ভারতের দক্ষ কর্মীরা যাতে জার্মানির শ্রমখাতে যুক্ত হতে পারে, সেজন্য আরও বেশিসংখ্যক ভিসা ইস্যু করতে সম্মত হয়েছে বার্লিন। দুই বছর আগে অভিবাসন ইস্যুতে একটি চুক্তি সই করেছিল জার্মানি ও ভারত। ওই চুক্তির আলোকে পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের জার্মানি আসার পথ সুগম করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি, ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি সফর করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
ভারতীয় আবেদনকারীদের ভিসা প্রাপ্তি সহজ করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানোর কথাও জানিয়েছে বার্লিন। এছাড়া, ভারতীয় ডিগ্রিকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়াটিকেও সহজ করা হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় এই ঘোষণাটি আসে।
ভারতীয় দক্ষ কর্মীদের প্রতিবছর ৯০ হাজার ভিসা দেবে জার্মানি। আগে এই সংখ্যাটি ছিল মাত্র ২০ হাজার।
শলৎস বলেন, ‘বার্তাটি হলো, জার্মানি দক্ষ কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত।’
দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করতে জার্মানির উদ্যোগ নিয়েও কথা বলেন শলৎস। বর্তমানে জার্মানিতে আড়াই লাখ ভারতীয় বসবাস করছে বলেও জানান দেশটির চ্যান্সেলর।
তিনি বলেন, ওষুধ শিল্প, পরিচর্যা বা তথ্যপ্রযুক্তির মতো যেসব খাতে আমাদের কর্মী ঘাটতি রয়েছে, সেখানেই ভারতীয় কর্মীরা কাজ করছেন।
জার্মানির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করেন তিনি।
মোদি বলেন, ‘যখন ভারতের গতিশীলতা এবং জার্মানির নিয়ম-নিষ্ঠা এক হবে, যখন জার্মানির প্রকৌশল এবং ভারতের উদ্ভাবন যুক্ত হবে... তখন ইন্দো-প্যাসিফিক এবং সারা বিশ্বের জন্য একটি সুন্দর আগামী নিশ্চিত হবে।’
জার্মানির জোট সরকারের নতুন উদ্যোগ ‘অপরচুনিটি কার্ড’-এর সুযোগ নিয়ে এ বছরের জুন থেকে অন্তত আড়াই হাজার অভিবাসী দেশটিতে এসেছেন৷ ২৪ অক্টোবর সরকারি এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করতে নতুন এই প্রকল্পটি চালু করেছে জার্মান সরকার। অপরচুনিটি কার্ড নামে এই প্রকল্পের আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের নাগরিকেরা পয়েন্ট অর্জনের মাধ্যমে জার্মানিতে আসার সুযোগ পাবেন।
১ জুন থেকে কার্যকর হওয়া এই প্রকল্প দক্ষ বিদেশি কর্মীদেরকে চাকরির কোনো চুক্তিপত্র ছাড়াই জার্মানিতে আসার সুযোগ করে দেবে। জার্মানিতে এসে এক বছর থাকার অনুমতি পাবেন তারা। এই সময়টিতে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি খোঁজার সুযোগ পাবেন তারা।
মূলত জার্মান শ্রমবাজারে ক্রমবর্ধমান কর্মী সংকট মোকাবিলায় নতুন এই উদ্যোগটি নিয়েছে সরকার। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে বিদেশিদের জার্মান শ্রমবাজারে ঢোকা সহজ হবে।
এ বছরের জুনে কার্যকর হওয়ার পর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতি মাসে অন্তত ৫৫০টি সফল আবেদন নথিভুক্ত করেছে।
নতুন এই প্রকল্পের অধীনে ভারতের নাগরিকেরা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভিসা পেয়েছেন। দেশটির ৭৮০ জন নাগরিক এই ভিসা নিয়ে জার্মানি এসেছেন। এরপরেই রয়েছে চীন, তুরস্ক এবং পাকিস্তানের নাম।