শতফুল ফুটতে দাও
সবাই উপাচার্য হতে চায়
গত ৭ অক্টোবর সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা প্রফেসর ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখন শিক্ষার্থীদের পড়ানোর পরিবর্তে উপাচার্য বা উপ-উপাচার্য হতে বেশি আগ্রহী।
তিনি বলেছেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়তো ৩০০, ৪০০ বা ৫০০ শিক্ষক আছেন; কিন্তু তারা সবাই কেন উপাচার্য হতে চান, আমি বুঝি না। তিনি আরও বলেছেন, আমি সবসময় একজন ভালো শিক্ষক হতে চেয়েছি, উপাচার্য হতে চাইনি। প্রফেসর ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ উপর্যুক্ত মন্তব্যের পাশাপাশি আরও দু-একটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। সেই কথাগুলো নিঃসন্দেহে জনগুরুত্বপূর্ণ। তবে উলিখিত মন্তব্যের তুলনায় আপেক্ষিকভাবে কিছুটা কম গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ধসে পড়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এ ধস এড়াতে পারেনি। স্বাধীনতা-উত্তরকালে শিক্ষার জন্য বাজেট বরাদ্দ কখনোই কাম্য স্তরে পৌঁছাতে পারেনি। প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে শিক্ষকের সংখ্যাও। শিক্ষার এ পরিমাণগত বৃদ্ধি শিক্ষার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। একজন শিক্ষার্থী শিক্ষার যে স্তরেই থাকেন না কেন, তার জ্ঞানার্জন শিক্ষার স্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না। এর ফলে যে জনশক্তি সৃষ্টি হচ্ছে, তার পক্ষে জাতীয় উন্নয়নে কাক্সিক্ষত ভূমিকা রাখা সম্ভব হয় না।
স্বাধীনতার পরপর দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ছয়টি। এর মধ্যে ছিল বুয়েট ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সময় কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ শূন্য হলে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া সরকারের জন্য কঠিন কোনো কাজ ছিল না। অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, অধ্যাপক ইন্নাস আলী, ড. এনামুল হক ও ড. সারোয়ার মুর্শেদির মতো বিদ্বান ও পণ্ডিত ব্যক্তিরা উপাচার্যের পদ অলংকৃত করেছিলেন। উপাচার্যের পদ পাওয়ার জন্য কোনো ধরনের ইঁদুরদৌড় আমরা লক্ষ করিনি। স্বাভাবিকভাবেই জনমনে একটা বিশ্বাস ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অত্যন্ত জ্ঞানী ও মর্যাদাবান ব্যক্তি। তাদের সবাই পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখত। কালের প্রবাহে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন ৫০-এরও বেশি। এত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় একসঙ্গে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া সরকারের জন্য যে একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ, তাতে সন্দেহ নেই। এ নিয়োগ একদিকে হতে হবে রাজনৈতিকভাবে সঠিক এবং এর পাশাপাশি হতে হবে যথাযোগ্য। প্রফেসর ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ উপদেষ্টা হিসাবে কিছু বিলম্বে নিয়োগ পান। তাকে দুটি মন্ত্রণালয় -শিক্ষা ও পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগের পর তিনি একজন অর্থনীতিবিদের কাছে মন্তব্য করেছিলেন, এত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য উপাচার্যসহ বড় বড় পদে কীভাবে নিয়োগ দেওয়া যায়, সেটাই তার জন্য মহা দুশ্চিন্তার কারণ।
২০২৪-এর জু ল্লাই অভ্যুত্থানের পর দেখা গেল রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে। এগুলোকে মেরামত করে সচল করা অসাধ্য সাধন হবে। জু ল্লাই অভ্যুত্থানের পর একে একে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলোর উপাচার্য এবং অন্য উচ্চপদে নিযুক্ত ব্যক্তিরা পদত্যাগ করতে শুরু করেন। শুধু পদত্যাগই নয়, তাদের মধ্যে অনেকে দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদের দোসর হওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন, এমন ধারণা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচ্চ পদধারীদের মধ্যে সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। অনেকে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে আ ত্মগোপনে চলে গেলেন, আবার কেউ কেউ দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে গেলেন। সরকারের পুলিশ বিভাগের অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে পড়েছিল। দেড় ল্লাখ পুলিশ কর্তব্যস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যান। এর ফলে আইনশৃঙ্খ ল্লা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। সেনাবাহিনী ও বিজিবি দিয়ে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে আমাদের ভাগ্য ভালো যে, বড় ধরনের কোনো আইনশৃঙ্খ ল্লা সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। ধীরে ধীরে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ কর্মস্থলে ফিরে আসে। স্বীকার করতে হবে, এ পুলিশদের মনোবল ভাঙাচোরা। ফ্যাসিস্ট সরকারের হুকুম মানতে গিয়ে এরা যেভাবে মানুষ হত্যা করেছে, সেটা ভেবেই তারা কর্মস্থলে থেকে জনগণের মুখোমুখি হতে সাহস পায়নি। এমন ঘটনা দেশের ইতিহাসে অতীতে আর কখনো ঘটেনি। এদেশে আরও অনেক গণ-আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, কিন্তু সেগুলোর পরে রাষ্ট্রযন্ত্রের খুঁটিগুলো ভেঙে পড়েনি অথবা কাত হয়ে পড়ার উপক্রম হয়নি। সাড়ে ১৫ বছরে এদেশে যে রক্তপিপাসু ফ্যাসিবাদী শাসন চলেছে এবং ক্ষমতা পরিপূর্ণভাবে এক মহি ল্লার হাতে কুক্ষিগত হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে অকল্পনীয় কিছু ঘটে যাওয়া অসম্ভব কিছু ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যসহ উচ্চ পদধারী ব্যক্তিরা ফ্যাসিবাদের সেবা করতে গিয়ে মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছিলেন। তারা ক্যাম্পাসগুলোয় ছাত্রলীগের সব ধরনের অপকর্মের প্রতি প্রশ্রয়শীল ছিলেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। যখন সেনাবাহিনী ডাকা হয়েছিল এবং কারফিউ দেওয়া হয়েছিল, তখন ওবায়দুল কাদের সদম্ভে বলেছিলেন, দেখামাত্র গুলি করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সরকার সমর্থক অংশ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হাম ল্লা থামাতে কোনো উদ্যোগই তারা গ্রহণ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তখন পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতিত হতে সহায়তা করেছে। যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলো এবং তিনি ভারতে পালিয়ে গেলেন, তখন তার সেবাদাস ও দাসীরা কেউই ভাবতে পারেনি তারা নিরাপদ থাকবেন। এ কারণে তাদের প্রায় সবাই কর্তব্যস্থল ত্যাগ করে আ ত্মগোপনে চলে গেলেন। একসঙ্গে এত বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদগুলো খালি হয়ে যাওয়ার পর সেই পদগুলো পূরণ করা সত্যিই একটি কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়াল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। স্বাভাবিকভাবেই তারা চেয়েছেন যাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচ্চপদে নিয়োগ দেবে, তাদের যেন কোনো ধরনের উৎকট রাজনৈতিক পরিচয় না থাকে এবং তাদের যেন ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতাও না থাকে। এসব শর্ত পূরণ করা ছিল অত্যন্ত দুরূহ। কারণ স্বাধীন বাং ল্লাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাজনৈতিক দলের ভিত্তিতে বিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এ ধরনের রাজনৈতিক মেরূকরণ অনেক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। দলীয়করণের ফলে মেধা নয়, দলীয় আনুগত্যই প্রাধান্য পেতে শুরু করে। দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার মানে ধস নামে। অনেক সময় বিজ্ঞাপিত পদের সংখ্যার তুলনায় বেশি করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭৩-এর বিশ্ববিদ্যালয় আইন যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকর হয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বলতে গেলে বছরজুড়ে নানা ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে থাকে। বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দলীয় শক্তি মজবুত করতে গিয়ে টিচার রিক্রুট নয়, ভোটার রিক্রুট করতে শুরু করে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার নিজস্ব রাজনৈতিক বিবেচনায় এমন ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিতে শুরু করল, যারা শিক্ষকদের দায়িত্ব থেকে দূরে সরে গিয়ে রাজনৈতিক ক্যাডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তারা নির্ধারিত কোর্স পড়ানোর জন্য যোগ্য নন। তাদের কোনো কোর্স পড়াতে দিলে তারা বলে উঠেন নির্ধারিত কোর্সটি তারা পড়াতে সক্ষম নন। ফলে শিক্ষকতার দায়দায়িত্ব পালন না করে তারা মাসের শেষে বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। ভয়াবহ এক অনৈতিকতা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গ্রাস করতে চলেছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭৩-এর আইন প্রযোজ্য নয়, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ ল্লানুগত উপাচার্যরা তাদের পছন্দের রাজনৈতিক দলের সমর্থকদেরই শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। সাড়ে ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এমনটাই চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পর্ষদগুলোকে সরকার তার নিজস্ব রাজনৈতিক ধারায় সাজিয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে ভারসাম্য রক্ষিত হয় -এমন কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়ে না।
গণ-অভ্যুত্থানের পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর পদগুলো শূন্য হয়ে গেলে সেগুলো পূরণ করার জন্য একসঙ্গে অনেক যোগ্য ব্যক্তির সংস্থান করার বাধ্যবাধকতা দেখা দেয়। অর্থনীতিশাস্ত্রের ধারণা ব্যবহার করে আমরা বলেতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর পদগুলোর জন্য বড় ধরনের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এ চাহিদা পূরণের জন্য সরবরাহ কয়েকগুণ বেশি। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যারা প্রফেসর হয়েছেন, তারা প্রত্যেকে নিজেদের উপাচার্য বা উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য ভাবতে পারেন। বাস্তবে এমনটি হয়েছে বলেই প্রফেসর ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন। তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব প্রফেসর কেন উপাচার্য বা উপ-উপাচার্য হতে চান। তার মতো মেধাবী মানুষের পক্ষে এর কারণ বুঝে উঠতে না পারার কোনো কারণ নেই। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অনেক সময় অযোগ্য ব্যক্তিরাও নানা ধরনের চেষ্টা-তদবির করে নিয়োগটি বাগিয়ে নেয়। যদি একজনও অযোগ্য অথবা কম যোগ্যতার মানুষ এই লোভনীয় পদগুলোয় নিয়োগ পায়, তাহলে অন্য অযোগ্য ব্যক্তিরাও ভাবতে পারে তারাও উপাচার্য বা উপ-উপাচার্য হওয়ার জন্য যোগ্য। অতীতে আমরা লক্ষ করেছি, দেশের দুটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অফিসের তা ল্লা ভেঙে উপাচার্যের আসন অলংকৃত করেছেন। ঘটনাগুলো ঘটেছে রাতের বে ল্লায়। তারা তাদের আসনে বসার জন্য একটি রাতের বিলম্বও সহ্য করতে চাননি। এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যেমন খেলো হয়ে গেছেন, তেমনই উপাচার্যের পদটিও খেলো হয়ে গেছে। একটি সম্মানের আসনকে যখন এভাবে নিচে নামানো হয়, তখন অনেকেই ভাবতে শুরু করেন তারাও এ পদের যোগ্য। যতই দিন যাচ্ছে, আমাদের সমাজটা অবক্ষয়ের অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে। এ অন্ধকার ঘোচানোর তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যায় না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুড প্র্যাকটিস চালু করা হয়তো সম্ভব হবে। কিন্তু রুচির দুর্ভিক্ষ এবং পরিমিতিবোধের অভাব কীভাবে ঘুচবে? দিনের পর দিন অনিয়ম, অন্যায়, অপকর্ম ও দুর্নীতির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে যেখানে মানুষ অমানুষে পরিণত হয় এবং কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাকে এসব অপকর্ম থেকে বিরত রাখতে পারে না, তখন নিকটভবিষ্যতে ভালো কিছু আশা করা সত্যিই কঠিন। প্রফেসর ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সময়ে নয়, তারও আগে একজন উপাচার্য পদপ্রার্থী রাতের বে ল্লায় জনৈক মন্ত্রীর বাসায় গিয়েছিলেন উপাচার্য পদ ল্লাভের জন্য তদবির করতে। সেই সময় মন্ত্রী সাহেব দোস্ত-ইয়ারদের নিয়ে আড্ডায় মগ্ন ছিলেন। উপাচার্য পদপ্রার্থী ব্যক্তিটি মন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য তার কর্মচারীর নিকট নেইম কার্ডটি দিলে মন্ত্রী তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। এ ভদ্রলোককে বসতেও ব ল্লা হয়নি। তিনি মন্ত্রীর বাড়ির সম্মুখের ফুটপাতে পায়চারি করতে থাকেন। এভাবে রাত দেড়টা পর্যন্ত পায়চারি করার পর ওই ব্যক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা ব ল্লার সুযোগ পান। বাং ল্লাদেশে উপাচার্যের সম্মানিত পদটি নানা জনের আ ত্মমর্যাদার পরিপন্থি আচরণের ফলে মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। এরই সঙ্গে এসব পদপ্রার্থী নিজেরাও মূল্যহীন হয়ে পড়েছেন। দুঃখের বিষয়, একজন প্রফেসর কী করে নিজেকে এতটা নিচে নামাতে পারেন!
ড. মাহবুব উ ল্লাহ : শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