেনে মামলা পুনরুজ্জীবিত হওয়ার পর উইকিলিকসে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ষণ মামলা পুনরুজ্জীবিত হওয়ার কারণে তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার একটা সুযোগ পাবেন।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
যার মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল। যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।
কম্পিউটারে অনুপ্রবেশ করে গোপন তথ্য চুরি এবং তা অবৈধভাবে প্রকাশ করার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালতে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। সেখানে দোষীসাব্যস্ত হলে তার সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
এদিকে সুইডেনেও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অ্যাসাঞ্জকে কোন দেশে হস্তান্তর করা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
মামলার পুনঃতদন্ত শুরুর জন্য সুইডেনের ওপর সব সময়ই রাজনৈতিক চাপ আছে।
মামলা পুনরুজ্জীবিত হওয়ার অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে এখন ইউরোপীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে বলে জানান সুইডিশ কৌঁসুলি পর্ষদের উপ-পরিচালক এভা-মারি পারসন। তারপর যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে কার বহিঃসমর্পণ আবেদন গ্রহণ করা হবে; যুক্তরাষ্ট্র না সুইডেন।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০১২ সালে লন্ডনের একুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার পর প্রায় ৭ বছর তিনি সুইডেনে হস্তান্তর এড়িয়েছেন।
মামলা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না মনে করে দুই বছর আগে সুইডেন অ্যাসেঞ্জের ধর্ষণ মামলা খারিজ করেছিল। তখন সুইডেনের আদালত থেকে কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, অ্যাসাঞ্জ একুয়েডরের দূতাবাসের আশ্রয়ে আছেন এবং সেখান থেকে বের হচ্ছেন না।
গত মাসে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে অ্যাসাঞ্জ গ্রেফতার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে পুরনো ধর্ষণ মামলা পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করা হয়।
২০১০ সালে অ্যাসেঞ্জের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছিল। মামলাটি খারিজ হওয়ার পর তদন্ত কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। তবে সে সময় কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে মামলা আবার শুরু হতে পারে।