জইশ-ই-মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহার। ছবি: সংগৃহীত
জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের নাম কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব চীন আটকে দেয়ার খবর ভারতীয় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় গণমাধ্যমের শীর্ষ খবর ছিল মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে জাতিংসঘের নিষেধাজ্ঞায় চীনা বাধা।
ভারতের বহুল প্রচারিত দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রধান খবরের শিরোনাম ছিল, চীনের মহাপ্রাচীর পেলেন জইশ প্রধান।
এ ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একহাত নিলেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
চীনের প্রেসিডেন্ট শিং জিনপিংয়ের কথা উল্লেখ করে এক টুইটার পোস্টে তিনি বলেন, শিকে ভয় পেয়েছেন অক্ষম মোদি। ভারতের বিরুদ্ধে যখন চীন ভূমিকা রেখেছে, তখন তার মুখ থেকে একটি কথাও বের হয়নি।
আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীন-ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ভূখণ্ডগত কোন্দল চলছে। তবে মোদি ও শি তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন।
এদিকে জইশ নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় চীন ভেটো দেয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছে প্রতিবেশী ভারত।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়্ন্ত্রীত কাশ্মীরে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় একটি আধাসামরিক বাহিনীর ৪৪ জওয়ান নিহত হওযার দায় স্বীকার করেছে জইশ। এর পর থেকে পরমাণুশক্তিধর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
এক বিবৃতিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনা ভেটোতে তারা হতাশ।
ভারত জানায়, আমাদের নাগরিকদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী নেতাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে সব উপায়ে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে।
মাসুদ আজহারের ওপর অস্ত্র, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং তার সম্পদ জব্দ করতে নিরাপত্তা পরিষদের ইসলামিক স্টেট ও আল কায়েদা নিষেধাজ্ঞা কমিটিকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। ঐকমত্যের ভিত্তিতে ১৫ সদস্যের ওই কমিটি পরিচালিত হয়।
কিন্তু তিন পরাশক্তির প্রস্তাবে বাধা দিয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশ চীন। মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবে সমর্থনে দেশটি কোনো কারণ খুঁজে পায়নি বলে জানিয়েছে।
২০১৬ ও ২০১৭ সালেও এই জইশ নেতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চাইলে তাতে বাধা দিয়েছিল চীন।
বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাং বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সহায়তা সংস্থাগুলোর নীতি ও প্রক্রিয়া অনুসারে আলোচনা চালাতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক কর্মকর্তা বলেন, আজহারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় চীন যদি অব্যাহতভাবে ভেটো দিয়ে যায়, তবে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যরা ভিন্ন পদক্ষেপের দিকে এগোবে।
ওই কূটনীতিক বলেন, জইশকে আল কায়েদাসংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ। কাজেই মাসুদ আজহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া অপরিহার্য।
জইশ-ই-মোহাম্মদ প্রথমে ভারতবিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হলেও পরে আল কায়েদার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ২০০১ সালে এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে জাতিসংঘ।