Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু দরকারি কথা

Icon

মো. মুজিবুর রহমান

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কিছু দরকারি কথা

ফাইল ছবি

হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালে (www.hajj.gov.bd) হজে গমনকারীর সংখ্যা এবং অন্যান্য নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেখানে হজযাত্রীদের ভাষাগত দক্ষতা সম্পর্কিত কোনো তথ্য থাকে না। ফলে হজযাত্রীদের কত অংশ শিক্ষিত কিংবা পড়ালেখা জানেন, তার কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। এমনকি কতজন হজযাত্রী ইংরেজি কিংবা আরবি ভাষা শুনে বুঝতে পারেন, ক্ষেত্রবিশেষে এ দুটি ভাষায় কথা বলতে পারেন, তা-ও জানা যায় না। যদিও হজ মৌসুমে পবিত্র মক্কা ও মদিনা নগরীতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার কাজে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে নিয়োগকৃত যেসব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাজ করেন, তাদের অধিকাংশই ইংরেজি ভাষা শুনে বুঝতে এবং কথা বলতে পারেন না। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের একটা বড় অংশ বাংলা ভাষাভাষী হওয়ায় হজযাত্রীদের সুবিধা হয়। কথা বলে জেনেছি, তাদের অনেকেই বাংলাদেশের নাগরিক, আবার কিছু কর্মী আছেন অন্য দেশের। মূলত ভাষাগত দুর্বোধ্যতার কারণে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের নানা ধরনের অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয়। এটাও ঠিক, বাংলাদেশের হজযাত্রীদের পক্ষে রাতারাতি আরবি ভাষায় কথা বলা রপ্ত করা সম্ভব নয় এবং এর খুব একটা প্রয়োজনও নেই। তবে ভাষাগত অসুবিধা নিরসনের লক্ষ্যে হজ এজেন্সিগুলোর পক্ষ থেকে হজযাত্রীদের নিয়ে সৌদি আরব গমনকারী মোয়াল্লেম ও গাইডদের আরবি ভাষায় ন্যূনতম জ্ঞান ও যোগাযোগ দক্ষতা নিশ্চিত করা দরকার।

অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যেসব মোয়াল্লেম ও গাইডের আরবি ভাষায় যোগাযোগ দক্ষতা রয়েছে, তাদের নেতৃত্বাধীন হজযাত্রীদের জন্য চলাফেরাসহ হজের অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ পালন সহজ হয়ে যায়। মক্কা নগরীতে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রায় প্রতি ওয়াক্ত নামাজ শুরুর আগে হজযাত্রীদের পবিত্র মাসজিদুল হারামে প্রবেশের ক্ষেত্রে নতুন নতুন নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। দেখা গেল, জোহরের নামাজের সময় যে পথ দিয়ে হারাম শরিফে প্রবেশ করেছেন, আসরের নামাজের সময় অনেক ক্ষেত্রে ভিড়ের কারণে ওই পথে আর প্রবেশ করা যাচ্ছে না। মাসজিদুল হারাম থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রেও প্রায় প্রতিবার ভিন্ন ভিন্ন পথ ব্যবহার করতে হয়। এটি সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে এবং ভিড় এড়ানোর উদ্দেশ্যেই করা হয়ে থাকে বলে জানা গেছে। অনেকেই পুলিশ কিংবা দায়িত্বরত নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে কিছু তথ্য জানতে চেয়ে প্রত্যুত্তরে যা শোনেন, তা দিয়ে নিজের ভাষায় কিছুই বুঝতে পারেন না। এ ধরনের পরিস্থিতি ফজরের নামাজের সময় আরও অনেক বেশি হয়ে থাকে। ফলে অনেকের হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।

আমি নিজেও এ বছর হজ পালন করতে গিয়ে একাধিকবার হারিয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের থাকার হোটেল ছিল পবিত্র হারাম শরিফের অদূরে মিসফালাহ এলাকায়। একদিন ফজরের নামাজের আগে যখন হোটেল থেকে বের হয়ে ইবরাহিম আল খলিল স্ট্রিট ধরে হারাম শরিফে প্রবেশের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, ততক্ষণে হারাম শরিফ হজযাত্রীদের আগমনে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। ভেতরে প্রবেশ করার আর সুযোগ নেই। নিরাপত্তারক্ষীরা প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। তখন নিরাপত্তাকর্মীরা বিপুলসংখ্যক হজযাত্রীকে খলিল স্ট্রিট দিয়ে হারাম শরিফের নতুন এক্সটেনশন ভবনের দিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কেউ ইচ্ছা করলেও জনস্রোত উপেক্ষা করে পেছনের দিকে সহজে ফিরে আসতে পারবেন না। অর্থাৎ ইচ্ছা না থাকলেও মূল হারাম শরিফ থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত ওই এক্সটেনশন ভবনেই যেতে হবে। এদিকে ফজরের নামাজের আজান শুরু হতে আর বেশি দেরি নেই। অগত্যা আমি অন্য সবার সঙ্গে অর্থাৎ ভিড়ের মধ্যে চাপে পড়ে ওই এক্সটেনশন ভবনের দিকে যেতে থাকলাম। ভেতরে প্রবেশ করার পর চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে তিনতলায় উঠে যেতে হলো। সেখানে গিয়ে ফজরের নামাজের অপেক্ষায় বসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আজান হয়ে গেল। এরপর শুরু হলো নামাজ। নামাজ শেষে বের হওয়ার পালা। কিন্তু চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এসে দেখি, যে পথ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছিলাম, বের হওয়ার সেই পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হজযাত্রীদের অন্য দিক দিয়ে বের হওয়ার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে হাতের ইশারায় পথ দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। লাখো মানুষের চাপে কিছুক্ষণ থমকে দাঁড়িয়ে থেকে একসময় ধীরে ধীরে সবাই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। সামনে যাওয়ার সময় বেশ বুঝতে পারলাম, যে পথ দিয়ে মসজিদের ভেতরে ঢুকেছিলাম, বের হওয়ার পথ সেটা নয়। কিন্তু আমার কিছুই করার ছিল না। সবাইকে সামনের দিকেই যেতে হচ্ছে। একটি জায়নামাজ এবং পানিভর্তি একটি বোতল ব্যাগের ভেতরে নিয়ে পিঠে ঝুলিয়ে অনেকক্ষণ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলাম, আর ভেতরে ভেতরে কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়ছিলাম। অপরিচিত রাস্তা ধরে এভাবে অনেক দূর যাওয়ার পর পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক বাংলাভাষী পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাছে জানতে চাইলাম, আমি কোন পথে মিসফালাহ এলাকায় যাব? ওই কর্মী উত্তরে যা জানালেন, তাতে আমি আরও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়লাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনি উলটো পথে চলে এসেছেন। আপনাকে পেছনের দিকে যেতে হবে, কিন্তু এখন যেতে পারবেন না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। এরপর যাওয়ার রাস্তাও খুলে দেবে। আমি বললাম, আমি ইচ্ছা করে আসিনি। আমি যে পথ দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করেছিলাম, সেই পথে বের হতে পারিনি। নামাজ শেষে এসে দেখি, ওই পথ পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে আমিসহ অনেকেই অন্য সবার সঙ্গে এ পথে আসতে বাধ্য হয়েছি। তখন তিনি আমাকে বললেন, আপনি যদি অপেক্ষা না করে এখনই যেতে চান, তাহলে এই একই পথে আরও কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে যান। কিছু দূর গিয়ে দেখবেন এই টিনের বেড়া যেখানে শেষ হয়েছে, তার অপর পাশ দিয়ে উলটো দিকে আসার রাস্তা রয়েছে। আপনি টিনের বেড়াঘেঁষে ওই রাস্তা দিয়ে ঘুরে আবার পেছনের দিকে আসবেন। এভাবে হাঁটতে থাকলে আপনি একসময় আপনার হোটেলের এলাকায় যেতে পারবেন। তার কথামতো আমি কিছুটা নির্ভয়ে হাঁটতে লাগলাম। মনে মনে ভাবলাম, হাঁটতে থাকি, দেখি কোথায় যাই! শেষ করণীয়, পুলিশের পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ তো আছেই। সময়টা ফজরের নামাজের পরপর হওয়ায় হাঁটতে আমার কাছে বেশ ভালোই লাগছিল। এরপর একসময় খলিল স্ট্রিটের দেখা পেয়ে ওই পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে হোটেলে ফিরে এলাম।

অন্য আরেক দিনের ঘটনা। পবিত্র হজ পালনকালে শেষদিনের মতো জামারায় কংকর নিক্ষেপ করে মক্কায় অবস্থিত হোটেলের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। কিছুক্ষণ হেঁটে আসার পর এতটাই ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত ছিলাম যে সেদিন আর পা দুটো যেন একদম চলছিল না। একদিকে প্রখর রোদ, অন্যদিকে প্রচণ্ড গরম, সেই সঙ্গে খাবার পানিরও অভাব। পিঠে ঝোলানো চার-পাঁচ কেজি ওজনের ব্যাগ। এসব নিয়ে হাঁটতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। হাতে ধরে রাখা ছাতাও রোদের তাপ রোধ করতে পারছিল না। তারপর অনেকক্ষণ হেঁটে কিছু দূর আসার পর পথের পাশে বসে পড়লাম। খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে পরে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জনপ্রতি কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে একটি মাইক্রোবাসে উঠে পড়লাম। হজের মৌসুমের এ সময়টাতে ভাড়ায় গাড়িও সচরাচর পাওয়া যায় না। আমার সঙ্গে আরও দুজন হজযাত্রী রয়েছেন। তাদেরসহ আমরা মাইক্রোবাসে হারাম শরিফের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। জামারা থেকে হারাম শরিফ খুব বেশি দূরে নয়। হারাম শরিফে আসতে পারলে আমরা হোটেলে যেতে পারব। কিন্তু লাখো হজযাত্রী পথজুড়ে হেঁটে চলার কারণে গাড়িগুলো খুবই ধীরগতিতে চলছিল। একসময় আমাদের নিয়ে এসে মাইক্রোবাসটি একটি সুড়ঙ্গ দিয়ে ঢুকে পড়ল। আরও কিছুক্ষণ চলার পর উড়াল সড়কের নিচে হারাম শরিফের ভেতরে প্রবেশ পথের কিছুটা দূরে একটি চলন্ত সিঁড়ির কাছে নামিয়ে দিল। আমরা এ পথে কোনোদিন যাতায়াত করিনি। সম্পূর্ণ অচেনা। যেখানে নামলাম, সেটি সমতল ভূমি নয়। মনে হলো, মাইক্রোবাস থেকে আন্ডারগ্রাউন্ডে নামলাম। কিছুটা ভয়ও পেয়ে বসল। আমার রুমমেট দুজন শুধু আমাকে অনুসরণ করছেন, আর মাঝেমধ্যে সবাই পরামর্শ করছি। মাইক্রোবাস থেকে নেমে চলন্ত সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম। এরপর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পিছিয়ে এলাম। মনে হলো, সিঁড়ি দিয়ে একবার উপরের দিকে উঠতে শুরু করলে হয়তো নিয়ে যাবে হারাম শরিফের চারতলায় বা ছাদে। তাহলে ক্লান্ত শরীর নিয়ে আরেক বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। এরপর আবার রাস্তায় চলে এলাম, যেখানে মাইক্রোবাস থেকে নেমেছিলাম সেখানে। একটু সামনে একজন পুলিশকে দেখে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলাম, মিসফালাহ এলাকায় আমাদের হোটেলে যেতে হলে কোনদিকে যাব। কারণ সড়কে ডিভাইডার দেওয়া সমান্তরাল দুটি পথ একটু সামনে গিয়ে দুদিকে চলে গেছে। মনে হলো, পুলিশ আমার কথা কিছুই বুঝতে পারেননি। শুধু বুঝে নিয়েছে, আমরা এখান থেকে বের হতে চাই। তারপর তিনি আমাদের ডানদিকের পথ ধরে যেতে ইশারা করলেন। আমরা ভয়ে ভয়ে সেদিকেই চললাম। এভাবে পাহাড়ি পথে ক্লান্ত শরীর নিয়ে দুলতে দুলতে কিছুক্ষণ হেঁটে উপরের দিকে যাওয়ার পর কিছুটা সমতল জায়গায় এসে আরেকজন পুলিশকে দেখলাম। এবার ব্যাগ থেকে আমাদের হোটেলের কার্ড বের করে তাকে দেখালাম। তিনি তার হাতে থাকা অনলাইন ডিভাইসে হোটেলের অবস্থান দেখে আমাদের কোন পথে যেতে হবে, তা দেখিয়ে দিলেন। পুলিশের নির্দেশিত পথে আমরা আরও কিছুক্ষণ হাঁটার পর হোটেল এলাকার পরিচিত সড়ক দেখতে পেয়ে উৎসাহ নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তিনজনই একসময় হোটেলে চলে এলাম। হোটেলের নাম-ঠিকানাসংবলিত কার্ড ব্যাগে রাখার কারণে সেদিন আমাদের হারিয়ে যাওয়ার পর পুলিশের সহায়তায় হোটেল খুঁজে পেতে বেশি বেগ পেতে হয়নি। এ কারণে হাজিদের সঙ্গে সবসময় হোটেলের ঠিকানা লেখা কার্ড রাখা জরুরি।

মুশকিল হলো, মক্কার হারাম শরিফ কিংবা মদিনার মসজিদে নববি চত্বরে যেসব পুলিশ বা নিরাপত্তারক্ষী দায়িত্ব পালন করেন, তাদের বেশিরভাগ ঠিকমতো ইংরেজিও বুঝতে পারেন না। এ দিকটিতে যাতে সৌদি সরকার সুদৃষ্টি দেয়-এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। প্রয়োজনে তাদের দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য ইংরেজি শেখানোর দায়িত্বও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া যেতে পারে। কারণ, ইংরেজি শেখানোর জন্য আমাদের যথেষ্ট দক্ষ প্রশিক্ষক রয়েছেন বলে আমার জানা আছে। এর বাইরে বিশেষ করে মিনা, আরাফাত ময়দান ও মুজদালিফায় হাজিদের দীর্ঘ সময় লাইন ধরে অপেক্ষায় থেকে সীমিত সময়ের মধ্যে ওয়াশরুম ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে অবর্ণনীয় কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়, সেদিকেও সৌদি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা দরকার।

হজে যাওয়ার আগে হজ প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু কথা উল্লেখ করতে চাই। বাংলাদেশ থেকে জেদ্দা বা মদিনার উদ্দেশে প্রায় ৬ ঘণ্টারও বেশি বিমানযাত্রায় হজযাত্রীদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকে। মূল আপ্যায়নের অংশ হিসাবে চা, কফি বা ফলের জুস চাহিদামতো কেবিন ক্রুরা সরবরাহ করেন। বিমানে প্রতি যাত্রীর সামনের আসনের পেছনের দিকে একটি করে ট্রে সংযুক্ত থাকে। খাবার খাওয়ার পর ব্যবহৃত প্লেট, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি ওই ট্রেতেই রেখে দেওয়ার নিয়ম। এরপর কেবিন ক্রুরা প্রত্যেকের আসন থেকে ওগুলো উঠিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু কেবিন ক্রুরা একাধিকবার বলার পরও আমাদের অনেকেই চা, কফি বা জুসের ছোট গ্লাসগুলো বিমানের ভেতরে যাতায়াতের সংকীর্ণ পথে রেখে দেন। এতে কেবিন ক্রুদের হাঁটু ভাঁজ করে খানিকটা নিচু হয়ে বসে গ্লাসগুলো তুলে নিতে হয়, যা তাদের জন্য বেশ কষ্টদায়ক। আবার হজযাত্রীদের অনেকেই একসঙ্গে একজন ক্রুকেই চা, কফি বা জুস দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাতে থাকেন। এর ফলে সবার প্রতি একইসঙ্গে রেসপন্স করা সম্ভব নয়। একবার এ রকম পরিস্থিতিতে একজন কেবিন ক্রু বললেন, ‘I will serve one after another. Only two hands!’ ওই কেবিন ক্রুর এমন ঝাঁজালো বক্তব্য শুনে বেশ বুঝতে পারলাম, তাকে একসঙ্গে একাধিক যাত্রী কোনো কিছুর জন্য অনুরোধ করায় তিনি যথেষ্ট বিরক্ত হয়েছেন। দেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে হজ প্রশিক্ষণে এসব বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত বলে মনে করি।

মো. মুজিবুর রহমান : অধ্যাপক ও সাবেক অধ্যক্ষ, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (মহিলা), ময়মনসিংহ

mujibur29@gmail.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম