হোটেলে একসঙ্গে থাকলেও হতে পারে ধর্ষণ মামলা: ভারতের হাইকোর্ট
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ পিএম
হোটেলে এক সঙ্গে দুজন নারী ও পুরুষ থাকা মানেই শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দেওয়া নয়। ফলে হোটেলে একসঙ্গে থাকলেও ধর্ষণের অভিযোগ আমলযোগ্য হবে। একটি ধর্ষণ মামলার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণই দিয়েছেন ভারতের বম্বে হাইকোর্ট।
সম্প্রতি ওই ধর্ষণ মামলায় নিম্ন আদালত রায় দিয়েছিলেন, যেহেতু ওই তরুণী অভিযুক্তের সঙ্গে স্বেচ্ছায় হোটেলে যেতে সম্মত হয়েছিলেন, ফলে ধর্ষণের অভিযোগ খাটে না। বম্বে হাইকোর্ট সেই রায় খারিজ করে দিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চে এক ব্যক্তি এক তরুণীকে বিদেশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তাকে একটি হোটেলে ডাকেন। দুজনের নামেই হোটেলের একটি কক্ষ বুক করা হয়েছিল। পরে ওই তরুণীর অভিযোগ, হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছেন অভিযুক্ত।
এই মামলা নিম্ন আদালতে উঠলে ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করে দেন বিচারক। বিচারক যুক্তি দেন, যেহেতু ওই তরুণী স্বেচ্ছায় অভিযুক্তের সঙ্গে হোটেলে গিয়েছিলেন, ফলে শারীরিক সম্পর্কে তার সম্মতি ছিল। পরে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বম্বে হাই কোর্টের গোয়া বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তরুণী।
মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, নিম্ন আদালতের এই রায় ত্রুটিপূর্ণ। বিচারপতি বলেন, অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী একসঙ্গে হোটেল বুক করেছেন, এর সপক্ষে প্রমাণও রয়েছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, ভুক্তভোগী শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দিয়েছেন। দুজনের একসঙ্গে হোটেলে যাওয়া ও হোটেলের ভেতরে যা ঘটেছে—দুটিকে গুলিয়ে ফেলেছেন নিম্ন আদালত। ঘটনার পর যেভাবে কাঁদতে কাঁদতে ওই তরুণী হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন এবং সেদিনই পুলিশের দ্বারস্থ হন তাতে স্পষ্ট যে, শারীরিক সম্পর্কে তরুণীর সম্মতি ছিল না। পুলিশকে ওই তরুণী যে জবানবন্দি দিয়েছেন সেই একই তথ্য ধরা পড়ে এক হোটেল কর্মীর বয়ানেও।
তবে এ ঘটনায় হাইকোর্টে অভিযুক্তের যুক্তি দেওয়া হয়, ওই তরুণী তার সঙ্গে মিলেই হোটেল বুক করেছিলেন। তার একসঙ্গে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। বিনা প্রতিবাদে তিনি তার সঙ্গে হোটেলে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন।
হাইকোর্ট এই যুক্তি গ্রহণ করেননি। নিম্ন আদালতকে এই মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।