সাবারিমালা মন্দিরে প্রবেশ করছে দুই নারী। ছবি: সংগৃহীত
প্রথমবারের মতো ভারতের কেরালা রাজ্যের সাবারিমালা মন্দিরে প্রবেশ প্রাচীন প্রথা ভঙ্গ করে ৪০ বছর বয়সী ২ নারী প্রবেশ করেছেন।
বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে পুলিশ পাহারায় তারা মন্দিরে ঢুকে প্রার্থনা করেন। এ সময় মন্দির রক্ষা কমিটির সদস্যরা না থাকায় তারা দ্রুত প্রার্থনা সেরে ফিরে আসতে পেরেছেন।
এর আগে ৫০ বছরের নিচে কোনো নারী মন্দিরটিতে প্রবেশ করতে পারেননি। এ ঘটনার জেরে মন্দিরকে পবিত্র করার জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর তা আবারও খুলে দেয়া হয়।
এর আগের দিন মন্দিরে প্রবেশের সমান সুযোগ নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করেন ৩০ লাখের বেশি নারী।
মঙ্গলবার ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন থেকে সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতেরও দাবি জানান তারা। কেরালার জাতীয় মহাসড়কজুড়ে ৩০ লাখের বেশি নারীর এ মানববন্ধন দৃষ্টি কেড়েছে সবার। সমঅধিকারের দাবিতে কেরালার বামপন্থি জোট সরকারের উদ্যোগ এ মানব প্রাচীর গড়ে তোলা হয়।
আন্দোলনকারীরা বলেন, সৃষ্টিকর্তা সব জায়গায় আছেন, তারপরও একটি নির্দিষ্ট স্থানে তার প্রার্থনার জন্য যেতে না পারাটা অপমানজনক। তারা বলেন, সব নারীকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেছি, যেন সবাই নিজের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হন। আন্দোলনকারীরা আরো বলেন, আমরা পিছু হটবো না, এগিয়ে যাবো। আমরা নারীর সম অধিকার এবং নারীর প্রতি ন্যায় বিচার চাই।
কেরালার সবচেয়ে উত্তরের শহর কাসরাগড থেকে সবচেয়ে দক্ষিণের শহর থিরুভানথাপুরাম পর্যন্ত এ মানববন্ধন বিস্তৃত ছিল। কেরালার সাবারিমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার চেয়ে ৬২০ কিলোমিটার মানববন্ধনে সমঅধিকারের দাবিতে সোচ্চার হন আন্দোলনকারীরা।
সাবরিমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন সব মন্দিরের নিজস্ব কিছু রীতি থাকে। বার্ত সংস্থা এ.এন.আই কে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে মন্তব্য করেন মোদি।
জানাগেছে, ঐতিহ্যগতভাবে ১০ থেকে ৫০ বছরের নারীরা ওই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে না। প্রবেশাধিকার চেয়ে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সেপ্টেম্বরে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সবার জন্য প্রবেশাধিকারের নিশ্চিতের নির্দেশ দেন।
তারপরই নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধে বিক্ষোভে নামে উগ্রবাদী হিন্দুরা। বিক্ষোভের জেরে বন্ধ করে দেয়া হয় সাবারিমালা মন্দির, আটক হয় প্রায় ২ হাজার বিক্ষোভকারী। প্রায় এক মাস বন্ধ রাখার পর অক্টোবরে মন্দিরটি খুলে দেয়া হলেও তাতে প্রবেশাধিকার পায়নি নারীরা।