অনুপস্থিতির জরিমানা কমানোর দাবি
বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ মে ২০১৯, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

অনুপস্থিতির জরিমানা কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাশ ও পরীক্ষা বর্জন করে স্মারকলিপি দিয়েছেন। রোববার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে যদি কোনো শিক্ষার্থী ৮০ শতাংশের নিচে ক্লাসে উপস্থিত থাকে তবে ওই শিক্ষার্থীকে জরিমানা দিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী শ্রেণীকক্ষে ৭০-৭৯ শতাংশ উপস্থিতি হলে ২ হাজার টাকা, ৬০-৬৯ শতাংশ উপস্থিতি হলে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এ ব্যাপারে তারা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে শিক্ষকরা কোনো কথা বলেননি।
এছাড়া পাবলিক এ বিশ্ববিদ্যালয়টি স্বায়ত্তশাসিত হলেও কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিধান আরোপ করে যাচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও এখন পর্যন্ত কোর্স ক্রেডিট সিস্টেমে বছরে তিনটি টার্ম শেষ করতে হয়। প্রতি টার্ম শুরুর ১৭ দিনের মাথায় ১ম মিড, ১ম মিড শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় ২য় মিড, আবার ২য় মিড শেষ হওয়ার ২৭ দিনের মাথায় ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এ মিডের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস, ল্যাব ক্লাস, কুইজ পরীক্ষা যথারীতি চলতে থাকে। পাশাপাশি ৮০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয় না।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ৪ বছরে ২৪০ ক্রেডিট পড়ার কথা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চিন্তাই করতে পারেন না। সেখানে øাতক পর্যায়ে চারটি অনুষদের মধ্যে কৃষি ও কৃষি অর্থনীতি অনুষদে ৪ বছরে ২৪০, ফিশারিজ অনুষদ ২৩০ এবং ভেটেরিনারি অনুষদ ৫ বছরে ২৮৩ ক্রেডিট পড়ানো হয়। তাদের অভিযোগ, বছরে তিনটি টার্মের (প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মত) শুরুতে প্রতি স্টুডেন্টের কাছে ফি বাবদ প্রায় ১২ হাজার টাকা নেয় প্রশাসন। স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন ৮০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিতি ধরে যে জরিমানা ধরা হয়েছে সেটা বাতিল করতে হবে এবং পরীক্ষা দেয়ার সর্বনিু উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশ করতে হবে।
অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিল রেখে এনরোলমেন্ট ফি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে। মিড পরীক্ষাগুলোর মধ্যে একটি বাদ দিতে হবে এবং পরীক্ষার পর কোনো ক্লাস-ল্যাব দেয়া যাবে না। আন্দোলন শেষে শিক্ষার্থীরা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিচালক ছাত্র কল্যাণের কাছে দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি ট্রেজারার অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ জানান, সম্পূর্ণ আবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখী করতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব থেকে এটি করা হয়নি।