আল-জাজিরার বিশ্লেষণ
সৌদি-ইরানের রশি টানাটানি কসরতের মাঝখানে চীন
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৩:৫৪ এএম
বেইজিংয়ে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত
সৌদি যুবরাজ পাক-ভারত সফর শেষে বর্তমানে চীনে রয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ দুটিতে সফরের সময়ে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আত্মঘাতী বোমা হামলার উত্তেজনাকে এড়িয়ে গেছেন।
বরং তিনি যে পরিবর্তনের জন্য কাজ করছেন, তাতে ব্যবসা নিয়ে কথা বলাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
বেইজিং নিজের কাজের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার দেশটি সৌদির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফকে স্বাগত জানিয়েছে।
একই সময়ে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে চীনের বেল্ড অ্যান্ড রোড ইনেশিয়েটিভের গওধার বন্দর নির্মাণের কাজও চলছে।
গওধারে পরিশোধনাগার ও পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স স্থাপনে এক হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি যুবরাজ। যেটি চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের প্রাণকেন্দ্রে স্থাপন করা হবে।
বন্দরের সঙ্গে সড়ক, রেল ও অন্যান্য অবকাঠামো সংযোগ স্থাপনে এ অর্থনেতিক করিডর নির্মাণ করা হচ্ছে। বেইজিং ও ইসলামাবাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনেশিয়েটিভ কর্মসূচিতে গওধার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক এস রাজারত্নাম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ ফেলো জেইমস ডোরসি বলেন, মালাক্কা প্রণালির পথে হওয়ায় চীনের কাছে বন্দরটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে অন্যদের নিয়ে চীনারা এতটা উৎসাহী নন। সম্ভবত অন্যদের সেখানে ভিন্ন এজেন্ডা থাকতে পারে।
ডরসি বলেন, বেলুচিস্তানকে বিনিয়োগের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করতে পারে রিয়াদ। কিংবা এমনও হতে পারে ইরানে অস্থিতিশীলতা তৈরিতে প্রদেশটিকে বেশি উপযুক্ত বিবেচনা করছে সৌদি।
কিন্তু ইরানের কাছ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান খুবই স্পর্শকাতর একটি প্রদেশ। চলতি মাসে ইরানের সীমান্ত প্রদেশ সিস্তান-বেলুচিস্তানে সুন্নি বিদ্রোহীদের হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ২৭ সেনা নিহত হয়েছেন।
কাজেই সৌদি আরব এখানে যুক্ত হোক এটি চীন কতটুকু চাচ্ছে, তা এখন পর্যন্ত পরিষ্কার হওয়া সম্ভব হয়নি।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেন, পাকিস্তানে সৌদি আরবের বিনিয়োগে চীন কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট। অর্থনৈতিক করিডরে তৃতীয় একটি পক্ষের অন্তর্ভুক্তিতে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন।
চীন সম্পর্কে ডরসি বলেন, সৌদি আরব ও ইরানের দড়ি টানাটানির কসরতের মধ্য দিয়ে হাঁটছে চীন। কিন্তু কতদিন তারা এ কৌশল ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে।
ইউরেশিয়া গ্রুপের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিশেষজ্ঞ আয়হাম কামেল বলেন, পূর্ব ও পশ্চিমে তেহরানের অংশীদারত্ব কাটছাঁটে রিয়াদের চেষ্টায় ইরান কিছুটা বিরক্ত। কিন্তু আঞ্চলিক বৈরিতা ছাড়াও সামনে আনার মতো আরও অনেক কিছু সৌদি আরবের কাছে রয়েছে।