Logo
Logo
×

উপসম্পাদকীয়

জ্বালানি প্রাপ্তি জনগণের মৌলিক অধিকার

Icon

ড. এম শামসুল আলম

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জ্বালানি প্রাপ্তি জনগণের মৌলিক অধিকার

চাহিদামতো জ্বালানি সরবরাহ পাওয়া জনগণের মৌলিক অধিকার। অবশ্য অনেকেই জ্বালানি পাওয়ার অধিকারকে প্রত্যক্ষভাবে জনগণের মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দিতে চান না। কারণ জ্বালানি সরাসরি মানুষের মৌলিক অধিকার (অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান) নয়। বরং জ্বালানি মানুষের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও এর অবদান অনেকটাই পরোক্ষ। তবে জ্বালানি মানুষের প্রত্যক্ষ মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। প্রতিটি উৎপাদন কার্যক্রমে জ্বালানির অপরিহার্যতা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। এমনকি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও জ্বালানির অবদান অনস্বীকার্য। জ্বালানি সম্পদ পাওয়ার অধিকার যে দেশের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার এবং এর মালিকানা যে নাগরিকদের, তা আমাদের সংবিধান কর্তৃক সুস্পষ্টভাবে স্বীকৃত হয়েছে। কাজেই আমরা সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটা দাবি করতে পারি যে, জ্বালানি খাতের ওপর রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের মালিকানা রয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে এ ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কী? অথবা সরকার কি জ্বালানি খাতের মালিক নয়? না সরকার কোনোভাবেই জ্বালানি সম্পদের মালিক নয়। সরকার জনগণের পক্ষ থেকে জ্বালানি খাতের সুরক্ষা বিধান করবে, জনগণের জন্য জ্বালানি সরবরাহের সর্বোত্তম ব্যবস্থা করবে। সরকার জ্বালানি খাতের মালিক নয়, আমানতদার মাত্র। তাই সরকারকে জ্বালানি খাতের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত অথবা কার্যব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে এ খাতের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থের চেয়ে জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। সরকার এটা করতে ব্যর্থ হলে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। জ্বালানি খাতসংক্রান্ত যেসব চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়, তার দায়-দায়িত্ব সরকারের। কোনো চুক্তি যদি দেশের জনগণের স্বার্থের পরিপন্থি হয়, তাহলে সে দায়ভার নিতে হবে সরকারকেই। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার দায়বদ্ধতার এ বিষয়টি বিভিন্নভাবে নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অবজ্ঞা করে চলেছেন। এটা মারাত্মক অন্যায় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকার চাইলে তার দায়বদ্ধতাকে আইনি মারপ্যাঁচে সুরক্ষা দিতে পারে। কিন্তু সেটা কোনো আদালতেই গ্রহণযোগ্য হবে না। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, সময় কখনোই অপরাধের দায়মুক্তি দেয় না। কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে শত বছর পরও তার বিচার হতে পারে।

সরকার জ্বালানি সম্পদকে রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য ও সমর্থনে লেনদেন করলেও সেখানে জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে কতিপয়ের দুর্ভেদ্য অধিকার বা অলিগার্ক সৃষ্টি করে রেখেছে। এটা ভঙ্গ করার সাধ্য কারও নেই। যদি সাধারণ মানুষ আন্দোলনমুখী হতে পারে, তাহলেই কেবল এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানো যেতে পারে। উল্লেখ্য, সরকার তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে তার অথবা সরকারসমর্থিত মহলবিশেষের স্বার্থের অনুকূলে যে কোনো আইন তৈরি করতে পারে। সে আইনের সুবিধা ব্যবহার বা ভোগ করতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে একদিন না একদিন তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসীন হয়, তখন সারা দেশে তীব্র জ্বালানি সংকট বিরাজ করছিল। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কলকারখানা তথা উৎপাদন সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত সবাই বিশেষভাবে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে পড়েছিল। তারা চাহিদামতো গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলের সরবরাহ পাচ্ছিল না। গ্যাসের অনুসন্ধান ও উৎপাদন কার্যত বন্ধই ছিল। অবস্থা এমন হয়েছিল যে, জ্বালানি পাওয়ার জন্য মানুষ দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতেও কুণ্ঠাবোধ করত না। জ্বালানির জোগান চাহিদার তুলনায় অনেক কম হওয়ার কারণে ভুক্তভোগীরা যে কোনো মূল্যেই হোক জ্বালানির জোগান পেতে ছিল মরিয়া। এ অবস্থায় দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় যত দ্রুত সম্ভব জ্বালানি সংকট দূরীকরণের জন্য কার্যকর ও বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সে সময় মানুষ জ্বালানি প্রাপ্তির বিপরীতে ছোটখাটো অন্যায় বা আইনবহির্ভূত পদক্ষেপকেই অনুমোদন দিতে রাজি ছিল। এ বিষয়টি উপলব্ধি করে তৎকালীন সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। তৎকালীন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এটা প্রয়োজন ছিল।

