ছবি: সংগৃহীত
অবসর সময় পার করতে আলুর চিপসের তুলনা নেই। যে কারণে আলুর চিপস সহজলভ্য। পার্কে, ফুটপাতের পাশের দোকানে, লঞ্চ-স্টিমার, বাসে কোথায় নেই এই প্যাকেটবন্দি আলুর চিপস।
অত্যান্ত সহজলভ্য এবং দামেও কম এমন উপাদেয় পণ্যের কয়েক টুকরোর দাম যদি বলা হয় কয়েক হাজার টাকা তাহলে বোকা বনে যাওয়ার কথা।
সম্প্রতি এমনটাই ঘটেছে ইউরোপের দেশ সুইডেনে। পুরো প্যাকেট নয় মাত্র পাঁচ টুকরো আলুর চিপসের দাম ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকারও কিছু বেশি।
অবিশ্বাস্য হলেও এমনই মহামূল্য আলুর চিপস তৈরি করেছে সুইডেনের একটি সংস্থা।
এতো দাম ধরা হলেও চিপসের কাটতি দেখে অবাক হয়েছেন সংস্থাটি।
তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৩ বছর আগে একটি বাক্সে ৫টি করে চিপস ভরে সুজ্জিত করে বিক্রি করেন তারা। তখন চিপসসহ বাক্সটির মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৯ মার্কিন ডলার (টাকায় প্রায় ৫ হাজার)।
এক সপ্তাহের মধ্যেই ১০০টি বাক্স বিক্রি হয়ে যায় বলে জানান তারা।
ক্রেতাদের সেই চাহিদা দেখে আবারও তারা এমন চিপস তৈরি করেছেন। বর্তমানে এর দাম ধরা হয়েছে ৬২ মার্কিন ডলার।
মাত্র ৫ টুকরো চিপসের দাম এতো কেন? সেই প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির এক মুখপাত্র জানান, চিপসগুলো হাতে তৈরি। আর যেসব উপাদানে এসব চিপস তৈরি সেগুলো বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাওয়া যায়।
উপদানগুলোর যোগান কম থাকায় এই চিপসের এত দাম ধরা হয়েছে।
যেই বিশেষধরনের পাঁচ উপাদানে তৈরি এসব চিপ
উত্তর সুইডেনের আমারনাস-এর অত্যন্ত দুর্গম পার্বত্য এলাকা থেকে চিপসের প্রধান উপকরণ আলু আনা হয়।
সংস্থাটির ওই মুখপাত্র জানান, নয় বছরে একবার ‘ব্লু হার্ভেস্ট মুন’-এর সময়ে ওই এলাকায় এই আলুর ফলন হয়।
চিপসে রয়েছে মাটসুটেক মাশরুম। জানা গেছে, উত্তর সুইডেনের ঘন জঙ্গল থেকে এই মাটসুটেক মাশরুম সংগ্রহ করা হয়। এটি সংগ্রহে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। এক বিশেষ ধরনের দস্তানা পরে এই মাশরুম তুলতে হয়, অন্যথায় তা খাবারের উপযোগী থাকে না।
এই চিপস তৈরিতে আরও একটি প্রয়োজনীয় উপাদানের নাম ক্রাউন ডিল গাছ। এসব গাছ অস্ট্রেলিয়ার বারে দ্বীপপুঞ্জ থেকে আনা হয়।
ট্রাফল সিউইড নামের এক ধরনের ছত্রাক ব্যবহার করা হয় এই চিপসে। এ ছত্রাক আনা হয় নাফারাও দ্বীপ থেকে।
এছাড়াও এই চিপস তৈরিতে প্রয়োজনীয় লেকস্যান্ড পেঁয়াজ আর পেল অ্যালে ওর্ট সুইডেনে চাহিদা অনুযায়ী কম পরিমাণে পাওয়া যায়। এসব উপাদানের দামও আকাশচুম্বী।
সব মিলিয়ে বিভিন্ন দূর-দুরান্তের এসব উপাদান সংগ্রহে অনেক অর্থ খরচ করতে হয় সুইডেনের ওই সংস্থাকে।
যে কারণে এক টুকরো চিপস তৈরিতে হাজার টাকা পড়ে যায় তাদের।