ট্রাম্পের পুতিনপ্রীতি আরও প্রকাশ্যে
জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত বৈঠকের পর পুতিন ইস্যুতে ট্রাম্পের নতুন বার্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার রাশিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সমালোচনার জবাবে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে কম চিন্তা করা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইস্যুগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া।
রোববার রাতে নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের উচিত পুতিন নিয়ে কম সময় ব্যয় করা এবং অভিবাসী ধর্ষক গ্যাং, মাদক সম্রাট, খুনিরা ও মানসিক রোগীরা আমাদের দেশে প্রবেশ করছে কিনা তা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন হওয়া—যাতে আমরা ইউরোপের মতো পরিণতি ভোগ না করি!’
জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত বৈঠক, ইউরোপে উদ্বেগ
ট্রাম্পের ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়া-নীতি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির এই নাটকীয় পরিবর্তন গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে প্রকাশ্যে আসে, যখন তিনি সাংবাদিকদের সামনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন।
ওভাল অফিসের ওই বৈঠকে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘অশ্রদ্ধাশীল’ বলে আখ্যা দেন, যার ফলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কোনো চুক্তি স্বাক্ষর না করেই হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন। মূলত, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের স্বত্ব ভাগাভাগি নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা ছিল, যা শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়।
ট্রাম্পের পুতিনপ্রীতির কারণে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে, মার্কিন ডেমোক্র্যাট শিবিরও বিষয়টিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
ট্রাম্পের অন্যতম কঠোর সমালোচক ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস মুরফি বলেন, ‘হোয়াইট হাউস এখন ক্রেমলিনের একটি শাখায় পরিণত হয়েছে।’
তিনি সিএনএনকে আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন স্বৈরশাসকদের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে চাইছে।’
রিপাবলিকানদের অবস্থান: জেলেনস্কির পদত্যাগের দাবি
অন্যদিকে, ট্রাম্পের রিপাবলিকান দল তার অবস্থানের সঙ্গে একমত হয়েছে। শীর্ষ রিপাবলিকান কর্মকর্তারা বলছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জেলেনস্কির সরে দাঁড়ানো উচিত।
সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেন, ‘আমাদের এমন একজন নেতা দরকার, যিনি আমাদের সঙ্গে এবং শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গেও সমঝোতায় আসতে পারবেন এবং এই যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন’।
ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির এই পরিবর্তন ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ ও পশ্চিমা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা এখনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।