Logo
Logo
×

বাতায়ন

উন্নয়ন বনাম উন্নয়নের ঋণাত্মক তত্ত্ব

Icon

এ টি এম মোস্তফা কামাল

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উন্নয়ন বনাম উন্নয়নের ঋণাত্মক তত্ত্ব

উন্নয়ন মানে হচ্ছে উন্নতি। খারাপ অবস্থা থেকে ভালো অবস্থায় যাওয়া। রুগ্ণ অবস্থা থেকে সুস্থ অবস্থায় যাওয়া। নিচু পদ থেকে উঁচু পদে যাওয়া। উন্নয়ন মানে শিক্ষার মানোন্নয়ন, পরিবেশের উন্নয়ন, চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নয়ন, বাকস্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন, বিচারব্যবস্থার উন্নয়ন, নদ-নদী-খাল-বিল দূষণমুক্তকরণ, সড়ক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, গণপরিবহণব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রজাতন্ত্রের সব সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, জনসাধারণের জন্য মানসম্মত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, আগুন নেভানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতির নিশ্চয়তা বিধান, জনসাধারণের জন্য নিরাপদ-মানসম্মত খাবারপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা বিধান, রাষ্ট্রের সবস্তরে সুশাসন নিশ্চিতকরণ, অবাধ ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ, কর্মক্ষম জনশক্তির জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, সবস্তরের কর্মজীবী মানুষের আয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনা-অর্থাৎ মানবজীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ফ্যাক্টরের সামগ্রিক উন্নয়নের ওপর নির্ভর করবে দেশের উন্নয়ন।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য বিশ্বব্যাংক মাথাপিছু আয়কে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু শুধু মাথাপিছু আয় দিয়ে উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করা হলে সঠিক ফল পাওয়া যাবে না। ধরুন, আমাদের দেশের উপরি স্তরের ৫ শতাংশ লোক দেশের সব উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞের ৬০-৭০ শতাংশের উপকারভোগী। তাদের মাথাপিছু আয় সর্বনিম্ন ধাপে থাকা ৫ শতাংশ লোকের মাথাপিছু আয় থেকে ৮০ গুণ বেশি। এত বিশাল ব্যবধান বিদ্যমান রেখে মাথাপিছু আয় দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পরিমাপ করা সঠিক কোনো পদ্ধতি নয়। অন্যদিকে একটা দেশ উন্নত দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার কারণে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সেই দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে মাথাপিছু আয়ের নিরিখে সে দেশকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে গণ্য করাও যৌক্তিক নহে; যেমন, ইরান। মাথাপিছু আয় দিয়ে উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করার ক্ষেত্রে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি বিদ্যমান থাকায় মাথাপিছু আয়ের সঙ্গে আরও দুটি ফ্যাক্টরকে যোগ করার আবশ্যকতা রয়েছে-সেটা হচ্ছে সুশাসন এবং সম্পদের সুষম বণ্টন। সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ আর সর্বনিম্ন ৫ শতাংশের মাথাপিছু আয়ের ব্যবধান ২০ গুণের বেশি হতে না পারা। সুতরাং, মাথাপিছু আয়ের নিরিখে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে প্রচুর ত্রুটি-বিচ্যুতি বিদ্যমান থাকায় বিকল্প পন্থায় Quadrant System ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করা যেতে পারে।

আমরা X-axis দিয়ে উন্নয়নের সব সেক্টরকে Macro Level-এ একসঙ্গে পরিমাপ করতে পারি। আবার একেকটা সেক্টরকে Micro Level-এ এককভাবেও পরিমাপ করতে পারি। প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন প্রকল্পের পেছনে যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে, সেটা X-axis-এ প্রদর্শন করা যেতে পারে। তবে প্রকল্পের সঙ্গে কোনো ধরনের Negative Aspects (দুর্নীতি, প্রকল্পের ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়া, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প) জড়িত থাকলে সেটা X-axis-এর Negative Side-এ চলে যাবে। একইভাবে Y-axis দিয়ে আমরা উন্নয়নকে পরিমাপ করতে পারি। ধরুন, সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চমৎকার অর্জন রয়েছে। কিন্তু সেই সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতির বিষয়টি জড়িত থাকায় ঢাকা শহরসহ সমগ্র দেশে পাবলিক পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত বাস সার্ভিসকে বিশ্বমানে উন্নীত না করায়-সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়নের জন্য যা ব্যয় করা হয়েছে, সেটি X-axis-এর ঋণাত্মক পাশে দেখাতে হবে। কারণ, গণপরিবহণ যোগাযোগ সেক্টরের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আর উন্নয়নকে Y-axis-এর ধনাত্মক পাশে দেখাতে হবে। তার মানে, এটার অবস্থান হচ্ছে 2nd Quadrant-এ। তবে এককভাবে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাত পড়ে যাবে 3rd Quadrant-এ, যেখানে Both X & Y Coefficients are Negative. বিদ্যুৎ খাত পড়ে যাবে ২য় কোয়াড্রেন্টে। Micro level বিবেচনায় বাংলাদেশের কোনো একক সেক্টরই এখনো First Quadrant-এ ঢোকার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।

দেশের সব খাতের সামগ্রিক উন্নয়ন না হলে আমরা উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য First Quadrant where both the Coefficients (XY) are positive ব্যবহার করতে পারব না। যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ সব সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়ন করে First Quadrant-এ ঢোকার জন্য Qualify করতে না পারবে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশকে 2nd, 3rd or 4th Quadrant-এর যে কোনো একটিতে ফেলে উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে। আমার ধারণা, বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় বাংলাদেশের উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপের জন্য 2nd Quadrant ব্যবহার করাই হবে সর্বোত্তম পন্থা। সে অবস্থায় বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রগতি হবে ঋণাত্মক। সিন্ডিকেট তথা টাউটমুক্ত পরিবেশে সুশাসন কায়েম করে বাংলাদেশের সব সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়ন করে First Quadrant-এ ঢোকার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নকে 2nd Quadrant-এ অবস্থান করতে হবে। 2nd Quadrant-এ অবস্থানকালে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নিম্নমধ্যম কিংবা মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে উন্নীত হয়েছে বলে ঘোষণা করার কোনো সুযোগ নেই। এটাই হচ্ছে উন্নয়নের ঋণাত্মক তত্ত্ব।

কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার মানসে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে এবং সেরূপ প্রকল্পের বাস্তবায়ন ব্যয় নিয়ে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক করে, সেটিও চলে যাবে X-axis-এর ঋণাত্মক পাশে।

দুর্নীতির রয়েছে Multiplier Impact & Adverse Consequences. দুর্নীতি যদি কোনো দেশের শাসনব্যবস্থায় তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়, তাহলে সে দেশকে পিছিয়ে থাকতেই হবে। দুর্নীতি কোনো দেশকে কখনো First Quadrant-এ প্রবেশ করতে দেবে না।

যতদিন দেশে সুশাসন কায়েম করা না যাবে, ততদিন দেশের অর্থনীতি ধনাত্মক কোয়াড্রেন্টে প্রবেশ করার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না। দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যতদিন 1st Quadrant-এ প্রবেশ করতে না পারবে, ততদিন দেশের অর্থনীতির কোনো ধরনের ধনাত্মক অর্জন (Positive Achievement) দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। নিম্নমধ্যম কিংবা মধ্যম আয়ের দেশ অবশ্যই ধনাত্মক অর্জন। First Quadrant-এ প্রবেশ করার আগে কোনো দেশকে নিম্নমধ্যম কিংবা মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে ঘোষণা করার কোনো অবকাশ নেই। সুশাসন কায়েম করে যেসব দেশ 1st Quadrant-এ প্রবেশ করতে পারল না, সেসব দেশকে শুধু মাথাপিছু আয়ের সূচক ব্যবহার করে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ বলে ঘোষণা করা পুরোপুরি অযৌক্তিক। অবশ্য এর পেছনে বিশ্বব্যাংকের একটা অপকৌশল কাজ করে থাকে। Least Developed Countries হিসাবে এসব দেশ বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতা সংস্থার কাছ থেকে স্বল্পসুদে যে ঋণ সুবিধা পেত, তা নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে আর পাবে না। তাছাড়া যেসব দেশকে নিম্নমধ্যম এবং মধ্যম আয়ের দেশ বলে ঘোষণা করা হলো, সেসব দেশের সরকার এটাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। দেশ তাদের শাসনাধীনে উন্নতির মহাসোপানে এগিয়ে যাচ্ছে-তাদের এটি বলার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেখুন, বিশ্বব্যাংক একদিকে বলছে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, আর অন্যদিকে বলছে বাংলাদেশের ১৭ কোটি লোকের মধ্যে ১২ কোটি ১০ লাখ লোক স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারে না, অর্থাৎ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ক্রয় করার সামর্থ্য তাদের নেই (প্রথম আলো, ৭ জুলাই, ২০২৩)। বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে তার ৭১ শতাংশ লোক কেন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনে খেতে পারবে না?

যে দেশের ৭১ শতাংশ লোকের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, সেদেশের মানুষ চরম অর্থকষ্টে দিনযাপন করছে বলে গণ্য করা যেতে পারে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ৭১ শতাংশ লোককে অর্থ সহায়তা দেওয়ার আবশ্যকতা রয়েছে, যাতে করে তারা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনে খেতে পারে। রাষ্ট্রের কাছ থেকে সর্বাধিক সুবিধাভোগী সর্বোচ্চ ধাপে অবস্থানকারী ৫ শতাংশ লোকের ওপর অধিকহারে করারোপ করে তাদের এরূপ অর্থ সহায়তা দেওয়া যেতে পারে।

কাজেই কোনো দেশকে নিম্নমধ্যম কিংবা মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করার আগে সেই দেশ সুশাসন কায়েম করে Macro পর্যায়ে 1st Quadrant-এ প্রবেশ করতে পারল কিনা, তা বিশ্বব্যাংককে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। অপশাসনের কারণে একটি রাষ্ট্রের Gross domestic product or gross domestic income-এর বৃহদাংশ (৬০-৭৫ শতাংশ) প্রভাবশালী ৫ শতাংশ লোকের হাতে চলে যেতে পারে। ৫ শতাংশ লোকের বিশাল সম্পদকে ৯৫ শতাংশ লোকের মাঝে অঙ্ক কষে ভাগ করে দেখানো হলে ৯৫ শতাংশ লোকের ভাগ্যের তো কোনো পরিবর্তন হবে না। যে দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ লোকের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ক্রয় করে খাওয়ার সামর্থ্য নেই, সেই দেশকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে ঘোষণা করা বিশ্বব্যাংকের একটা মহাভুল। কোনো দেশকে নিম্নমধ্যম কিংবা মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে ঘোষণা করার আগে সেই দেশ 1st Quadrant-এ প্রবেশ করতে পারল কি না, সেটা যাচাই করে দেখার আবশ্যকতা রয়েছে। কাজেই যেসব দেশের অর্থনীতি অথবা উন্নয়ন কার্যক্রম যতদিন 2nd Quadrant-এ অবস্থান করবে, ততদিন সেসব দেশের অর্থনীতিকে Least Developed Countries হিসাবে বিবেচনা করে যাওয়াই শ্রেয়। সুতরাং, 1st Quadrant-এ প্রবেশ করার পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশকে Least Developed Countries হিসাবেই গণ্য করে যেতে হবে।

1st Quadrant-এ প্রবেশ করার জন্য বাংলাদেশকে পাহাড়-পর্বত ডিঙ্গিয়ে অনেক দূর পথ পাড়ি দিতে হবে। যে মুহূর্তে বাংলাদেশ 1st Quadrant-এ প্রবেশ করার যোগ্যতা অর্জন করবে, সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের উন্নয়নের মাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। 1st Quadrant-এ প্রবেশ করার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি নিম্নমধ্যম, মধ্যম কিংবা উন্নত-কোন স্তরে উন্নীত হলো, সেটি কেবল তখনই নির্ধারণ করা যেতে পারে। 1st Quadrant-এ ঢোকার পর উন্নত দেশের কাতারে যেতে বাংলাদেশের ৫ থেকে ১০ বছরের বেশি সময় লাগবে না বলে আশা করা যায়।

উল্লেখ্য, 1st Quadrant হচ্ছে একটি দেশের উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করার কোয়াড্রেন্ট, যে উন্নয়নের সুফলভোগী হবে সমগ্র দেশের জনসাধারণ। আর 3rd Quadrant হচ্ছে অসাধু রাজনীতিক, টাউট-বাটপাড়-সিন্ডিকেট, অসাধু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী কিংবা ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এবং অসাধু অরাজনৈতিক নীতিনির্ধারকদের কোয়াড্রেন্ট। যতদিন একটা দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম তথা অর্থনীতি ১ম কোয়াড্রেন্টে প্রবেশ করার যোগ্যতা অর্জন করবে না, ততদিন সেই দেশের সরকার কিছু সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী, টাউট-বাটপাড়-সিন্ডিকেট তথা সরকারের প্রিয়ভাজন এবং আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তিদের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রজাতন্ত্রের সব সুযোগ-সুবিধা এবং সম্পদকে কাজে লাগিয়ে থাকবে বলে ধারণা করা যেতে পারে।

এ টি এম মোস্তফা কামাল : অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম