Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

শতফুল ফুটতে দাও

বহুমাত্রিকতার এক অনন্য পুরুষ

ড. মাহবুব উল্লাহ্

ড. মাহবুব উল্লাহ্

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বহুমাত্রিকতার এক অনন্য পুরুষ

অধ্যাপক আনিসুর রহমান

গত ৫ জানুয়ারি রোববার দক্ষিণ-এশিয়া উপমহাদেশের অন্যতম খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আনিসুর রহমান ইহলোক ছেড়ে চলে গেছেন। রোববার দুপুরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।

অধ্যাপক আনিসুর রহমান গত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে সেগুনবাগিচার নিজ বাসভবনে নিভৃত জীবনযাপন করেছেন। কালেভদ্রে তার শুভানুধ্যায়ীরা তাকে দেখতে যেতেন। তবে তিনি খুব বেশি কথা বলতেন না। জীবনের শেষ দিকে এসে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই ৫ জানুয়ারি বেলা সোয়া ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

অধ্যাপক আনিসুর রহমানের জন্ম ১৯৩৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কেন্দুয়ায়। তার পিতা হাফিজুর রহমান ছিলেন পুলিশ বিভাগের বড় কর্মকর্তা এবং আইয়ুব খানের মন্ত্রিসভার সদস্য। অধ্যাপক আনিসুর রহমানের পিতা অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। সেই মেধাবী পিতার সন্তান আনিসুর রহমানও ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। তিনি অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন এবং সেখানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন। তার পিএইচডি থিসিসের বিষয়বস্তু ছিল আঞ্চলিক বৈষম্যের অর্থনীতি। তার থিসিসটি গাণিতিকভাবে খুবই সমৃদ্ধ ছিল। মাত্র ৬৪টি পৃষ্ঠার মধ্যে তিনি আঞ্চলিক বৈষম্যের কারণ এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির বিকাশের গতিসূত্র তুলে ধরেন। তার থিসিস সুপারভাইজার ছিলেন ওয়াসিলি রিয়নটিএফ। লিয়নটিএফ পরবর্তীকালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।

১৯৬৩ সালে আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হই, তখন এ বিভাগকে উজ্জ্বল করে রেখেছিলেন ত্রিরত্ন। তারা হলেন অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক আবু মাহমুদ এবং অধ্যাপক আনিসুর রহমান। তিনজনই ছিলেন হার্ভার্ডের পিএইচডি। বিদ্বৎ সমাজে এরা ছিলেন মশহুর। আমার অর্থনীতি বিভাগে ভর্তির ৩-৪ মাসের মধ্যে প্রফেসর নূরুল ইসলাম করাচিতে অবস্থিত পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্সের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ ছেড়ে চলে যান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি করাচি চলে যাওয়ায় বিভাগের প্রধানের পদটি খালি হয়। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন ড. ওসমান গণি। ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার দিক থেকে তিনি ছিলেন দক্ষিণপন্থি। বিভাগে জ্যেষ্ঠতার দিক থেকে অধ্যাপক নূরুল ইসলামের পরই ছিল প্রফেসর আবু মাহমুদের স্থান। স্বাভাবিক নিয়মে তারই বিভাগের প্রধান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ড. ওসমান গণি মার্কস্বাদী অর্থনীতিবিদ আবু মাহমুদকে বিভাগের প্রধান হিসাবে নিয়োগ দিতে চাচ্ছিলেন না। তিনি অধ্যাপক আনিসুর রহমানকে বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু অধ্যাপক আনিসুর রহমান উপাচার্য ড. ওসমান গণির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বললেন, অধ্যাপক আবু মাহমুদ তার তুলনায় জ্যেষ্ঠ এবং তার শিক্ষকও বটে। নৈতিক বিবেচনায় তিনি প্রফেসর আবু মাহমুদকে ডিঙিয়ে বিভাগের প্রধান হতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক আবু মাহমুদকেই বিভাগের প্রধান পদে নিয়োগ দান করতে বাধ্য হন। এভাবে প্রফেসর আনিসুর রহমান নীতি-নৈতিকতার দিক থেকে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। প্রায় নীতিবোধশূন্য আমাদের সমকালীন সমাজে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনের ঘটনা নেই বললেই চলে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক আবু মাহমুদকে হেনস্তা করার সুযোগ খুঁজছিল। একপর্যায়ে ১৯৬৬ সালে ড. কেটি হোসেন নামে একজনকে প্রফেসর আবু মাহমুদের চেয়ে বেশি বেতন দিয়ে বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে প্রফেসর আবু মাহমুদ ক্ষুব্ধ হন এবং মুনসেফ আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ইনজাংশন জারি করল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইনজাংশনের নির্দেশ অবজ্ঞা করায় আদালত অবমাননার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম ওসমান গণি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ও সিন্ডিকেট সদস্যদের আদালত অবমাননার অভিযোগে জেল ও জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। পাকিস্তানের ইতিহাসে এ মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। মামলার রায় যেদিন বের হয়, সেদিন সরকারপন্থি ছাত্র সংগঠন এনএসএফের পান্ডারা প্রফেসর আবু মাহমুদকে নির্দয়ভাবে লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে প্রহার করে। অধ্যাপক আবু মাহমুদ অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান এবং তাকে ২০ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। এ ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভাঙনের সুর বেজে ওঠে। অধ্যাপক আবু মাহমুদসহ নামকরা শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এতটাই বিষিয়ে উঠেছিল যে, বিবেকবান শিক্ষকের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া অসম্ভবই মনে হয়েছিল।

অধ্যাপক আনিসুর রহমান চলে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রের হনলুলুর ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারে আমন্ত্রিত ভিজিটিং স্কলার হয়ে। অধ্যাপক আনিসুর রহমানের মৃত্যুতে ড. এম এ মোমেন একটি দৈনিকে উপ-সম্পাদকীয় নিবন্ধে লিখেছেন, ‘আনিসুর রহমান তার দেশ ছাড়ার দিনক্ষণ কাউকে বলেননি। তবুও তেজগাঁও এয়ারপোর্টে সবিস্ময়ে দেখলেন আবু মাহমুদ তার বিপ্লবী ছাত্র মাহবুব উল্লাহকে নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন, তাকে বিদায় জানাতেই এসেছেন’। আনিসুর রহমান তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘পথে যা পেয়েছি’তে এ ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। পরের বছর অধ্যাপক আনিসুর রহমান পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সদ্য প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি অধ্যাপক পদে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সেরা ছাত্রদের স্কলারশিপ দিয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হতো। আইয়ুব খান স্বৈরশাসক হলেও ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমবেত করেছিলেন তৎকালীন পাকিস্তানের সেরা অধ্যাপকদের। অধ্যাপক আনিসুর রহমান ইসলামাবাদে যখন অধ্যাপনায় নিয়োজিত, তখন পূর্ব পাকিস্তানের দুই সেরা ছাত্র ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও সিদ্দিকুর রহমান ওসমানীকে পড়িয়ে ছিলেন। তারা উভয়েই ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হিসাবে দারুণ কৃতিত্বের পরিচয় দেন। সেখানে তার ছাত্রদের কাছ থেকে শুনেছি, অধ্যাপক আনিসুর রহমান সন্ধ্যার পর ছাত্রাবাসে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে অধিত বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতেন। এমন অন্তরঙ্গ পরিবেশে শিক্ষার্থীদের কাছে কঠিন বিষয়গুলো অত্যন্ত সহজবোধ হতো।

অধ্যাপক আনিসুর রহমান শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসনের কর্মসূচিকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে শানিত করে তোলেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আঞ্চলিক বৈষম্য নিয়ে তিনি যে থিসিস লিখেছিলেন, সেই থিসিস থেকে সূত্র নিয়ে তিনি ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি কীভাবে বাস্তব রূপ নিতে পারে, তার ব্যাখ্যা করেছেন। এর মধ্য দিয়েই তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। মুক্তিযুদ্ধে একজন সংগঠক হিসাবে প্রবাসে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। এ সময়ে তার মধ্যে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি কাজ করত। তিনি ভয় পেতেন পাকিস্তানি গোয়েন্দারা তাকে যে কোনো সময়ে হত্যা করতে পারে। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে তিনি সদস্যপদের জন্য বেতন-ভাতা নিতেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি এ দায়িত্ব পালন করে যান। তবে বছর দুয়ের মধ্যে তিনি পরিকল্পনা কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলেন এবং পরিকল্পনা কমিশন থেকে ইস্তফা দেন।

পরিকল্পনা কমিশন থেকে পদত্যাগের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা কাজে পরিপূর্ণভাবে মনোনিবেশ করেন। একপর্যায়ে সনাতনী অর্থনীতির অধ্যাপনা তার কাছে নিরর্থক মনে হয়। এমন মানসিক অবস্থায় তিনি থিয়োরিটিক্যাল ইকোনমিক্স নামে ভিন্ন ধরনের একটি অর্থনীতি বিভাগ গড়ে তোলার প্রয়াস নেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার প্রয়াসে অনুমোদন দিয়ে এগিয়ে আসে। ওই সময় তিনি আমাকেও ওই বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করতে চেয়েছেন। এমনই এক সময়ে ১৯৭৬ সালে তিনি একটি সেমিনারে যোগদানের জন্য ব্যাংকক গমন করেন। সেখান থেকে তিনি জানতে পারেন তাকে একটি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে। অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনাকালে এ সময় তিনি প্রতি সপ্তাহে সমাজতন্ত্রের ওপর সেমিনার আয়োজন করতেন। এ সেমিনারে ছাত্র ও সহকর্মীরা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেউ কেউ অংশগ্রহণ করতেন। তাদের মধ্যে ছিলেন নেদারল্যান্ডসের সাংবাদিক পিটার কাস্টার। পিটার কাস্টারই এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তারা জাসদের গণবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাষ্ট্রবিপ্লব ঘটাতে চেয়েছেন। বিচারে পিটার কাস্টারের কারাদণ্ড হয়েছিল। কিন্তু ডাচ সরকারের হস্তক্ষেপের ফলে পিটার কাস্টার কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে চলে যান।

এদিকে অধ্যাপক আনিসুর রহমান বিচারের আগেই ব্যাংকক থেকে আইএলও’র একটি চাকরি নিয়ে সুইজারল্যান্ডে চলে যান। সেখানে দীর্ঘকাল চাকরি করার পর অবসর নিয়ে দেশে চলে আসেন। অধ্যাপক আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে জিয়াউর রহমানের সরকার মামলা চালায়নি। অধ্যাপক আনিসুর রহমানের কিছু সুহৃদ তৎকালীন সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল আবুল মনজুরকে বোঝাতে সক্ষম হন যে, এ রকম একজন প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে মামলা চালানো সরকারের জন্য সুখকর হবে না। এ সময় তার সঙ্গে আমার নিয়মিত পত্রালাপ হতো। আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম, দেশে ফিরে এলে তার কোনো বিপদ হবে না। তিনি আশ্বস্ত হতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তিনি জেনেভায় আইএলও-তে থিতু হন।

এরপর তার চিন্তার জগতে বিরাট পরিবর্তন আসে। তিনি অর্থনীতি থেকে দূরে সরে যান। মনস্তত্ত্বসহ অর্থনীতিবহির্ভূত বিষয়গুলো নিয়ে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। এ পর্যায়ে তিনি কিছুদিন এক্সট্রা সেনসোরি পারসেপশন নিয়ে কাজ করেন। জেনেভাতে থাকাকালে তিনি পার্টিসিপেটোরি অ্যাকশন রিসার্চ এবং পার্টিসিপেটোরি ডেভেলপমেন্ট নিয়ে গবেষণার একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। এ পর্যায়ে তিনি ব্রাজিলের শিক্ষা-দর্শনবিদ পাওলো ফ্রেয়ার-এর চিন্তাধারা দ্বারা প্রভাবিত হন। ব্রাজিলিও এই শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক ছিলেন ক্রিটিক্যাল পেডাগজির একজন নেতৃস্থানীয় প্রবক্তা। এভাবে অধ্যাপক আনিসুর রহমান অর্থনীতিকে অতিক্রম করে জ্ঞানের এক ভিন্নজগতে প্রবেশ করেন। অবসর গ্রহণের পর দেশে ফিরে এসে তিনি বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতির পদও অলংকৃত করেছিলেন। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন তার সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেছেন, ‘আনিস যদি অব্যাহতভাবে অর্থনীতিশাস্ত্রের চর্চা করত, তাহলে সে আমার আগেই নোবেল পুরস্কার পেত।’ অধ্যাপক আনিসুর রহমান রবীন্দ্রসংগীতের চর্চা করতেন অত্যন্ত একাগ্রতার সঙ্গে। রবীন্দ্রনাথের প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা। বহুধাবিস্তৃত মেধার এ মানুষটিকে আমরা হারিয়ে আরও দরিদ্র হয়ে পড়েছি।

ড. মাহবুব উল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম