Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

শতফুল ফুটতে দাও

সংকটাপন্ন অর্থনীতি, বিপর্যস্ত জনজীবন

Icon

ড. মাহবুব উল্লাহ্

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সংকটাপন্ন অর্থনীতি, বিপর্যস্ত জনজীবন

বিশ্বব্যাংক প্রতি বছর Global Economics prospects নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য বিশ্ব অর্থনীতির স্বাস্থ্য সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য ও বিশ্লেষণ প্রকাশ। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক বিশ্ব পুঁজিবাদকে সাবধান করে দেয় এর গতি-প্রকৃতি, সংকট ও সম্ভাবনা সম্পর্কে। বিশ্বের প্রতিটি দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে এই প্রতিবেদনে বিশ্বাসযোগ্য বিবরণ প্রকাশ করা হয়।

বাংলাদেশ ও এর প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলো সম্পর্কে উল্লেখিত প্রতিবেদনে মোটা দাগে কিছু তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.১ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এর আগের অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ শতাংশ। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, অর্থনীতিতে এক ধরনের নিম্নগামিতার সূচনা হয়েছে। এর পাশাপাশি ভারতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬.৫। বর্তমান অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশ হবে বলে প্রতিবেদনটিতে ধারণা করা হয়েছে। পাকিস্তানে ২০২৩-২৪-এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক ২.৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এই হার ২.৮ এ উন্নীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। শ্রীলংকায় ২০২৩-২৪-এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪.৪ শতাংশ। ২০২৪-২৫-এ এই প্রবৃদ্ধির হার ৩.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। উপমহাদেশের ৪টি দেশের মধ্যে ২টি দেশে প্রবৃদ্ধির হার নিম্নগামী। দেশ দুটি হচ্ছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। শ্রীলংকায় অর্থনৈতিক ধসের ফলে রাজনীতি টালমাটাল হয়ে উঠেছিল। শ্রীলংকার রাজনীতিতে মৌরসি পাট্টা গেড়ে বসা রাজাপাকসে পরিবার বলতে গেলে ক্ষমতা ও রাজনীতি থেকে বিতাড়িত হয়। রাজাপাকসে পরিবারের এ দুর্যোগের জন্য মূলত দায়ী শ্রীলংকার প্রধান অর্থনৈতিক খাত পর্যটন ও কৃষিতে বড় ধরনের বিপর্যয়। এ ছাড়াও ছিল কিছু প্রেসটিজ প্রজেক্টের বোঝা। শ্রীলংকার পর্যটন খাতে বিপর্যয়ের কারণ একটি দামি হোটেলে বিস্ফোরণের ফলে বহু পর্যটকের মৃত্যু হওয়ায় শ্রীলংকামুখী পর্যটকদের বিমুখতা। অন্যদিকে কৃষিতে পরিবেশগত বিপর্যয় রোধের নামে জৈব প্রযুক্তি প্রচলনের চেষ্টা দারুণ মার খায়। বোঝা যাচ্ছে একটি দেশের অর্থনীতি বোধগম্য এবং অবোধগম্য কারণে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে। ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল রয়েছে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুব নিচে নেমে যাওয়া থেকে ইদানীং পুনরুদ্ধারের পথে হাঁটছে বলে মনে হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কেন নিম্নগামী? শেখ হাসিনার শাসনামলের শেষ বছরে প্রবৃদ্ধি এর পূর্বেকার বছরের তুলনায় অনেকটাই হ্রাস পেয়েছিল। পূর্বেকার বছরগুলোতে ৬-৭ শতাংশ কিংবা তারও কিছু বেশি প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে ওই সময় বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোকে প্রবৃদ্ধির অংশ বাড়িয়ে দেখাতে প্রভাবিত করা হয়েছিল। ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমিয়ে দেখানোর জন্য খেলাপির সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়েছিল। বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার আশঙ্কার পেছনের কারণগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিনিয়োগে ভাটা, শিল্পখাতে ভাটার টান এবং অব্যাহত মূল্যস্ফীতি। সরকার মূল্যস্ফীতি কমাতে পারছে না। চলতি অর্থবছরের শুরুতেই ঘটেছে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান। এ গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, যাতায়াত-পরিবহণ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। পণ্যসামগ্রীর চলাচল ব্যাহত হয়েছে। কলকারখানার উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের শুরুতে গণ-অভ্যুত্থানের যে ঝড় বয়ে গেছে, তার ফলে অর্থনীতির বৃক্ষগুলোর ডালপালা ভেঙে গেছে, পাতাগুলো ঝরে গেছে।