বিগত সরকার জ্বালানি সংকট নিরসনের লক্ষ্যে রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের জন্য ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের অনুমতি প্রদান করে। এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বা ব্যবহার করে ব্যক্তি খাতে প্রচুরসংখ্যক পাওয়ার প্লান্ট স্থাপিত হতে থাকে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, পাওয়ার প্লান্টগুলো স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা সম্পূর্ণ ব্যবহার করা যায়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টগুলোর স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ছিল দেশের সার্বিক চাহিদার চেয়ে বেশি। এসব রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টকে বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। এ ক্যাপাসিটি চার্জ রাষ্ট্রীয় কোষাগার তথা জনগণের ট্যাক্সের অর্থ দিয়ে পরিশোধ করতে হয়। রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা কোনোভাবেই চ্যালেঞ্জযোগ্য নয়। এমনকি সাধারণ মানুষ এসব চুক্তির শর্তাবলি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানতে পারছে না। সাধারণ মানুষ, যারা জ্বালানি খাতের একচ্ছত্র মালিক, তাদের অন্ধকারে রেখে যে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর গর্হিত অন্যায় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিগত সরকার জ্বালানি খাত নিয়ে এতকিছু করার পরও এ খাতের অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। বরং জ্বালানি খাতের পরিস্থিতি আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বিগত সরকারের মুনাফালোভী মনোভাব এবং অদূরদর্শী নীতিমালাই প্রধানত দায়ী। সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী, যিনি একজন ব্যবসায়ী, তার বিরুদ্ধে জ্বালানি খাত থেকে লুটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যারা জ্বালানি সরবরাহ ও নিয়ন্ত্রক বিভন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে কর্মরত আছেন, তাদের অনেকেই এ খাত থেকে অর্থ লুটে নিয়ে নিজেদের বিত্ত-বৈভব বৃদ্ধি করেছেন। জ্বালানি খাতের লুটকৃত অর্থ সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলেও পৌঁছে যেত বলে অভিযোগ রয়েছে।

জ্বালানিপণ্য কোনো ব্যবসায়িক পণ্য হতে পারে না। এটা জনগণের নিত্যপণ্যের অন্তর্ভুক্ত এবং এর প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকার শতভাগ মানুষের জন্য বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার দাবি করছেন। তারা এ সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আড়ম্বরের সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইস্যুটি উদযাপন করেছেন। কিন্তু এর বিপরীতে আমরা কি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জোগান পেয়েছি? শতভাগ মানুষের জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার দাবি করা এক জিনিস আর সবার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জোগান নিশ্চিত করা আরেক। চাহিদার তুলনায় জোগান কম হওয়ার কারণে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করা হলেও জনগণ বাধ্য হয়ে তা মেনে নিচ্ছেন। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের সংকট তীব্রতর হয়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অনেক দেশ রাশিয়া থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল ক্রয় করতে পারেনি। বিশ্বে প্রতিবছর যে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল উত্তোলন ও বিপণন করা হয়, তার ১ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। এর প্রভাব পড়ে আন্তর্জাতিক বাজারে। জ্বালানি তেলের স্বাভাবিক জোগান বিঘ্নিত হওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়ে। প্রতিটি দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি সাংঘাতিকভাবে বৃদ্ধি পায়। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতির বিগত ৪০ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করে ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতেও জ্বালানি তেলের উচ্চ মূল্যবৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব লক্ষ করা যায়। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির গড় হার গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সাড়ে ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে উচ্চ মূল্যস্ফীতির পেছনে নানা কারণ থাকলেও সবচেয়ে বড় প্রভাবক হিসাবে কাজ করছে জ্বালানি পণ্যের উচ্চমূল্য। আমাদের দেশে একটি প্রবণতা প্রত্যক্ষ করা যায়, তা হলো, কোনো সময় আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের মূল্য সামান্য বৃদ্ধি পেলে সেই অজুহাতে স্থানীয় বাজারে পণ্যটির মূল্য আনুপাতিক হারের চেয়েও বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু কোনো সময় আন্তর্জাতিক বাজারে একটি পণ্যের মূল্য হ্রাস পেলেও অভ্যন্তরীণ বাজারে তার কোনো ইতিবাচক প্রভাব প্রত্যক্ষ করা যায় না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে সর্বশেষ অভ্যন্তরীণ বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়। সে সময় বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ উত্থাপিত হলে সরকারিভাবে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পেলে অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য ‘সমন্বয়’ করা হবে। এখানে কথার ম্যারপ্যাঁচ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস পেলে মূল্য সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মূল্য হ্রাস করা হবে, তা বলা হয়নি। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই সীমিত আয়ের মানুষ। তারা এখনো কার্যত জ্বালানি শক্তির ওপর নির্ভরশীল। কোনো কারণে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেলে তাদের আর্থিক দুরবস্থা বৃদ্ধি পায়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে স্থানীয় বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ব্যাপকভাবে বাড়ানো হলেও আন্তর্জাতিক বাজারে যখন জ্বালানি তেলের মূল্য ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে, তখন স্থানীয় বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য সেভাবে কমানো হয়নি। কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি হয়েছে ৬৪ মার্কিন ডলারে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে এটাই জ্বালানি তেলের সর্বনিম্ন মূল্য। জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য আরও হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আগেই বলা হয়েছে, জ্বালানি মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। কাজেই যে কোনোভাবেই হোক, সহনীয় মূল্যে জনগণকে জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে। জ্বালানি সরবরাহের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো কোনো মুনাফাখোর প্রতিষ্ঠান নয়। তাই প্রয়োজনে লোকসান দিয়ে হলেও তুলনামূলক স্বল্পমূল্যে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে জ্বালানির জোগান নিশ্চিত করতে হবে। অনেক সময় বলা হয়, জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের লোকসান হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় সাধারণ মানুষের অর্থে এবং তা সাধারণ মানুষের কল্যাণে। সেখানে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে মুনাফা অর্জনের কোনো যুক্তি কি থাকতে পারে? আগে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কাউন্সিলের (বিইআরসি) মাধ্যমে গণশুনানি করে জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করা হতো। এতে স্টেকহোল্ডাররা তাদের মতামত তুলে ধরার সুযোগ পেতেন। নানা প্রশ্ন উত্থাপনের অবকাশ পেতেন। কিন্তু বিগত সরকারের আমলের শেষের দিকে বিইআরসির গণশুনানি পদ্ধতি বাতিল করে নির্বাহী আদেশে জ্বালানির মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা করা হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এর মাধ্যমে জ্বালানি খাতে অবাধ লুণ্ঠনের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।

বিগত সরকারের জ্বালানিনীতির অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল কতিপয় মহলকে অর্থ লুণ্ঠনের সুযোগ করে দেওয়া। ছাত্র আন্দোলনের ফলস্বরূপ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পেয়েছে। তারা নিশ্চয়ই আগের সরকারের মতো জ্বালানি খাতে মুনাফাখোর চরিত্র ধারণ করতে পারেন না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চেতনা হচ্ছে সব ক্ষেত্রে অসমতা ও বৈষম্য দূরীকরণ। আর এটা প্রথমেই জ্বালানি খাত থেকে শুরু করতে হবে। জ্বালানি খাতে প্রতিযোগিতা অনুপস্থিত থাকার কারণেই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কাজেই এ খাতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। (অনুলিখন : এম এ খালেক)

ড. এম শামসুল আলম : জ্বালানি বিশেষজ্ঞ; অধ্যাপক, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম