শিক্ষা সমাজ দেশ: আগে প্রয়োজন নিজের মনুষ্যত্ববোধের পুনর্জাগরণ
ড. হাসনান আহমেদ
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
২৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশে দেওয়া অতি প্রত্যাশিত ভাষণ মনোযোগ দিয়ে শুনলাম। ভাষণে তিনি বিভিন্ন বিষয় পরিষ্কার করে বলেছেন। শুধু নির্বাচনের রোডম্যাপ তিনি রাজনৈতিক বিষয় বলে এড়িয়ে গেছেন। এতে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল মনোকষ্টে ভুগতে পারে। দেশের এ সংকটময় মুহূর্তে রোডম্যাপ দেওয়ার সময় এখনো আসেনি বলে আমার বিশ্বাস।
আমি খোলামেলা কথায় বিশ্বাসী। ২৮ আগস্ট প্রকাশিত লেখাতেও আমি লিখেছি, ‘আগে আইনশৃঙ্খলার স্থিতিশীলতা; সরকারের বিভিন্ন বিভাগকে ঢেলে সাজানো; আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। অতঃপর গণভোটের আয়োজন, সংবিধান পরিবর্তন, বিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠান, ক্ষমতা হস্তান্তর।’ এটা আমার প্রত্যাশা। সংবিধান পরিবর্তনের ধাঁচ কেমন হতে পারে, অতি সংক্ষেপে তার একটা ধারণাও ওই লেখায় দিয়েছিলাম। অতীতে ভালো-মন্দ নানা ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেখেছি। শুধু একবারই দেখেছি এ ধরনের সরকারকে দুবছর ক্ষমতায় থাকতে। কিন্তু কাজের কাজ করতে তেমন দেখিনি, একচোখা কাজকর্ম দেখেছি। প্রথম তিনবার মাত্র তিন মাস করে সময় দেওয়া হয়েছিল। তাই এবার আমরা ‘রৌদ্র-ছায়ার লুকোচুরির খেলা’ যেমন দেখতে চাই না, তেমনি ‘পিলো পাসিং খেলা’ও দেখতে চাই না। আমরা রাষ্ট্রের নামমাত্র মেরামতও দেখতে চাই না। চাই পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে মেরামত বা সম্পূর্ণ ঢেলে সাজানো বা ব্যাপক সংস্কার (মেজর ওভারহোলিং), দেশ ধ্বংসকারীদের সুষ্ঠু বিচার। তাতে কোনো রাজনৈতিক দল টিকে থাক বা না থাক।
স্বাধীনতার তেপ্পানো বছর পেরিয়ে যেতে দেখছি; কী দেখছি? অন্যায়, দুর্নীতি, কোষাগার লুটপাট, ডাহা মিথ্যাচারিতা, নির্ভেজাল প্রতারণা, গুম-খুন, দেশ বিক্রির পাঁয়তারা ইত্যাদিসহ শতেক অপকর্ম। আমরা কোনো স্বাধীন দেশের মানুষ, না পরগাছা? এসব ক্ষেত্রে কোনো দল এ পর্যন্ত শতকরা ২০ ভাগ, কেউ ৪০ ভাগ, কেউবা ১২০ ভাগ পারঙ্গমতা দেখিয়েছে। এদেশের সব রাজনৈতিক দলই-কেউবা এককভাবে, কেউবা জোটবদ্ধভাবে-দেশ পরিচালনা করেছে। আমরা সবারই কর্মকাণ্ড অতি মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছি। যে দেশ তেপ্পান্ন বছর রাজনীতিকরা চালালেন, মাত্র কয়েকটা বছর অরাজনৈতিক টিম চালালে অসুবিধা কোথায়? এদেশ তো কেউ রাজনীতিকদের কাছে লিজ দেয়নি। রাজনীতির কোনো বাইবেলেও লেখা নেই, একমাত্র তারাই দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হবেন। দেশে সবারই সমান অধিকার। সাধারণ নাগরিকরাই রাজনীতিকদের দেশ চালাতে দেয়। মানুষের জন্য সংবিধান, না সংবিধানের জন্য মানুষ? কোনো দল যখন মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করে, যাকে-তাকে যখন-তখন বিনা সমনে উঠিয়ে নিয়ে গুম কিংবা হত্যা করে, বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগকে যথেচ্ছ ব্যবহার করে, তখন আপনাদের আইনের ধারা কোথায় থাকে? বর্তমান সরকারের রাষ্ট্র চালানোর কোনো আইন না থাকলে নতুন আইন তৈরি করে নেওয়া যাবে।
এবারের গণ-আন্দোলনকে অনেকেই বিভিন্ন অভিধায় ভূষিত করেছেন। আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি এটা এদেশের ছাত্র-জনতার বিপ্লব। অনেককে বিভিন্ন মিডিয়ায় এসে অতীতের রুশ বিপ্লব, ফরাসি বিপ্লব, ইরানের বিপ্লবসহ বিভিন্ন বিপ্লবের প্রকৃতি বর্ণনা করতে শুনছি। আমার খোলা কথা হলো, কোনো একটা বিপ্লবের সঙ্গে অন্য বিপ্লবের প্রেক্ষাপট ও মিল থাকার কথা নয়। পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময় ভিন্ন, ঘটনাও ভিন্ন। বাম-ঘরানার লোকজন তাদের মুখস্থ লেখাপড়া দিয়ে অতীতের বিপ্লবের সঙ্গে ফর্মুলায় ফেলে সব বিপ্লবকে মেলাতে অভ্যস্ত। এদেশের এবারের ছাত্র-জনতার বিপ্লব ভিন্নধর্মী হতেই পারে। তবে এটা গণমানুষের বিপ্লব। আমি পেছনের দিকে তাকাতে চাই না; তাকালে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তাকাতে চাই।
আগস্টের ৫ তারিখে কী ঘটেছে, তার চেয়ে পতিত সরকার কী ঘটাতে চাচ্ছিল, সেটা একবার ভেবে দেখুন। গায়ের লোম শিউরে উঠবে। মানুষ কত নির্মম, লোভী, বেপরোয়া ও পাষণ্ড হলে রক্তের এমন হোলিখেলা খেলতে পারে এবং আরও খেলার জন্য উন্মাদের মতো মানুষ হত্যার অনুমতি দিতে পারে! শুধু সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা সেই ব্যাপক গণহত্যা থেকে সাধারণ মানুষ ও ছাত্রছাত্রীদের রক্ষা করলেন। এজন্য আমি খোদাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সেভাবেই পতিত সরকার বিগত ষোলো বছর ধরে পুলিশ, র্যাব, ছাত্রলীগ, ডিজিএফআইকে গড়ে তুলেছে। বিগত ষোলো বছরে যেসব ভাই, বোন ও মায়ের বুক খালি হয়েছে, তাদের কাছে গিয়ে অবস্থাটা একবার দেখুন, হৃদয় দিয়ে অনুভব করুন। পারলে ডিজিএফআই, র্যাব ও ডিবির তৈরি অন্ধকার যমপুরী ও আয়নাঘরগুলো একবার নিজ চোখে দেখে আসুন। কতশত মানুষের কঙ্কাল নদীর ধারে, ধানখেতে, বনবাদাড়ে পড়ে থেকে শেয়াল-কুকুরে খেয়েছে, বিভিন্ন সাপ্তাহিক পত্রিকায় সরেজমিন রিপোর্টে তা উঠে এসেছে।
মাইক্রোবাসে সাদা পোশাকে কোনো জলজ্যান্ত তরুণকে উঠিয়ে নিয়ে গেলেই তার কোনো হদিস আর নেই। কারও কিছু বলারও নেই। কত অসহায়, নির্দোষ মানুষের অস্ফুট কান্না ও অভিশাপের ধ্বনি সেখানকার বাতাসে অনুরণিত হচ্ছে; কেউবা চিরতরে হারিয়ে গেছে। আমরা যেহেতু মানুষের খাতায় নাম লিখিয়েছি, উপলব্ধি-শক্তি আছে, নিশ্চয় সে করুণ অবস্থা আপনার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। এসব কি কখনো ভেবে দেখেছেন? কৃতকর্মের ভাগিদারকে কেউ হয়তো নিম্নস্তরের হিংস্র বন্যপ্রণীর সঙ্গে তুলনা করবেন। এগুলো কাদের হুকুমে হয়েছিল? দেশটা একটা বুনো সমাজে পরিণত হয়েছিল।
কেউ কেউ এদের আবার দেশে ফিরিয়ে আনতে চান, রাজনীতির অধিকার দিতে চান। আমি তাদের রুচির তারিফ করি। তাদের ভাই, সন্তান কিংবা বাবার এমন দশা হলে নিশ্চয়ই ব্যথাটা তারা মন দিয়ে অনুভব করতেন। বাঙালি আবেগপ্রবণ, হুজুগে ও আত্মবিস্মৃত জাতি। তার ওপর রাজনৈতিক ও সামাজিক অশিক্ষা-কুশিক্ষা, কুমন্ত্রণা, বিরূপ পরিবেশ এদের আত্মোপলব্ধি ও মানবতাবোধকে নিঃশেষ করে ফেলেছে। এসবের পূর্বানুমান করা খুব কঠিন। আমি এদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সেই স্বাধীনতার পর থেকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসছি। অনেকের আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা, স্বার্থান্ধতা ও কর্মকাণ্ড দেখতে দেখতে মনে যারপরনাই ঘৃণা জন্মেছে। মনে হয় স্বাধীনতায় আমরা চেয়েছিলাম কী, আর পেলাম কী! ‘বাঘের ভয়ে উঠলাম গাছে, ভূত বলে পেলাম কাছে’ অবস্থা। দেখে দেখে সহ্য করতে না পেরে অগত্যা কলম ধরেছি। এদেশে রাজনীতি করার জন্য নয়, কোনো উচ্ছিষ্টভোগী হওয়ার জন্যও নয়, অভিজ্ঞতাকে শেয়ার করার জন্য। কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে সহযোগিতা করার জন্য।
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আমার শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আশা করি তিনি নিরাশ করবেন না। দেশে আইনশৃঙ্খলা আগে ফিরিয়ে আনতে হবে। পতিত দল বিভিন্নভাবে সরকারকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চেষ্টা করবে। ছাত্রছাত্রীদের ও সাধারণ মানুষদের সেজন্য অতন্দ্র পাহারায় রাখতে হবে। রাঘববোয়াল ও চুনোপুঁটিসহ সব অন্যায়কারী, দুর্নীতিবাজ, খুন-গুমের সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারী, ঘুসখোর, ব্যাংক লুটেরা, টাকা পাচারকারী, গম ও টাকাখোরদের কোনোরকম রেহাই দেওয়া চলবে না। সময় লাগলেও একটা একটা করে বিচার করতেই হবে। এক্ষেত্রে নির্দয় হতে হবে। আইনের সহায়তা নিয়ে মশারির মতো জাল দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত টেনে সেচে ডাঙায় উঠিয়ে গ্রেফতার করে উচিত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো আপস করা যাবে না। পতিত সরকার দীর্ঘ ষোলো বছর ধরে বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগসহ সব প্রতিষ্ঠান মনমতো করে দলীয় লোকবল ও চাটুকার দিয়ে সাজিয়েছিল। তারা এখন আপনার মনমতো কাজের পথে বড় বাধা। পরিবর্তনের জন্য সময় লাগবেই। কে কী বলল, সেদিকে লক্ষ করার এখন সময় নেই।
পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন করাই সমীচীন। বিচার বিভাগকেও তা-ই। এরপর যুগপৎভাবে প্রশাসন বিভাগ, অন্যান্য রাষ্ট্রীয় বিভাগ ও বিশেষ বাহিনী। সব অবৈধ সুবিধাভোগী-অন্যায়কারীকে তাদের কর্মফল ভোগ করতেই হবে। আমরা কোনো লোকদেখানো বিচার দেখতে চাই না। অনেকে দেশ লুটে বিদেশে টাকা পাচার করে এখন পালিয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় টাকাসহ দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। তাদের দেখাতে হবে ‘কাঠ খেলে অঙ্গার টয়লেট হবেই’।
বর্তমান সরকারের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের কথা হাওয়ায় ভেসে কানে আসছে। আমি একজন নগণ্য মাস্টার সাহেব হিসাবে এ পথ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিতে পারি। এতে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের সব ভালো কর্ম একদিন ধুলায় মিশে যাবে। এটা আমি চাই না। দেশকে সেবা করতে চাইলে অন্য পরামর্শ আমার কাছে আছে; তবে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নয়। ২৮ তারিখের লেখায় আমি সংবিধান সংশোধনের জন্য মূল কিছু কথা প্রস্তাবনা আকারে লিখেছি। দূরদৃষ্টি দিয়ে চিন্তাভাবনা করেই লিখেছি। এদেশের রাজনীতির অভিধান থেকে শিক্ষা ও জনসেবা কথাগুলো উঠে গেছে। সেজন্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও সেবাব্যবস্থা এবং এসবের বাস্তবায়ন নিয়েও অনেক সত্য কথন আমাদের আছে। আছে পরীক্ষিত নতুন নতুন মডেল। প্রয়োজনে সহযোগিতা করতেও আমাদের টিম ‘জাতীয় শিক্ষাসেবা পরিষদ’ প্রস্তুত। সবকিছুই এ পত্রিকাতেই আমরা প্রকাশ করেছি। এ পত্রিকার কর্তৃপক্ষ নিঃস্বার্থভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছে। সেজন্য পত্রিকা-কর্তৃপক্ষ ধন্যবাদার্হ।
যেসব রাজনৈতিক দল তাড়াতাড়ি রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে বসে আছে, তাদের আমি ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে বলি। বরং তাদের অন্তর্বর্তী সরকারকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করতে বলি। জনসেবা ও দেশসেবার মানসিকতা নিয়ে দলকে সাজাতে বলি। দলে অল্পকিছু ভালো লোক থাকলেই চলে না। দলের মধ্যে অনেক অন্তর্দ্বন্দ্ব, দুর্নীতিবাজ ও সুবিধাবাদী লোকজন আছে। এটা আমাদের মাঠ পর্যায়ে দেখা কথা। সত্য কথা হচ্ছে : পতিত সরকার সব অপকর্মের মূল হোতা, প্রশিক্ষক ও অগ্রদূত; সেই স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা দেখে আসছি। অন্য দলগুলো যত অপকর্মের ধরন ও টেকনিক তাদের কাছ থেকে শেখে ও তাদের অনুসরণ করে। পরবর্তীকালে ক্ষমতায় এলেই আমার এ অলক্ষুণে কথা অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ হয়ে যাবে। তারা এ সময়টায় দলের পুনর্গঠন ও শুদ্ধি অভিযান চালাতে পারে। এ বিপ্লবে তাদের অবদান আছে আমি জানি। ছাত্র-জনতা সামনে থেকেছে, তারাও সহযোগিতা করেছে, এটা অনস্বীকার্য। যত বড় নেতাই হোক, সততা, মানবিকতাবোধ ও দেশপ্রেম না থাকলে দেশের জন্য আবর্জনাস্বরূপ। ভবিষ্যতে কোনো ‘কালাচাঁদ’ ‘লালচাঁদ’ নাম নিয়ে জনসমক্ষে আসুক, এটা আমরা কেউ চাই না।
কয়েকদিন আগে আমাদের ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের একটা বক্তব্য আমাকে মর্মাহত করেছে। অনেক কথার মধ্যে তিনি বলেছেন, ‘যিনি পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন (অর্থাৎ ‘৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান), তিনি অবশেষে তার করুণ পরিণতি ভোগ করেছেন।’ এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত প্রধান নেতাকে নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের এদেশের মানুষকে শোষণ, ভাষা ও শাসনক্ষমতা নিয়ে টালবাহানা, বঞ্চনা ও গণহত্যাই যে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল প্রেরণা, তা শাহবাজ শরিফকে বুঝতে হবে। মূলত ‘মাথায় প্রচণ্ড আঘাত করে টাকের যত্ন নেওয়া চলে না’, এটা তার উপলব্ধিতে আসতে হবে। তার ধারণা, আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন থেকে স্বাধীনতা নিয়ে ভুল করেছি। আসলে তা নয়। তৎকালীন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনেক বাস্তব বিষয় শাহবাজ শরিফের জানার ও বোঝার এখনো অভাব আছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তার সদিচ্ছা, ন্যায়নিষ্ঠা, সাহস ও কর্ম এবং সব বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাক, এটা আমাদের একমাত্র কামনা।
ড. হাসনান আহমেদ : অধ্যাপক, ইউআইইউ; সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ; প্রেসিডেন্ট, জাতীয় শিক্ষা-সেবা পরিষদ