Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

রমজানে চাই জোরালো বাজার মনিটরিং

Icon

মাহমুদুল হক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রমজানে চাই জোরালো বাজার মনিটরিং

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন রমজান মাসে বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মুসলিম বিশ্বের মহান মাস পবিত্র রমজান। বারো মাসের মধ্যে পবিত্র রমজানুল মোবারক মুসলমানদের জন্য ইবাদতের মাস। রোজা পালনের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের সাধনা করে। রমাজনে সিয়াম পালনে সেহরি ও ইফতার করে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

রোজা পালনকারী মুসল্লিরা শেষ রাতে সেহরি খান। দিনের শেষে ইফতার করে পবিত্র রোজা সমাপ্ত করে থাকেন। মুসলমানদের কাছে রমজান মাস বছরে একবার ঘুরে আসে। এ মাসের জন্য পৃথিবীর রোজাদার মুসলমানরা একটি বছর অপেক্ষা করেন। রমজানের চাঁদ কখন পশ্চিম আকাশে উদিত হবে, সে প্রত্যাশায় মনে-প্রাণ নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন রোজাদাররা।

এ বছরও পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানাতে দুনিয়ার মুসলিম সমাজ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোজা শুরু হলে বিশ্বের মুসলিমপ্রধান দেশগুলোই শুধু নয়, অন্যান্য দেশেও সরকারের পক্ষ থেকে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়। নিত্যপণ্যের বাজারে সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি বাড়তি তদারকি করা হয়।

অনেক পণ্যের দাম কমিয়ে ফেলা হয়, যাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের তা ক্রয় করতে সুবিধা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা যায়। পর্যাপ্ত সরবরাহ সত্ত্বেও পণ্যের দাম বাড়িয়ে ফেলেন ব্যবসায়ীরা। এমন অবস্থায় এ বছর পুনরায় যাতে সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিতে না পারে, সরকারকে সেদিকে নজর দিতে হবে, নিতে হবে আগাম প্রস্তুতি।

এর অংশ হিসাবে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। যেমন সারা দেশে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে যাতে সরবরাহ করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তরিতরকারি, চাল, ডাল, মাছ, মাংসের পাশাপাশি ইফতার সামগ্রির সরবরাহ সমানভাবে সারা দেশে নিশ্চিত করার উদ্যোগ এখন থেকেই নিতে হবে। বর্তমান সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে রমজান মাসের চাহিদা উপলব্ধি করে চাহিদামতো পণ্য আমদানি ও মজুত করতে হবে।

চাল-ডাল, পেঁয়াজ-রসুন, আদা, গরম মসলার মূল্য যেন বৃদ্ধি না পায়, সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। ছোলা, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের সংকট যেন না হয়, সে ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আগাম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা প্রতিরোধে এখন থেকেই বাজার মনিটরিং করতে হবে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সরকারের বাজার সম্পর্কিত সব প্রশাসনকে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করতে হবে।

বর্তমানে তরিতরকারি ছাড়া মাছ-মাংস, গরম মসলার বাজার ঊর্ধ্বমুখী। সিন্ডিকেট এখনো তৎপর। এ অবস্থায় সরকারের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা নস্যাৎ করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে অযোগ্য প্রমাণ করার জন্য কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এখনও তৎপর রয়েছে। সেই তৎপরতার অংশ হিসাবে তারা চায় জনভোগান্তি বাড়িয়ে তুলতে, পণ্য সরবরাহের কাজে বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করতে, নানাভাবে সমাজে আতঙ্ক তৈরি করতে। এসব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাই সদা সজাগ থাকতে হবে। ইফতার-সেহরির সময় ও তারাবির নামাজের সময় লোডশেডিং যাতে না হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে বিদ্যুৎ বিভাগকে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুতের অপব্যয় রোধ করতে হবে।

অপ্রয়োজনে লাইট, এসি ও ফ্যানের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। সরকারি অফিস-আদালতে বিনা কারণে এসি-ফ্যান চালু রাখার প্রবণতা রোধ করতে হবে। রমজান মাসে রোজা পালনকারী মুসল্লিদের স্বার্থে বিদ্যুতের ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের নির্দেশনা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি চাহিদামতো পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। গ্যাস-বিদ্যুতের জরুরি সেবার যোগাযোগের নম্বরগুলো সব সময় সচল রাখতে হবে।

সংগঠক, গবেষক

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম