অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ইউএপিএ আইনের অধীনে আটক মুসলিম, আদিবাসী এবং দলিত জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হায়দ্রাবাদের সাংসদ, মোদী সরকার এই লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল থেকে কিছু শিখবেন বলে আশা করেছিলেন, কিন্তু তার সেই আশা ভেস্তে গেছে।
শনিবার ওয়াইসি ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে বলেন, ‘আজ ইউএপিএ আইন আবার সংবাদের শিরোনামে। এটি একটি অত্যন্ত নির্মম আইন যার কারণে হাজার হাজার মুসলিম, দলিত এবং আদিবাসী যুবক কারাগারে বন্দি হয়েছেন এবং তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।’
এআইএমআইএম প্রধান আরও দাবি করেন, এ কঠোর আইনটি ৮৫ বছর বয়সী স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর কারণ। ২০১৮ সালের ভীমা-কোরেগাঁও হিংসা মামলায় ইউএপিএ-এর অধীনে আটক হওয়া আদিবাসী কর্মী স্বামী ২০২১ সালে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে মারা যান।
ওয়াইসি লোকসভায় ২০১৯ সালের বেআইনি কার্যক্রম (প্রতিরোধ) সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করেছিলেন এবং ইউএপিএ আইন প্রণয়নের জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ এবং ২০১২ সালে কংগ্রেস সরকার এ আইনটিকে আরও কঠোর করেছিল, তখনও আমি এর বিরোধিতা করেছিলাম। ২০১৯ সালে, বিজেপি যখন আরও কঠোর বিধান ও ছাড় নিয়ে এসেছিল, তখন কংগ্রেস বিজেপিকে সমর্থন করেছিল। তখনও আমি এ আইনের বিরোধিতা করেছিলাম।’
ওয়াইসি আরও বলেন, ‘আমরা মোদি ৩.০ থেকে আশা করেছিলাম যে তিনি নির্বাচনের ফলাফল থেকে কিছু শিখবেন, কিন্তু আমাদের আশা ভেস্তে গেছে। এ অত্যাচার ও বাড়াবাড়ি চলতেই থাকবে।’
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা বুকার বিজয়ী লেখক অরুন্ধতী রায় এবং কাশ্মীর সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক আইনের সাবেক অধ্যাপক শেখ শওকত হুসেনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে একটি জনসমাবেশে উস্কানিমূলক বক্তব্যের মামলায় মামলা করার অনুমোদন দিয়েছেন।
লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সচিবালয়ের আধিকারিক জানান, ২৮ নভেম্বর, ২০১০ তারিখে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে মামলাটি করা হয়েছিল। এতে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ধর্ম, বর্ণ, জন্মস্থান, বাসস্থান এবং ভাষার ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ঘৃণার প্রচার, জাতীয় সংহতির জন্য ক্ষতিকর অভিযোগ এবং দাবি অন্তর্ভুক্ত ছিল।
অভিযোগ করা হয়, ২১ অক্টোবর, ২০১০ তারিখে এলটিজি অডিটোরিয়াম, কপারনিকাস মার্গ, নয়াদিল্লিতে ‘আজাদি - দ্য ওনলি ওয়ে’ ব্যানারে আয়োজিত একটি সম্মেলনে রায় এবং হুসেন উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। সম্মেলনে আলোচিত বিষয়গুলি কাশ্মীরকে ভারতের থেকে পৃথক করার পক্ষে প্রচার চালিয়েছিল বলে অভিযোগ।
এদিকে, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল উভয় জোটের জন্য একটি ধাক্কা হয়ে এসেছে কারণ বিজেপি এবার ২৭২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার চিহ্ন অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিজেপি ২৪০টি আসন জিতেছে, যা ২০১৯ সালের ৩০৩ আসনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। কংগ্রেস ৯৯টি আসন জিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) ২৯৩টি আসন পেয়েছে, অন্যদিকে ইন্ডিয়া ব্লক ২৩০-এর ওপরে আসন পেয়ে মোদী শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতার মুখে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।