২০২৪-এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় মূল্যস্ফীতির হার ছিল যথাক্রমে ১০.৮৯ শতাংশ, ৫.২২ শতাংশ, ৪.১ শতাংশ এবং মাইনাস ১.৭ শতাংশ। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না, অথচ উপমহাদেশের অন্য দেশে মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশে কেন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না? তার একটা বড় কারণ শেখ হাসিনার আমলে অনেক মেগাপ্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এগুলোর সবকটি অবকাঠামো সম্পর্কিত। এসব প্রকল্পের জন্য ব্যয় হয়েছে বিশাল অঙ্কের অর্থ। শুধু তাই নয়, ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ বিশ্বের অন্য দেশে (অতি উন্নত দেশগুলোসহ) সমজাতীয় প্রকল্পের ব্যয়ের তুলনায় ২ কী ৩ গুণ বেশি। এর ফলে একদিকে প্রকল্পগুলোর অর্থনৈতিক Sustainability প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, অন্যদিকে এগুলো থেকে সুবিধাভোগীরা মেগা দুর্নীতির সুযোগ পেয়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প থেকে মূল্যস্ফীতি উৎসারিত হয়। কারণ এগুলোর বাস্তবায়নে অনেক সময় লাগে এবং এগুলোর বাস্তবায়নকালে বাজারে বিপুল বর্ধিত আকারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এসব প্রকল্প থেকে বেনিফিট অনেক ধীর গতিতে আসে, যার ফলে বাজারে যে পরিমাণ মুদ্রাস্ফীতি হয়, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য ও সেবা সামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি খুব কম হারেই হয়। এর ফলে দেখা দেয় Too much money chasing too few goods. অর্থাৎ দেখা দেয় মূল্যস্ফীতি বা Inflation. শেখ হাসিনার শাসনামলেই মূল্যস্ফীতি বল্গাহীন হতে শুরু করে। তবে পরিসংখ্যানের কারসাজি করে মূল্যস্ফীতির হার কম করে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তাতে মানুষের কষ্ট কমেনি। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির আরেকটি অন্যতম কারণ হলো, টাকা ছাপিয়ে সরকারের দায় পরিশোধের চেষ্টা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও রেড জোনে থাকা কয়েকটি ব্যাংককে বাঁচিয়ে রাখার জন্য টাকা ছাপাতে হয়েছে। সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে দিয়ে এ কাজটি করিয়েছে বলে ধারণা করি। কারণ, শুনেছি ব্যাংকের গভর্নর এ পদক্ষেপের সঙ্গে সম্মত ছিলেন না। শত শত আমানতকারীর বিক্ষোভ এড়াতে এ রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। অনেক সময় রাজনৈতিক বিবেচনায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিকর পদক্ষেপ নিতে হয়।

বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির পেছনে আরও একটি বড় কারণ হচ্ছে বাংলাদেশি টাকার মূল্য ডলারের তুলনায় মারাত্মকভাবে কমে যাওয়া। এক সময় বাংলাদেশি টাকায় ডলারের মূল্য ছিল ৮৩-৮৪ টাকা। পরবর্তীকালে বাড়তে বাড়তে দাঁড়িয়েছে ১২৫-১২৬ টাকায়। একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিদেশি মুদ্রার দাম বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে বিদেশি মুদ্রার সরবরাহে ঘাটতি। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে তাই হয়েছে। ডলারের মতো বিদেশি মুদ্রার দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে আমদানি করা পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আমদানি করা তৈরি পণ্যের, শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের এবং আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির। এর প্রতিফলন হয়েছে মূল্যস্ফীতিতে। শেখ হাসিনার আমলে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল, তার সঙ্গে তাল রেখে কর্মসংস্থান বাড়েনি। কার্যত হয়েছে জবলেস গ্রোথ।

মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি প্রবৃদ্ধির হার কমে আসার অর্থ দাঁড়িয়েছে আরও বেকারত্ব, ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থবিরতা, শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির হার অসন্তোষজনক হয়ে পড়া। সব মিলিয়ে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির গতিতে ভাটা দেখা দিয়েছে। মানুষের প্রকৃত আয় গত তিন বছর ধরে কমছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আয় বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে ৮ শতাংশ, কিন্তু মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ শতাংশের মতো। টাকার অঙ্কে যে আয় বাড়ে, তার পাশাপাশি যদি জিনিসপত্রের দাম আরও বেশি হারে বাড়ে, তাহলে প্রকৃত আয় কমে যায়।

বাংলাদেশে ২০২১-২২, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪-এ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৭.১০, ৫.৭৮, ৫.৮২ (প্রাথমিক হিসাব)। বর্তমান সরকার অর্থনীতির অবস্থা নিরূপণে যে কমিশন গঠন করেছে, তার রচিত শ্বেতপত্র অনুযায়ী প্রবৃদ্ধির এ হারগুলো ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হতো। শেখ হাসিনার আমলে এ কাজটি বেশ চতুরতার সঙ্গে করা হয়েছে এবং দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে যাচ্ছে। এখন তো বিবিএস’র পরিসংখ্যান তুল্য মূল্য যাচাই করে দেখতে হবে আসলে সে রকম অবস্থায় বাংলাদেশ পৌঁছেছে কিনা। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বিশ্লেষণ অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ৫টি বড় রকমের ঝুঁকি বিদ্যমান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে (১) উচ্চ মূল্যস্ফীতি (২) চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া। যেমন-বন্যা, উষ্ণ প্রবাহ, মাটি, পানি ও বায়ুদূষণ (৩) বেকারত্ব (৪) অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারিত না হওয়া এবং (৫) অর্থনীতিতে নিম্নগতি। অর্থাৎ মন্দা ও স্থবিরতা। বাংলাদেশে শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, কারণ জ্বালানি সংকট, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন। এসবের ফলে পণ্যের দাম বেড়েছে, প্রকৃত আয় হ্রাস পেয়েছে। শেখ হাসিনা উন্নয়নের বড়াই করতেন, অথচ তার উন্নয়নে বেকারত্ব এক তিল কমেনি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫০ বছরেরও আগে অর্থনীতিবিদ ডাডলি সিয়ার্স বলেছিলেন, যে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে কর্মসংস্থান বাড়ে না, দারিদ্র্য ঘোচে না এবং আয় বৈষম্য কমে না, তাকে উন্নয়ন বলা যায় না। শেখ হাসিনার আমলে এ তিনটি ক্ষেত্রে মহাবিপর্যয় ঘটেছে। আয় বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট হয়েছে। আয়ের সিঁড়ির সর্বনিম্ন ধাপের তুলনায় সর্বোচ্চ ধাপের আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২১ গুণ। আয় বৈষম্যের অপর একটি সূচক হলো জিনি সূচক। এ সূচক শূন্য থেকে একের মাঝামাঝি থাকে। শূন্য হলে বুঝতে হবে আয় বৈষম্য নেই। আর ১ হলে বুঝতে হবে আয় বৈষম্য চরমে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আমলে পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী এই সূচক ০.৫০ ছুঁই ছুঁই হয়েছে। সূচক যদি ০.৫০ হয়, তাহলে বুঝতে হবে আয় বৈষম্য বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এটিও একটি কারণ যে গণ-অভ্যুত্থানে মানুষের ক্ষোভ চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছিল।

মূল্যস্ফীতি, আয় বৈষম্য, বেকারত্ব, দারিদ্র্য প্রকট হওয়া সব মিলিয়ে অর্থনীতি যে একটি গভীর সংকটে রয়েছে, সে ব্যাপারে দ্বিমত পোষণের কোনো সুযোগ নেই। শেখ হাসিনার শাসনামলে অলিগার্কদের লালন-পালন ও পরিপুষ্টকরণ অর্থনীতি বৈষম্য প্রবল করেছে এবং অর্থনৈতিক পলিসির কার্যকারিতা চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, যার ফলে অনেকে শেখ হাসিনার শাসন আমলকে ‘চোরতন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন। সবার আগে এ মন্তব্য এসেছে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের কাছ থেকে। ব্যাংকগুলো থেকে অলিগার্করা ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং এ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। ব্যাংকগুলো ফোকলা হয়ে গেছে। বেসিক ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের মতো সুঠাম ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে গেছে এবং আমানতকারীদের অর্থের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। দেশের আর্থিক খাত চরম সংকটে পড়েছে। জ্ঞানী লোকরা বলেন, যদি একটি দেশকে ধ্বংস করতে চাও তাহলে সর্বাগ্রে ধ্বংস করে দাও সেদেশের আর্থিক খাত। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে হাসিনার আমলে তাই করা হয়েছে। একজন শাসক কত নিচে নামলে দেশের এত ক্ষতি করতে পারে।

দৈনিক প্রথম আলোতে একজন ব্যবসায়ী বলেছেন, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করেছে। প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম স্থিতিশীল রাখা। জাতীয় নির্বাচন হলে ব্যবসা ও বিনিয়োগে আরও আস্থা বাড়বে। সরকারের উচিত বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা করা। ইত্যবসরে ব্যবসা ও অর্থনৈতিক খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করা।

অতি সম্প্রতি আভাস পাওয়া গেছে, অনেক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট ও কর বাড়ানো হবে। এর ফলে জনগণের মধ্যে খুবই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কর বাড়ানোর ফলে মূল্যস্ফীতি আরও তেজি হয়ে উঠবে। জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠবে। সরকারের আয় সংকট আছে, তাই বলে পরোক্ষ কর বাড়ানো কেন? আয়করের জাল বিস্তৃত করে সরকার কি তার আয় বাড়াতে পারে না? আয়করের জাল বিস্তৃত করতে পারলে এবং কর ফাঁকি রোধ করতে পারলে একদিকে যেমন সরকারের আয় বাড়বে, অন্যদিকে তেমনি আয় বৈষম্যও হ্রাস পাবে। সরকারের উচিত রাজস্ব ও আর্থিক নীতির সু-সমন্বয় করে মূল্যস্ফীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম