রয়টার্সের বিশ্লেষণ: ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সামরিক শক্তি কত

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৫৬ এএম

ছবি: সংগৃহীত
আত্মঘাতী হামলায় বুধবার ইরানের অভিজাত ইসলামী বিপ্লবী গার্ডসের ২৭ সেনা নিহত হয়েছেন।
ইসলামী বিপ্লবী গার্ডস বাহিনী সবসময় দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে জবাবদিহি করতে দায়বদ্ধ।
এ বাহিনীতে সেনা, নৌ ও বিমান মিলিয়ে সোয়া লাখ সদস্য রয়েছেন। তারা মূলত ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে শিয়া ধর্মীয় নেতার শাসনের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছেন।
নিজ দেশের সীমানার বাইরেও সক্রিয় ইরানের এ অভিজাত বাহিনীটি। ইরাক ও সিরিয়ায় তারা তেহরানের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করে। ইরানেও এ বাহিনীর কোটি কোটি ডলারের বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য রয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেন, ইরানের জনগণের আত্মত্যাগী সামরিক ও গোয়েন্দারা এ প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ নেবেন।
ইরানের সামরিক বাহিনীর এই ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জ্যেষ্ঠ নেতা আলী ফাদাভি দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
তিনি বলেন, ইসলামিক বিপ্লবের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা কেবল নিজ সীমানার মধ্যে আটকে থাকবে না। আগের মতোই শত্রুরা বিপ্লবী গার্ডবাহিনীর কাছ থেকে কঠোর জবাব পাবেন।
এর আগে তেহরান ও আহভাজে দুটি হামলার দায় স্বীকার করার পর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডস।
এছাড়া ২০১৮ সালে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে ইরানের কুর্দিস সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান।
বুধবারের হামলা এমন একটি মাসে ঘটেছে, যখন ইরান ইসলামি বিপ্লবের বর্ষপূর্তি পালন করছে। ইরানে ১৯৭৯ সালে মার্কিন সমর্থিত শাহ শাসককে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সামরিক সক্ষমতার লাগাম টেনে ধরতে চাইলেও নিজের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েই যাচ্ছে ইরান।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ এ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন। এদিকে তেহরানকে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করতে ওয়ারশোতে সম্মেলনের আয়োজন করেছে ওয়াশিংটন।
জাভেদ জারিফ বলেন, যখন ওয়ারশো সার্কাস শুরু হতে যাচ্ছে, তখন এ হামলার ঘটনা কী যুগপৎ না?
আরব প্রতিবেশীদের তুলনায় অভ্যন্তরীণভাবে ইরান অনেকটা স্থিতিশীল পরিস্থিতি উপভোগ করছে। ২০১১ সালের আরব বসন্তে বিভিন্ন আরব দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অভ্যুত্থান ঘটেছে।
কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ইরানের অর্থনীতি পর্যুদস্ত হয়ে পড়ায় সেখানে কখনো কখনো প্রতিবাদ হতে দেখা গেছে। এসব বিক্ষোভ থেকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার পদত্যাগ চাওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাবে গত বসন্তে একটি সামরিক প্যারেডে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ১২জনই ছিলেন বিপ্লবী গার্ডসের সদস্য।
ইসলামিক স্টেট ও আরব বিচ্ছিন্নতাবাদীরা সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিল।
সুন্নি গোষ্ঠী জুনদুল্লাহর সদস্যরা যোগ দেয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠী জইশ আল আদল শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ২০১০ সালে জুনদুল্লাহর নেতাকে একটি বিমান থেকে আটক করা হয়। তার বিচার চলছে।