দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন হোক প্রধান লক্ষ্য
ড. আলা উদ্দিন
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্বর্তীকাল অতিক্রম করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে দেশে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সম্পন্ন করতে চান। দেশের জনগণের চাওয়া ও প্রত্যাশাও এ ব্যাপারে স্পষ্ট-তারা আর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে চায় না। স্বাধীনতার পর থেকে বিগত দশকগুলোতে দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির থাবায় আক্রান্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব খাতে সংস্কার অপরিহার্য। তবে সব খাতে একসঙ্গে সংস্কার করা অত্যন্ত কঠিন। এজন্য অগ্রাধিকার ঠিক করা প্রয়োজন।
আমার মতে, দেশের পিছিয়ে যাওয়ার এবং সব খাতে সমস্যা সৃষ্টির প্রধান কারণ হলো ব্যাপক দুর্নীতি ও গণতন্ত্রের অভাব। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য সরকার ইতোমধ্যে প্রায় সবস্তরে গণতন্ত্র আনার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। গণতন্ত্রের বাস্তবায়ন হলে দুর্নীতির পাশাপাশি অন্যান্য অপকর্ম ও অপব্যবহার কমে আসবে, এতে সন্দেহ নেই।
এছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সমাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন’-এ নীতি অনুসরণ করে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব হলে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বিকাশ অবশ্যম্ভাবী। এভাবে ন্যায়বিচার ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিসরে ইতিবাচক পরিবর্তন হবে।
সমাজ থেকে দুর্নীতির মূল উপড়ে ফেলতে হবে। বিগত সরকারের পতনের পর সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে তৃণমূলের ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার-চেয়ারম্যান পর্যন্ত, রাষ্ট্রের প্রায় সবস্তরে দুর্নীতির যে ছাপ প্রতিভাত হয়েছে, তা সত্যিই ভয়াবহ। দেশে দুর্নীতি দীর্ঘকাল ধরে বিরাজ করছে; তবে, এর ব্যাপকতা ও গভীরতা এতটা শোচনীয় ছিল, তা অনেকের পক্ষে অনুমান করা কঠিন ছিল। শুধু দেশের সম্পদ ও বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়নি, দেশের সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন, তাদেরও নিত্যপণ্যের অত্যধিক মূল্য দিতে হচ্ছে-যেমন গ্যাস, বিদ্যুৎ, তেল, পেঁয়াজ, মরিচ ইত্যাদির মূল্য বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে এক ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের জন্য জীবনযাপন করা দিনদিন কঠিন হয়ে উঠছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। সঠিকভাবে প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূল করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
মহা দুর্নীতির কারণেই প্রয়োজন থাক বা না থাক, দেশে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে; বাধা ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও। এসব প্রকল্পের আদৌ প্রয়োজন আছে কি না, জনগণের মতামত কিংবা সম্পৃক্ততা কখনো গুরুত্ব পায়নি। এমনকি পরিবেশের ওপর প্রকল্পগুলোর প্রভাব কী, সেটাও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি কখনো। অর্থাৎ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তদের আর্থিক আত্মসাৎ ব্যতীত প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা কখনোই নিরীক্ষা করা হয়নি।
দুর্নীতির সঙ্গে রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা, পুলিশি আচরণ, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র এবং জবাবদিহি প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত। যখন সরকারপ্রধান এবং তার পরিবার ও মন্ত্রীরা হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন, তখন তাদের কাছে পাঁচ-সাত লাখ টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগের মতো অপরাধ তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। এ কারণে, বারবার আবেদন ও প্রতিবাদ জানানো সত্ত্বেও এসব অপরাধের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিচার পাওয়া যায়নি। দুর্নীতি যখন শীর্ষ পর্যায়ে উপস্থিত থাকে, তখন নিম্নস্তরের দুর্নীতির ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
এ পরিস্থিতির ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছে গেছে। শিক্ষার মান কমেছে এবং প্রতিভাবান শিক্ষকদের যথাযথ নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়েছে। দুর্নীতির কারণে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত হতে পারছে না এবং এটি জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা সৃষ্টি করছে। সুতরাং, দুর্নীতি নির্মূল করার জন্য একটি সম্মিলিত এবং শক্তিশালী উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
নির্বাচিনবিহীন বা যেনতেন ধরনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকার প্রচেষ্টার কারণে পুলিশ এবং প্রশাসনের সঙ্গে ওতপ্রোত সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতার ফলস্বরূপ এ প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমেই দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকর প্রতিকার গ্রহণ করা হয়নি। এর ফলে জনগণের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা ও গুরুত্ব না দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা ক্ষমতাসীনদের সুবিধার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে সরকার, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী জনবান্ধব হওয়ার পরিবর্তে ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের সার্বভৌম অধিকার ও চাহিদার প্রতি যথাযথ মনোযোগ না দেওয়ায় এবং দুর্নীতির প্রকোপে আক্রান্ত হয়ে তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বাধ্য হচ্ছে। ন্যায়বিচার বা জবাবদিহি প্রায় অনুপস্থিত হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে যাচ্ছে।
এর ফলে জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন দুর্বল হয়ে পড়ছে, যা দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা প্রয়োজন; যাতে জনগণের অধিকার এবং স্বার্থরক্ষা করা যায়।
এ অবস্থায় দেশের সবস্তরে দুর্নীতি দমনের ঘোষণাটি অপরিহার্য। দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি সুস্পষ্ট এবং শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করা ছাড়া দেশের উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার সম্ভব নয়। প্রথমে, সরকারকে দুর্নীতি নির্মূলের জন্য একটি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং প্রকৃতপক্ষে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
যখন পুলিশ কর্মকর্তারা, যেমন ওসি ও এসপি, বিনা ঘুসে বদলি হবেন এবং জনগণ বিনা ঘুসে পুলিশের সেবা পাবেন, তখন পুলিশ-জনগণ সম্পর্ক উন্নত হবে। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের কাছে ঘুস প্রদান না করলে এবং উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগে টাকার লেনদেন বন্ধ হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবান্ধব হতে বাধ্য হবে। রাজনীতিতে দুর্নীতির সুযোগ না থাকলে মন্ত্রী ও এমপিরা জনগণের প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠবে এবং রাজনীতি জনবান্ধব হবে। দেশে দুর্নীতি না থাকলে পুলিশ আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করবে, সহায়তা বন্ধ করে দেবে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এ অবস্থায়, পথ, বাস, অফিস, কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীরা নির্যাতনের শিকার হবে না; কারণ নির্যাতনকারীরা পুলিশ বা প্রশাসনের সহায়তা পাবে না। সুতরাং, দুর্নীতির অবসান না হলে সমাজের সবস্তরে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
দেশে যদি দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যায়, তবে মানুষের পেশাগত এবং জীবনের সব ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। দুর্নীতির অবসান হলে সবাই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখবে না, বরং নিজস্ব যোগ্যতা ও আগ্রহ অনুযায়ী মেধার প্রতিফলন ঘটানোর সুযোগ পাবে। এতে করে প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজস্ব দক্ষতা ও প্রতিভা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ পাবে, যা নিজের, পরিবারের, সমাজ এবং দেশের কল্যাণে প্রভূত ভূমিকা রাখবে।
দুর্নীতি বন্ধ হলে বিদ্যমান হারের অর্ধেক খরচে দেশের মানুষ বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা উন্নত করবে। পাশাপাশি, দেশে সঠিক মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করা সম্ভব হবে। এতে করে দৈনন্দিন জীবনের খরচ কমে যাবে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে।
স্বাধীনতার অর্ধ শতক অতিক্রান্ত হলেও জনগণ অনুভব করেনি, জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। দুয়েকবার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট হলেও জনপ্রতিনিধিদের আচরণে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। আর গত দেড় দশক তো জনগণ ওপর থেকে যা আসত, তাই মান্য করতে বাধ্য ছিল। তাইতো বিস্ফোরণ ঘটেছে।
সবশেষে, একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজে প্রত্যেকে সুখ ও শান্তির সঙ্গে বাস করার সুযোগ পাবে। জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। এভাবে, দুর্নীতির অবসান কেবল আর্থিক সাশ্রয়ই নয়, বরং সামাজিক শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।
দুর্নীতিমুক্ত না হলে বাকি সব সংস্কার কিছুদিন পর আগের অবস্থায় ফিরে আসতে বাধ্য হবে। কারণ, দুর্নীতি সমাজের সবস্তরে ছড়িয়ে পড়ে এবং তা সংস্কারের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে। যে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়, তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না, যদি দুর্নীতির মূল সমস্যাটি সমাধান করা না হয়। অর্থের নেতিবাচক ও ক্ষতিকর চর্চা সমাজের উন্নয়নের পথে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় এবং এর প্রভাবে কোনো সংস্কার কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে না।
অতএব, একটি দুর্নীতিমুক্ত দেশ নির্মাণ করা মুখ্য এবং অপরিহার্য। অর্থই অনর্থের মূল, তাই অর্থের সঠিক ব্যবহারের জন্য এর নেতিবাচক ও ক্ষতিকর চর্চা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। এটি নিশ্চিত করতে হবে, শুধু ঘোষণা দেওয়াই যথেষ্ট নয়, বরং কার্যকর ও ইতিবাচক সংস্কার করতে উদ্যোগ নিতে হবে। ঘোষণার ইতিহাস পরিহাসমূলক। যেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরও আমাদের শুনতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বাসার কর্মচারী কমপক্ষে ৪০০ কোটি টাকার মালিক। একজন এমপির গ্রামের বাড়িতে ৫ কোটি টাকা পাওয়া যায়। সড়ক নির্মাণ ব্যয় ইউরোপ-আমেরিকা অপেক্ষা বেশি হয়, মেগা প্রকল্পের বাজেট বারবার বৃদ্ধি পায়। দুর্নীতি বন্ধ হলে শিল্পী শিল্পী থাকবে, খেলোয়াড় খেলাধুলা নিয়ে থাকবেন, শিক্ষক শিক্ষকতায়, ব্যবসায়ী ব্যবসার কাজে এবং কেবল সৎ রাজনীতিবিদরাই রাজনীতি করবেন-তারাই হবেন জনপ্রতিনিধি-আইন প্রণেতা।
সঠিক ও সুস্থ ধারায় অর্থ পরিচালনা করার জন্য স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা দরকার। দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনা ও তদারকি ব্যবস্থা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকৃত বিজয় সম্ভব হবে। এর ফলে সমাজের সার্বিক উন্নয়ন ও সংস্কারগুলো দীর্ঘমেয়াদিভাবে কার্যকর থাকবে। জীবনের শুরু থেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিশুদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে নৈতিক অবস্থান সুদৃঢ় করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতির কুফল এবং সৎ থাকার সুফল সম্পর্কে দৃশ্যমান ধারণা পাকাপোক্ত করতে হবে। পিতা-মাতা দুর্নীতিগ্রস্ত হলে যেন সন্তানরা প্রতিবাদ করার নৈতিক শিক্ষা পায়।
ড. আলা উদ্দিন : অধ্যাপক ও সাবেক সভাপতি, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়