মোদির ইশতেহারে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের খুশি রাখার প্রতিশ্রুতি
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৩৮ পিএম
ছবি: এএফপি
ভারতের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) দেয়া ইশতেহারে ‘উগ্র হিন্দুত্ববাদ’কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেয়া ইশতেহারের বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দেখে বোঝা কঠিন নয় যে, তিনি উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের খুশি রাখার চেষ্টা করেছেন।
নির্বাচনী ইশতেহারে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের বিশেষ মর্যাদা তুলে দেয়ার প্রতিশ্রুতির দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের প্রশংসা কুড়াতে চেয়েছেন মোদি।
এর আগে দেয়া নির্বাচনের অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতিগুলো রাখতে না পারায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তায় মারাত্মক ধস নেমেছে। মাঝখানে পাকিস্তান ও মুসলিমবিদ্বেষী ধোয়া তুলে দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে তিনি নিজের আকর্ষণ ধরে রাখতে চেষ্টা করেছেন।-খবর টেলিগ্রাফের
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে আগামী বৃহস্পতিবার প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যার ফল ঘোষণা করা হবে আগামী ২৩ মে। এতে নরেন্দ্র মোদির সামান্য ব্যবধানে জয়ের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় এক কাশ্মীরি তরুণের আত্মঘাতী হামলায় ভারতের একটি আধাসামরিক বাহিনীর ৪০ জওয়ান নিহত হওয়ার পর থেকে উত্তেজনা বেড়েই চলছে। মাঝে ভারতের সঙ্গে একপশলা আকাশযুদ্ধের ঘটনা ঘটে গেছে।
নয়াদিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান কার্যালয়ের সামনে বুধবার পার্টির ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ১৯৫৪ সাল থেকে সংরক্ষিত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
বিজেপির সমর্থকরা বহুদিন ধরে এমন একটি দাবিই করে আসছিলেন। তাদের মতে, এই স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদার কারণে অখণ্ড কাশ্মীরকে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করতে পারছে এবং নয়াদিল্লি থেকে কোনো কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখতে পারছে না।
রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া সম্পদের মালিকানা কিংবা চাকরি পাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি আইন পাল্টে দেয়ারও অঙ্গীকার করেছেন মোদি। মূলত কাশ্মীরিদের ওপর খড়গ চাপাতেই এমন উদ্যোগের কথা বলেছেন তিনি।
কিন্তু হিন্দুত্ববাদী মোদির এসব প্রতিশ্রুতি নতুন করে অস্থিতিশীলতা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
জুম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, যদি এমনটি ঘটে, তবে কেবল কাশ্মীরই নয়, ভারতসহ অঞ্চলটি অগ্নিদাহ শুরু হয়ে যাবে।
আর ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লাহ বলেছেন, যদি কাশ্মীরিদের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেয়া সংবিধানের ধারাটি বাতিল করা হয়, তবে ভারত থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন।