Logo
Logo
×

বাতায়ন

উপেক্ষিত মানবতা এখন গাজা থেকে লেবাননে

Icon

এম এ হালিম

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উপেক্ষিত মানবতা এখন গাজা থেকে লেবাননে

৭ অক্টোবর ২০২৩, ইসরাইলি সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিট। ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদী সশস্ত্র গ্রুপ হামাসের কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফ ঘোষণা করেন, গাজা থেকে দক্ষিণ ইসরাইলে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপের সমন্বিত রকেট হামলা ও সীমান্ত প্রতিরোধ অতিক্রম করে স্থল আক্রমণের খবর। হামাসসহ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপগুলোর ৭ হাজার সদস্য এ হামলায় অংশগ্রহণ করেন। হামাস সে হামলার নাম দেয় Operation Al-Aqsa। আর ইসরাইল হামলা প্রতিরোধের নাম দেয় Black Sabbath। প্রথম হামলায়ই ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন, যার মধ্যে ৬৯৫ জন ছিল বেসামরিক মানুষ। হামাস ২৫০ জন ইসরাইলিকে জিম্মি করে। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের আজ এক বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু মানবতাবিধংসী এ যুদ্ধ বন্ধ অথবা যুদ্ধবিরতি কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি, বরং এ যুদ্ধ এখন লেবানন পর্যন্ত গড়িয়েছে।

মোহাম্মদ দেইফ তার ঘোষণায় যুদ্ধের পটভূমি প্রসঙ্গে ইসরাইলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের কথা উল্লেখ করেন; যেমন: অবিরত ফিলিস্তিনি ভূমি দখল ও সম্প্রসারণ, ১৬ বছর ধরে গাজাকে অবরোধ করে রাখা, ফিলিস্তিনিদের সম্পত্তি দখল ও বাড়িঘর ধ্বংস, নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের আটক করা, আল আকসা মসজিদকেন্দ্রিক সহিংসতা এবং ইসরাইলি দখলদার কর্তৃক সহিংসতা। তিনি বলেন, পশ্চিমাদের সমর্থনে ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিকে ক্রমাগতভাবে লঙ্ঘন করে আসছে। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াও (এ বছরের ৩১ জুলাই নিহত) এক টিভি ভাষণে অনুরূপ বিবৃতি দেন।

উল্লিখিত দীর্ঘ ক্ষোভ ছাড়াও ৭ অক্টোবর (২০২৩) হামলার বিশেষ প্রেক্ষাপট ছিল, ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) কর্তৃক ১৩ সেপ্টেম্বর পাঁচ ফিলিস্তিনি নাগরিককে হত্যার কারণে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে। অবশ্য ফিলিস্তিনিদের এ ক্ষোভের সূচনা দীর্ঘ ৭৫ বছর আগে ১৯৪৭ সাল থেকে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে ভাগ করে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র অর্থাৎ ফিলিস্তিন ও ইসরাইল গঠনের প্রস্তাব (রেজুলেশন ১৮১) পাশ করে। ফিলিস্তিনিরা না মানলেও প্রস্তাব অনুসারে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে। আর ফিলিস্তিনকে নিজস্ব ভূমির অধিকার তথা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পরিবর্তে অস্তিত্ব রক্ষায় দীর্ঘ সংগ্রামে লিপ্ত হতে হয়েছে এবং বিতাড়িত হতে হয়েছে বারবার নিজ ভূখণ্ড থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৪ সালে গঠিত হয় প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)। কিন্তু অব্যাহত থাকে তাদের ওপর নির্যাতন, বিতাড়ন ও বাস্তুচ্যুতি। ১৯৬৭ সালে মাত্র ৬ দিনের (৫-১০ জুন) আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইল ঐতিহাসিক পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং বাস্তুচ্যুত করে ৩ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনিকে। ১৯৯৩ সালে ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজাক রবিন ও পিএলও নেতা ইয়াসির আরাফাতের মধ্যে সম্পাদিত শান্তিচুক্তির অধীনে উভয়ই দ্বিরাষ্ট্র অর্থাৎ ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি দেয়। উল্লেখ্য, এ চুক্তির কারণে আইজাক রবিন ও ইয়াসির আরাফাত যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।

গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে লেবাননভিত্তিক সংগঠন হিজবুল্লাহ ইসরাইলে রকেট হামলা চালানোর মাধ্যমে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, হামাস ও হিজবুল্লাহ উভয়ই ইরানসমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী। গত ২৭ সেপ্টেম্বর হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ইরানে নিহত হন। এর প্রতিবাদে ইরান ইসরাইলে রকেট হামলা করেছে। অন্যদিকে ইসরাইল লেবাননে প্রতিহামলা করেছে। হিজবুল্লাহর এক নেতা বলেছেন, ইসরাইল লেবাননে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। কোনো বাড়িঘর তাদের আগ্রাসনের বাইরে থাকেনি। তারা বেসামরিক লোকজন, অ্যাম্বুলেন্স, শিশু ও বৃদ্ধদের লক্ষ্যে পরিণত করেছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, লেবানন সীমান্ত ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে দুই হাজার আর আহত পাঁচ হাজারের বেশি। ক্রেমলিনের দাবি, লেবাননের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বোমা ফেলায় বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। লেবাননে গাজার মতো আর এক মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে। ইউএনএইচসিআর বলছে, লেবাননে ইসরাইলি হামলায় ১০ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে, এর মধ্যে ১ লাখ লেবানিজ সিরিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে। লেবানিজ এক উদ্বাস্তু আয়মেন বলেন, লেবাননের ভবিষ্যৎ একমাত্র আল্লাহর হাতে।

চলমান যুদ্ধ পরিচালনায় ইসরাইল কোনো আইন বা অঙ্গীকারের তোয়াক্কা করছে না। নির্বিচারে বেসামরিক জনগণ ও স্থাপনার ওপর হামলা চলছে। প্রসঙ্গত, ২৮ জুলাই যুগান্তরে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে বিষয়ে ‘আর কত উপেক্ষিত হবে মানবতা?’ শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে যুদ্ধসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানবিক আইন (আইএইচএল) অর্থাৎ হেগ কনভেনশন ও জেনেভা কনভেনশন সম্পর্কে বলেছিলাম, জেনেভা কনভেনশন (১৯৪৯) হচ্ছে যুদ্ধ বা আন্তর্জাতিক সংঘাতে যুদ্ধাহত, যুদ্ধবন্দি ও বেসামরিক মানুষ ও স্থাপনার প্রতি আচরণ কী হবে তার অঙ্গীকার এবং হেগ কনভেনশন (১৯০৭) হচ্ছে যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে আঘাত করার পদ্ধতি, উপায় ও অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশনা। কিন্তু বাস্তবে এসবের কোনো প্রতিফলন নেই। ইসরাইল অ্যাম্বুলেন্স, মসজিদ, চার্চ, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঐতিহাসিক স্থাপনা, স্কুল ও বাড়িঘরসহ বেসামরিক স্থাপনা সবকিছুতেই আক্রমণ করছে। অথচ জেনেভা কনভেনশন অনুসারে যুদ্ধকালে সাংস্কৃতিক সম্পত্তি ও ঐতিহ্য, ধর্মীয় কেন্দ্র/উপাসনালয়, হাসপাতাল, সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল ইউনিটের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, রেড ক্রস স্থাপনা ইত্যাদির সুরক্ষা প্রদানে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়া কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী যুদ্ধে লিপ্ত রাষ্ট্রগুলো কিছু বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; যেমন: আহত সৈন্যের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। উপরন্তু, যুদ্ধরত দেশে নির্বিঘ্ন ওষুধসামগ্রী, পানি, খাদ্য ও বস্ত্র পরিবহণে বিবদমান পক্ষ বাধ্য থাকবে। যুদ্ধাবস্থায় বিবদমান রাষ্ট্র কর্তৃক ঘোষিত নিরপেক্ষ স্থাপনা ও নিরাপদ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব।

ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, গাজায় ফিলিস্তিনি মোট উদ্বাস্তু ও বাস্তুচ্যুতর সংখ্যা সেখানকার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ (১৯ লাখ)। এদের অধিকাংশই একাধিকবার স্থানান্তরিত হয়েছে। এদিকে উদ্বাস্তুরা উদ্বাস্তু শিবিরেও নিরাপদ নয়। কারণ আইডিএফ প্রায়ই তাদের স্থানান্তরিত হতে বাধ্য করছে, যা ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ রিফিউজি কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কেননা কনভেনশনের প্রথম বার্তা বা অঙ্গীকারই হচ্ছে, শরণার্থীদের তাদের আশ্রয়স্থল থেকে বিতাড়িত করা যাবে না।

গাজা যুদ্ধের এক বছরে নিহতের সংখ্যা ৪২ হাজার। আর আহতের সংখ্যা এক লাখ পৌঁছাতে চলেছে। গাজায় নিহতের মধ্যে সিংহভাগই বেসামরিক জনগণ, যাদের মধ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ, মানবিককর্মী, চিকিৎসক, গণমাধ্যমকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক। এক বছর ধরে চলমান যুদ্ধের ফলে মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে অনেক আগেই। ইউনিসেফের তথ্যমতে, গাজায় নিহতের ১৫ হাজারই শিশু। আর বেঁচে থাকা ৯০ শতাংশ শিশু পুষ্টিহীনতার শিকার। ১৭ আগস্ট নিউইয়র্ক টাইমসের শিরোনাম ছিল ‘গাজায় কোনো শৈশব নেই’। বলা বাহুল্য, এ পরিস্থিতি আরও প্রকট হতে চলেছে ইসরাইল কর্তৃক লেবালনে আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে।

এ বছর জুলাইয়ে এক আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা গাজার মোট ভবনের অর্ধেক। গাজায় ৫০ হাজার বোমা ফেলা হয়, যার মধ্যে ২ থেকে ৩ হাজার বিস্ফোরিত হয়নি। মে মাসে ইউএনডিপি জানায়, গাজার ধ্বংসস্তূপ সরাতে ১৫ বছর লাগবে, পুনঃনির্মাণে ২০৪০ পর্যন্ত সময় লাগবে এবং ব্যয় হবে ৪০ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার।

১৯ জুন জাতিসংঘ মানবাধিকার পর্ষদের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় হামলায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে ইসরাইল। পর্ষদের চেয়ারপারসন বলেন, ইসরাইল জোর করে গাজার প্রায় পুরো জনগোষ্ঠীকে ছোট আবদ্ধ এলাকায় ঠেলে দিয়েছে, যা অনিরাপদ এবং বসবাসের অযোগ্য। এসব বিবেচনায় ইসরাইলের এ আচরণ ১৯৪৮-এর গণহত্যা কনভেনশনের লঙ্ঘন। এ কনভেনশনে গণহত্যা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কোনো জাতিগত বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে সংঘটিত কর্মকাণ্ড। উল্লেখ্য, এ বছর ১১ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলা করে গণহত্যা, গণহত্যার প্ররোচনা ও গণহত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনে। এ মামলায় বলা হয়, ইসরাইল স্পষ্টত, গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে। ২৬ জানুয়ারি আইসিজে মন্তব্য করে, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইলের উপস্থিতি বেআইনি। আইসিজে যুদ্ধ বন্ধের তাৎক্ষণিক নির্দেশ না দিলেও ৬টি রুলিং জারি করে যার প্রথমটি হলো, ইসরাইল ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনের ২ নং ধারা অনুসারে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবে। এ ধারা অনুসারে নতুন করে আর কাউকে হত্যা করা যাবে না।

চলমান যুদ্ধ এক বছর পার হলেও তা বন্ধের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। বরং বিষয়টি শুধুই আলোচনার টেবিলে সীমাবদ্ধ। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব আনা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর ফলে তা পাশ হয় না। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায়ও প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাধারণ পরিষদে স্বাগত ভাষণসহ বিভিন্ন ফোরামে বিশ্বশান্তির কথা বললেও ইসরাইল প্রসঙ্গে সবসময়ই সমর্থন করে বলেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে থাকবে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত ভাষণে অবিলম্বে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান করে বলেন, এ যুদ্ধ কোনো বিশেষ ধর্মাবলম্বীর জন্য বিধ্বংসী নয়, বরং তা সমগ্র মানবজাতির জন্যই বিধ্বংসী। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক স্বার্থে ওই অঞ্চলকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। তিনি জাতিসংঘের ভূমিকার সমালোচনা করেন এবং অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির তাগিদ দেন। সাধারণ পরিষদে এক বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ দখলদারত্ব বন্ধ করার জন্য ইসরাইলকে আহ্বানসংবলিত প্রস্তাব পাশ হয়। অতীতের অভিজ্ঞতায় ধরেই নেওয়া যায়, ইসরাইল এ প্রস্তাব কার্যকর করবে না। তবুও এ প্রস্তাব ইসরাইলকে কিছুটা কূটনৈতিক চাপে ফেলবে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণে লেবাননে বেসামরিক মানুষ ও স্থাপনায় হামলার সমালোচনা করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, লেবানন আর একটি গাজা হতে পারে না। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১২টি দেশের জাতিসংঘে আনা লেবাননে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ইসরাইল প্রত্যাখ্যান করেছে এবং লেবাননের সঙ্গে সীমান্ত লড়াই চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।

গাজায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে খোদ ইসরাইলে বিভিন্ন সময়ে লাখো মানুষ প্রতিবাদ মিছিল করেছে; কিন্তু কোনো কিছুই ইসরাইলকে এ হামলা থেকে বিরত রাখতে পারছে না। বরং হামলা লেবানন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। অতীতের যে কোনো যুদ্ধের মতোই গাজা যুদ্ধের শুরু থেকে মানবতা উপেক্ষিত ছিল। এখন তা গড়াচ্ছে লেবাননের দিকে। আশঙ্কা, এ যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের অন্য প্রতিবেশী দেশে ছড়িয়ে পড়লে চলমান মানবিক সংকট প্রকট থেকে প্রকটতর হবে। তাই যুদ্ধবিরতি অথবা যুদ্ধ বন্ধের জন্য এখনই আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। আর ততদিন পর্যন্ত মানবতা আর যেন উপেক্ষিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে সব আন্তর্জাতিক আইন ও অঙ্গীকার প্রতিপালনে দরকার কার্যকর নজরদারি।

এম এ হালিম : সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি; দুর্যোগ, জলবায়ু ও মানবিক বিষয়ে কলাম লেখক

halim_64@hotmail.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম